গাছ থেকে পড়ে ব্যবসায়ীর মৃত্যু, একইভাবে মারা গিয়েছিলেন ছোট ভাইও
Published: 28th, May 2025 GMT
রাজশাহীর বাগমারায় গাছ থেকে পড়ে নজরুল ইসলাম (৪২) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। আজ বুধবার সকালে বাগমারার বাসুপাড়া ইউনিয়নের ইসলাবাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। দুই বছর আগে একইভাবে তাঁর ছোট ভাই জাকিরুল ইসলাম (২২) গাছ থেকে পড়ে মারা গিয়েছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সকালে নজরুল ইসলাম আম পাড়ার জন্য বাড়ির পাশের একটি বাগানে যান। সাড়ে ১০টার দিকে গাছে ওঠার পর অসাবধানতাবশত পড়ে যান। পাশের পানের বরজে কাজ করছিলেন কয়েকজন শ্রমিক। গাছ থেকে পড়ে যাওয়ার শব্দ পেয়ে তাঁরা ছুটে গিয়ে নজরুলকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় শ্রমিক জিয়াউর রহমান বলেন, ‘সকালে পানের বরজে কাজ করার সময় ধপ শব্দ ও একজনের চিৎকার শুনে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি নজরুল মাটিতে পড়ে আছেন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, তিনি মারা গেছেন।’
নজরুলের পরিবার ও স্থানীয় লোকজন জানান, দুই বছর আগে একইভাবে আমগাছ থেকে পড়ে মারা যান তাঁর ছোট ভাই কলেজছাত্র জাকিরুল ইসলাম। ওই ঘটনার এক বছর পর তাঁদের বাবা নুরুল ইসলাম মারা যান। এখন পরিবারের সদস্য হিসেবে কেবল নজরুলের স্ত্রী, তাঁদের আট বছরের ছেলে ও বৃদ্ধ মা রয়ে গেছেন।
নজরুল ইসলাম ঢাকার একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি গ্রামে ফিরে নন্দনপুর বাজারে একটি ওষুধের দোকান চালু করেন।
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। এটি খুবই মর্মান্তিক।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।