ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি পুরোনো শহর খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জাভা ও মাদুরা দ্বীপপুঞ্জের মধ্যবর্তী মাদুরা প্রণালিতে পলি ও বালুর স্তরের নিচে থাকা এই শহরে মানুষের প্রাচীন পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাসের খুলিও পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সুন্দাল্যান্ড নামের একটি প্রাগৈতিহাসিক ভূমির অংশ ছিল শহরটি। একসময় এই এলাকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সমভূমির অংশ ছিল। আর তাই শহরটির আশপাশে মানুষের খুলির হাড়ের পাশাপাশি কোমোডো ড্রাগন, মহিষ, হরিণ, হাতিসহ ৩৬ প্রজাতির প্রায় ৬ হাজার প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। কিছু প্রাণীর জীবাশ্মে কাটা চিহ্ন রয়েছে, যা আদি মানুষের উন্নত শিকার কৌশলের প্রমাণ। নতুন এ আবিষ্কার প্রাচীন মানবজীবন ও হারিয়ে যাওয়া সুন্দাল্যান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে।

সমুদ্রের তলদেশে থাকা শহরটির বিষয়ে নেদারল্যান্ডসের লিডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক হ্যারল্ড বার্গুইস বলেন, সেই সময় এই অঞ্চলে হোমিনিন জনসংখ্যার বসবাস ছিল। ১ লাখ ৪০ হাজার বছর ধরে পলির নিচে চাপা পড়ে থাকা একটি খুলি মানুষের প্রাচীন পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাসের সময়কার বলে নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এখান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আদি মানবজীবন সম্পর্কে জানা যাবে।

শহরটিতে দুটি হোমো ইরেক্টাস খুলির টুকরার মধ্যে একটি ফ্রন্টাল ও একটি প্যারিটাল হাড় রয়েছে। হাতির মতো বৃহৎ তৃণভোজী স্তন্যপায়ী এক প্রাণীর বিলুপ্ত প্রজাতির জীবাশ্মও শহরটিতে খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণীটি লম্বায় ১৩ ফুট হলেও ওজন ছিল ১০ টনেরও বেশি।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ