নোয়াখালী সদর উপজেলার অশ্বদিয়া ইউনিয়নে কলেজছাত্র আবুল হোসেনকে (১৮) খুনের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তির গ্রেপ্তার চেয়ে আড়াই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত উপজেলার বাল্লাকোট্টা চান মিয়ার মোড়ে সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

কর্মসূচি চলাকালে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধকারীরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। অবরোধ কর্মসূচির কারণে সড়কের দুই দিকে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে। এতে যাত্রী ও চালকেরা ভোগান্তিতে পড়েন। পরে সুধারাম থানা–পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একটি দল অবরোধকারীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে।

নিহত কলেজছাত্র আবুল হোসেন অশ্বদিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অলিপুর গ্রামের আবুল কালাম ওরফে আজাদের ছেলে। তিনি কবিরহাট সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র এবং ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। ২২ মে ছুরিকাঘাতে তিনি নিহত হন। স্থানীয় এক পল্লিচিকিৎসক কথা-কাটাকাটির জেরে তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন বলে এ ঘটনায় হওয়া মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত পল্লিচিকিৎসক বর্তমানে পলাতক।

জানতে চাইলে সড়ক অবরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আবুল হোসেনের হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আসামি বারবার অবস্থান পরিবর্তন করায় অভিযানে এখনো সফলতা পাওয়া যায়নি। আশা করা যায়, শিগগিরই তিনি ধরা পড়বেন।

এর আগে আবুল হোসেনের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে গত রোববার দুপুরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন অশ্বদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

সীতাকুণ্ডে দু’পক্ষের বিরোধে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা খুন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মো. কলিমুদ্দিন (৩৫) নামে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের ছোট দরগার হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত কলিমুদ্দিন ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তাবিত কমিটির সভাপতি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বরাতে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, বারৈয়ারঢালায় পাহাড়ে অবস্থিত সহস্রধারা ঝর্ণা ও স্থানীয় ছোট দরগার হাটের পশুহাটের ইজারা নিয়ে যুবদল ও জিয়া মঞ্চের দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছে। বিরোধ নিরসনে বুধবার রাত ৯টার দিকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি মোহাম্মদ ইসমাইল ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম চৌধুরী শরীফ বৈঠকে বসেন। দু’পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডার এক পর্যায়ে শুরু হয় সংঘর্ষ। পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে ইসমাইলের অনুসারী কলিমুদ্দিনকে জখম করে প্রতিপক্ষের লোকজন। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 
কলিমুদ্দিনের বড় ভাই তসলিম উদ্দিনের দাবি, পশুহাটের ইজারা নিয়ে বৈঠক চলাকালীন স্থানীয় যুবদল নেতা সাখাওয়াত হোসেন সাকার লোকজন কলিমুদ্দিনকে হত্যা করে। সাখাওয়াত দলীয় পরিচয়ে মাদক ব্যবসায় জড়িত। তিনি যুবদল নেতা ইসমাইলের নাম ভাঙিয়ে এ ব্যবসা করেন। কলিমুদ্দিন দীর্ঘদিন মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সোচ্চার ছিলেন। এ বিষয়ে সাকার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বারৈয়ারঢালা ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি আবু সালেহ বলেন, সাকা বাহিনীর দুই সদস্যের সঙ্গে ১৫০ টাকার মাদক বিক্রি নিয়ে বিরোধ হয়। সাকার সহযোগী কলাবাড়িয়ার বাসিন্দা হৃদয়সহ কয়েকজন কলিমুদ্দিনকে হত্যা করেছে।
এ বিষয়ে যুবদল নেতা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, সম্প্রতি ইজারা নেওয়া পশুহাট সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক চলছিল। বৈঠকস্থলের বাইরে দু’পক্ষের কয়েক সমর্থকের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়। প্রতিপক্ষের লোকজনের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল। তারা ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত। বুধবার রাতে হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে ককটেল ফাটিয়ে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে তারা।
জিয়া মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম নিজেকে সহস্র ঝর্ণাধারার ইজারাদার দাবি করে বলেন, সহস্রধারা ঝর্ণা ও গরুর হাট ইজারা নিয়ে কোনো বিরোধ নেই। বৈঠক চলাকালীন কলিমুদ্দিনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সাকার লোকজন। 
ওসি মজিবুর রহমান জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মামলা হয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ