সমুদ্রের তলদেশে ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি পুরোনো শহরের খোঁজ
Published: 28th, May 2025 GMT
ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্রের তলদেশে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি পুরোনো শহর খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জাভা ও মাদুরা দ্বীপপুঞ্জের মধ্যবর্তী মাদুরা প্রণালিতে পলি ও বালুর স্তরের নিচে থাকা এই শহরে মানুষের প্রাচীন পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাসের খুলিও পাওয়া গেছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, সুন্দাল্যান্ড নামের একটি প্রাগৈতিহাসিক ভূমির অংশ ছিল শহরটি। একসময় এই এলাকা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সমভূমির অংশ ছিল। আর তাই শহরটির আশপাশে মানুষের খুলির হাড়ের পাশাপাশি কোমোডো ড্রাগন, মহিষ, হরিণ, হাতিসহ ৩৬ প্রজাতির প্রায় ৬ হাজার প্রাণীর জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। কিছু প্রাণীর জীবাশ্মে কাটা চিহ্ন রয়েছে, যা আদি মানুষের উন্নত শিকার কৌশলের প্রমাণ। নতুন এ আবিষ্কার প্রাচীন মানবজীবন ও হারিয়ে যাওয়া সুন্দাল্যান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে।
সমুদ্রের তলদেশে থাকা শহরটির বিষয়ে নেদারল্যান্ডসের লিডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক হ্যারল্ড বার্গুইস বলেন, সেই সময় এই অঞ্চলে হোমিনিন জনসংখ্যার বসবাস ছিল। ১ লাখ ৪০ হাজার বছর ধরে পলির নিচে চাপা পড়ে থাকা একটি খুলি মানুষের প্রাচীন পূর্বপুরুষ হোমো ইরেক্টাসের সময়কার বলে নিশ্চিত করেছেন বিজ্ঞানীরা। এখান থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আদি মানবজীবন সম্পর্কে জানা যাবে।
শহরটিতে দুটি হোমো ইরেক্টাস খুলির টুকরার মধ্যে একটি ফ্রন্টাল ও একটি প্যারিটাল হাড় রয়েছে। হাতির মতো বৃহৎ তৃণভোজী স্তন্যপায়ী এক প্রাণীর বিলুপ্ত প্রজাতির জীবাশ্মও শহরটিতে খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণীটি লম্বায় ১৩ ফুট হলেও ওজন ছিল ১০ টনেরও বেশি।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে
সুদানের এল-ফাশের শহর ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে গণহত্যা চলছে। কৃত্রিম ভূ–উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এমন দাবি করেছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানকার পরিস্থিতিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেছেন।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সসের (আরএসএফ) লড়াই চলছে। গত রোববার তারা এল-ফাশের দখল করে। এর মাধ্যমে প্রায় দেড় বছরের দীর্ঘ অবরোধের পর পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটিটিও ছিনিয়ে নেয় তারা।
শহরটি পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।
এল-ফাশের থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী তাওইলা শহরে জীবিত বেঁচে ফেরা কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে এএফপির সাংবাদিক কথা বলেছেন। সেখানে গণহত্যা হয়েছে জানিয়ে তাঁরা বলেন, শহরটিতে মা-বাবার সামনেই শিশুদের গুলি করা হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে পালানোর সময় সাধারণ মানুষকে মারধর করে তাঁদের মূল্যবান সামগ্রী লুট করা হয়েছে।
পাঁচ সন্তানের মা হায়াত শহর থেকে পালিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে থাকা তরুণদের আসার পথেই আধা সামরিক বাহিনী থামিয়ে দেয়। আমরা জানি না, তাদের কী হয়েছে।’
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, গত শুক্রবার পাওয়া কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতে ‘বড় ধরনের কোনো জমায়েত চোখে পড়েনি।’ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার জনগণের বড় একটি অংশ হয় ‘মারা গেছে, বন্দী হয়েছে কিংবা লুকিয়ে আছে।’ সেখানে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আল-ফাশের থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ পালিয়েছে। এখনো কয়েক হাজার মানুষ শহরটিতে আটকা পড়েছে। আরএসএফের সর্বশেষ হামলার আগে সেখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বসবাস করত।
শনিবার বাহরাইনে এক সম্মেলনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বলেন, সুদান একটি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। আরএসএফ নাগরিকদের সুরক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। কিন্তু তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।