চট্টগ্রামে আরও ১৫ হাজার সন্দেহজনক পোশাক (ইউনিফর্ম) জব্দ করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, এসব ইউনিফর্ম পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ)। গতকাল মঙ্গলবার রাতে নগরের পাহাড়তলী থানার একটি কারখানা থেকে এসব পোশাক জব্দ করে বায়েজিদ বোস্তামী থানার পুলিশ।

ইউনিফর্ম উদ্ধারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কথা বলতে পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউ রাজি হননি। বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় মন্তব্যে অনীহা তাঁদের। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা অভিযানের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

ইউনিফর্ম উদ্ধারের ঘটনায় পাহাড়তলী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে। অভিযানে আটক কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মতিউর রহমানকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গত দুই সপ্তাহে চট্টগ্রামে এ ধরনের সন্দেহজনক পোশাক জব্দ করার ঘটনা ঘটেছে এ নিয়ে তিনবার। সোমবার চট্টগ্রাম নগরের একটি গুদাম থেকে ১১ হাজার ৭৮৫টি ইউনিফর্ম জব্দ করা হয়। পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করে, এসব ইউনিফর্ম কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের।

এর আগে গত ১৭ মে রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ২০ হাজার ৩০০টি সন্দেহজনক পোশাক জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ। এ ঘটনায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ উল্লেখ করে, ইউনিফর্মগুলো কেএনএফের। দুই কোটি টাকার চুক্তিতে ইউনিফর্মগুলো প্রস্তুতের ফরমাশ নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পোশাক কারখানাটির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। পুলিশ জানিয়েছে, সাহেদুল ইসলাম কারখানার মালিক। অন্য দুজন পোশাকগুলো তৈরির ফরমাশ এনেছিলেন। নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে ১৮ মে বায়েজিদ বোস্তামী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন। মামলায় গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়াও রাঙামাটির কাপ্তাইয়ের মংহলাসিন মারমা (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ফর ম র একট

এছাড়াও পড়ুন:

ব্যাংক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ২৩ শতাংশ

২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২২ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি। এটি মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিএফআইইউর সক্রিয় ভূমিকা ও কর্মতৎপরতার প্রতিফলন।

মঙ্গলবার ( ২৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এর বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২৩-২৪ প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে বিএফআইইউ এর প্রধান এ. এফ. এম শাহীনুল ইসলামের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও বিএফআইইউ এর উপ-প্রধান মো. কাওছার মতিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান, ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশনস অ্যান্ড পাবলিকেশনস এর পরিচালক (চলতি-দায়িত্বে) মহুয়া মহসীন, বিএফআইইউ এর পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

ঈদের সরকারি ছুটিতে ৩ দিন শিল্প এলাকায় ব্যাংক খোলা

দি প্রিমিয়ার ব্যাংকের ব্যাংকাসুরেন্স কার্যক্রমের উদ্বোধন

বিএফআইইউ এর প্রধান এ.এফ.এম শাহীনুল ইসলাম বলেন, বিএফআইইউ তার কাজের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতি বছর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরের প্রতিবেদনে বিভিন্ন তথ্যের পাশাপাশি একাধিক বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন এবং জুলাই-ডিসেম্বর ২০২৪ সময়কালে বিএফআইইউ এর গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলো হতে বিএফআইইউতে দাখিল করা বিভিন্ন রিপোর্টের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলো বিএফআইইউ-তে সর্বমোট ১৭ হাজার ৩৪৫টি সন্দেহজনক লেনদেনের প্রতিবেদন দাখিল করেছে। যা আগের  অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ২২ দশমিক ৯৬ শতাশ বেশি। এটি মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধে রিপোর্ট প্রদানকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তাদের সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি এবং বিএফআইইউ এর সক্রিয় ভূমিকা ও কর্মতৎপরতার প্রতিফলন। গত বছরের তুলনায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হতে নগদ লেনদেন বিবরণীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, বিএফআইইউ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১৪টি আর্থিক গোয়েন্দা প্রতিবেদন বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থায় প্রেরণ করে। এছাড়া, বিএফআইইউ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারি অন্যান্য সংস্থার সাথে ১ হাজার ২২০টি তথ্য বিনিময় করেছে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৯১ শতাশ বেশি। পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে বিএফআইইউ তদন্তকারী সংস্থাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অন্যান্য অংশীজনদের সাথে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। অগ্রাধিকার বিবেচনায় বিএফআইইউ সরকারের সাথে পরামর্শ করে যৌথ অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা হতে অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে পরামর্শ, কারিগরি সহায়তা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিদেশি আইনি সংস্থা নিয়োগের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তবে, বিদেশ হতে পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার একটি অত্যন্ত জটিল ও সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তারপরও আশা করা যায়, বিএফআইইউ এর বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে বিদেশ হতে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে।

ঢাকা/এনএফ/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে কেএনএফের আরও ১১ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ
  • চট্টগ্রামে ‘কেএনএফের’ আরও ১১ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ
  • ব্যাংক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ২৩ শতাংশ
  • সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টিং বেড়েছে ৫৬ শতাংশ
  • সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্টিং বেড়েছে ২৩ শতাংশ