নাগরিকদের বক্তব্য ‘সেন্সর’ করলে বিদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেবে যুক্তরাষ্ট্র
Published: 29th, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, আমেরিকানদের বক্তব্য ‘সেন্সর’ করা বা তাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করলে, এর সঙ্গে জড়িত বিদেশি কর্মকতাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। তবে এ ‘সেন্সর’ বলতে কী বোঝানো হচ্ছে, তার কোনো উদাহরণ দেননি রুবিও।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন এ নীতির আওতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা বিদেশি কর্মকর্তাদের নিশানা করা হতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার যে সুরক্ষা যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য দায়ী বিদেশি কর্মকর্তাদের ওপর নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করা পোস্টের জন্য বিদেশি কর্মকর্তারা যে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বা হুমকি দেন, তা মেনে নেওয়া যায় না।
মার্কো রুবিও বলেন, ‘আজ আমি একটি নতুন ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করছি, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, সংগঠন ও সংস্থার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। তাদের প্রবেশে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে।’
রুবিও বলেন, আমেরিকানদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার জন্য যারা বিদেশিরা কাজ করেন, তাদের আমাদের দেশে ভ্রমণের সুযোগ উপভোগ করা উচিত নয়। ল্যাটিন আমেরিকা, ইউরোপ বা অন্য কোথাও তারা ভ্রমণ করুক। আমেরিকানদের অধিকার ক্ষুণ্ন করার জন্য যারা কাজ করে, তাদের প্রতি নিষ্ক্রিয় আচরণের দিন শেষ বলে জানান তিনি।
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিকানা প্রতিষ্ঠান মেটা জানিয়েছে, ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ নামে একটি আধেয় নিয়ন্ত্রণ আইন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ আইনের মাধ্যমে তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় ব্যবহারকারীদের মতামত নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ওই আইনের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ব্যাপক হারে বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র কর মকর ত র জন য আম র ক র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে।
আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের
ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।
ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”
প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।
মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”
মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।
গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ