বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ সরকার, নির্বাচন কমিশন এবং জাতিসংঘ। আর এ জন্য নেওয়া হয়েছে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প ব্যালট। 

বুধবার জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে তিন বছর মেয়াদি প্রকল্প ‘ব্যালট’ শুরু হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং ইউএনডিপি বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করে। ব্যালট প্রকল্পটি ২০২৫-২০২৭ একটি তিন বছর মেয়াদি উদ্যোগ, যা দুটি ধাপে কাজ করবে। 

প্রথম ধাপে আসন্ন নির্বাচনি সহায়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে রয়েছে- প্রযুক্তিগত, কারিগরি প্রস্তুতি এবং ভোটারদের কাছে পৌঁছানো। 

দ্বিতীয় ধাপের লক্ষ্য সংস্কারকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ এবং আসন্ন নির্বাচনি কাজের পর গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা জোরদার করা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বইসি, ইউএন উইমেন, ইউনেস্কো এবং সুশীল সমাজ সংস্থাগুলোর সঙ্গে মিলে কাজ করা হবে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো.

শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এই চুক্তিতে সই করেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও জাতিসংঘ উইং প্রধান, এ কে এম সোহেল, ইউনেস্কো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ড. সুসান ভাইজ, ইউএন উইমেন কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাঞ্জলী সিং এবং বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা জোরদার, ভোটারদের শিক্ষা, সচেতনতা ও নাগরিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, আইনি ও নির্বাচনি সংস্কার কাজে সহায়তা এবং ভুল তথ্য ও নির্বাচনি সহিংসতার বিরুদ্ধে সুরক্ষা বৃদ্ধির জন্য ব্যালট প্রকল্পটি গঠন করা হয়েছে।

শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে ইউএনডিপির সঙ্গে কাজের এই যৌথ উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাতে চাই। নির্বাচনি নীতিনৈতিকতা জোরদার এবং জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করে এই প্রকল্পটির লক্ষ্য অর্জনের জন্য জাতীয় প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগী এবং অংশীদারদের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় সাধন করতে ইআরডি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

আখতার আহমেদ বলেন, ব্যালট প্রকল্পটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে, যা স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সব নাগরিকের জন্য বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে আমাদের প্রয়োজনীয় কারিগরি এবং প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা দেবে।

স্টেফান লিলার বলেন, ব্যালট প্রকল্পের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার কার্যক্রমে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে পেরে ইউএনডিপি গর্বিত। উদ্যোগটি কেবল কারিগরি সহায়তা নয়, এটি প্রতিষ্ঠানগুলিকে শক্তিশালীকরণ, ভোটারদের ক্ষমতায়ন এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা তৈরি করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা, জবাবদিহিতা, দায়বদ্ধতা এবং জনসাধারণের আস্থা নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আবশ্যক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইউএনড প র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি ঋণ পরিশোধ ৩৫০ কোটি ডলার ছাড়াল

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ পেয়েছে ৫১৬ কোটি ডলার যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ১১০ কোটি ডলার কম। অন্যদিকে একই সময়ে বাংলাদেশকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে ৩৫০ কোটি ৭১ লাখ ডলার যা এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। গত বছরের একই সময়ে বাংলাদেশকে পরিশোধ করতে হয়েছিল ২৮১ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের পুরো সময়ে ৩৩৭ কোটি ডলার শোধ করতে হয়েছিল। ফলে অর্থছাড় কমলেও গত অর্থবছরের চেয়ে এবার ঋণ পরিশোধ বেড়েছে বাংলাদেশের।

আজ বৃহস্পতিবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের মোট পরিশোধ করেছিল ৩৩৭ কোটি ডলার। সে তুলনায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে পরিশোধ করেছে ৩৫০ কোটি ডলার। যদিও এবার আগের অর্থবছরের তুলনায় অর্থছাড় ও নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত বিগত সময়ে নেওয়া বেশ কিছু মেগা প্রকল্পের বড় অঙ্কের ঋণ ও বাজেট সহায়তার গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধের চাপ ক্রমাগত বাড়ছে, যা আগামী বছরগুলোয় দেশের অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়াতে পারে।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণের আসল ও সুদ বাবদ মোট পরিশোধ করেছিল প্রায় ২৮১ কোটি ডলার। যার তুলনায় চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশের বেশি।

এদিকে গত ১০ মাসে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৪২৫ কোটি ডলারের। যদিও আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৭৬০ কোটি ডলারের। অন্যদিকে গত অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ঋণ ছাড় হয়েছিল ৬২৮ কোটি ডলারের। এবার এর পরিমাণ ৫১৬ কোটি ডলার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ ৩৫০ কোটি ডলার ছাড়াল
  • নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ৩ বছর মেয়াদি প্রকল্প
  • সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে একত্রে কাজ করবে সরকার, ইসি ও জাতিসংঘ
  • অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে ‘ব্যালট’ প্রকল্প গ্রহণ
  • মাতারবাড়ীতে জাপানের ঋণ স্থগিত হওয়ার শঙ্কা
  • গাজায় ত্রাণ সরবরাহের সুযোগ দিতে ইসরায়েলকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জার্মানি ও ফিনল্যান্ডের