বিভিন্ন দেশের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপে বাধা মার্কিন আদালতের
Published: 29th, May 2025 GMT
বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ক কার্যকর করায় বাধা দিয়েছেন মার্কিন আদালত। গতকাল বুধবার নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত এক রায়ে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান। রায়ে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে নিজের ক্ষমতা সীমা অতিক্রম করেছেন ট্রাম্প।
আদালতে করা দুটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেওয়া হয়েছে। একটি মামলা করেছিল লিবার্টি জাস্টিস সেন্টার নামের একটি আইনি সংস্থা। ট্রাম্পের শুল্কের নিশানা হওয়া দেশগুলো থেকে পণ্য আমদানি করে—এমন পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মামলাটি করেছিল তারা। অপর মামলাটি করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ১৩টি অঙ্গরাজ্যের পক্ষ থেকে।
বুধবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালতের তিনজন বিচারকের একটি প্যানেল রায়ে বলেন, কংগ্রেসকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করার বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সুরক্ষার জন্য প্রেসিডেন্টের জরুরি ক্ষমতার মাধ্যমে তা বাতিল করতে পারেন না।
আদালতের রায়ের পর এর বিরুদ্ধে আপিলের একটি নোটিশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে রয়টার্সের কাছে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি হোয়াইট হাউস। তবে হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম শীর্ষ উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘বিচার ব্যবস্থায় অভ্যুত্থান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে।’
গত ২ এপ্রিল বিশ্বের প্রায় সব দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর অতিরিক্তি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর বাইরে বাণিজ্য ঘাটতিকে কারণ দেখিয়ে অনেক দেশের ওপর উচ্চহারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন তিনি। এর জেরে বিশ্ব বাজারে ব্যাপক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। সপ্তাহখানেক বাদে চীন ছাড়া বাকি দেশগুলোর ওপর ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এই সময়ের মধ্যে দেশগুলোর সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে তাঁর প্রশাসন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক আর প র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ফারুকের নামে ‘কপি–পেস্ট’ অভিযোগে অনাস্থা আনা যায় তাঁদের বিরুদ্ধেও
ক্রীড়া উপদেষ্টার কাছে দেওয়া অনাস্থা প্রস্তাবে ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ এনেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আট পরিচালক। যার মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফারুক আহমেদকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়েই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বিসিবি পরিচালক হিসেবে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করেছে।
অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে, পুরো স্ক্রিপটটা যেন লেখাই ছিল! পরশু রাতে ক্রীড়া উপদেষ্টা ফারুককে জানালেন, সরকারের ‘ঊর্ধ্বতন মহল’ তাঁকে আর বিসিবি প্রধান পদে ‘কন্টিনিউ’ করতে চাচ্ছে না। ফারুক জানতে চাইলেন, ‘কেন?’ কোনো উত্তর পাননি। এরপর কাল দুপুরে ফারুক সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দিলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন না। কারণ, কেন তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে, তার কোনো ব্যাখ্যা তাঁকে দেওয়া হয়নি।
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হয়ে সংবাদমাধ্যমে এল ফারুকের বিরুদ্ধে উপদেষ্টার কাছে দেওয়া আট বিসিবি পরিচালকের অনাস্থা প্রস্তাব। পরপরই এল বিপিএল নিয়ে গঠন করা সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন। বিপিএলের সঙ্গে অনেকের সংশ্লিষ্টতা থাকলেও প্রতিবেদনে ঢালাওভাবে সবকিছুর দায় ফারুককে দেওয়া হয়েছে। এরপর কাল রাতেই এনএসসি বিসিবি পরিচালক হিসেবে ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে।
আরও পড়ুনকাউন্সিলর অনুমোদন পেয়েছেন আমিনুল, বিকেলে বোর্ড সভা১ ঘণ্টা আগেঅস্ত্র সব তাক করাই ছিল। ফারুক নিজ থেকে হার মেনে নিলে এত কিছু হয়তো হতো না। সেটা করেননি বলেই একটার পর একটা অস্ত্র ছুড়ে একপেশে খেলায় মেতে উঠে তাঁকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করা হলো এবং সেটা কোনো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে।
ফারুক বোর্ডে এনএসসির মনোনীত পরিচালক ছিলেন। কোনো সমস্যা থেকে থাকলে আগে এনএসসি সেসব নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলবে, এটাই স্বাভাবিক হতো। কিন্তু অদৃশ্য কোনো জাদুবলে এনএসসি সে পথে যায়নি।
অনাস্থা প্রস্তাবে আনা অভিযোগগুলোকে ফারুক বলেছেন ‘কপি–পেস্ট’ অভিযোগ। অর্থাৎ গত ১২ বছরে পরিচালকেরা নিজেরা যা যা করেছেন, সব এখন ফারুকের নামের পাশে জুড়ে দিচ্ছেন। যদি তা–ই হয়, অনাস্থা তো এই পরিচালকদের বিরুদ্ধেও আনা যায়!
তার আগে বরং একটু বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে দেখা যাক কী আছে আট পরিচালকের অনাস্থা প্রস্তাবে, যেটির এত শক্তি?
ফারুক স্বেচ্ছাচারী, কর্তৃত্ববাদীবাংলাদেশের ক্রিকেটে ফারুককে যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তাঁরা জানেন ফারুক কঠোর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এবং স্পষ্টভাষী একজন মানুষ। কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় তাঁর আচরণে রূঢ়তা প্রকাশ পায়। আট পরিচালক ফারুকের এই চরিত্রকেই হয়তোবা স্বেচ্ছাচারী ও আধিপত্যবাদী বোঝানোর চেষ্টা করেছেন অনাস্থা প্রস্তাবে।
কিন্তু এই আট–নয় মাসে ফারুকের ‘স্বেচ্ছাচারী ও কর্তৃত্ববাদী’ আচরণ কি আওয়ামী লীগের সময়ের সাবেক বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের চেয়ে বেশি ছিল? স্বেচ্ছাচারী, কর্তৃত্ববাদী, আধিপত্যবাদী—এসব শব্দ তো নাজমুল হাসানের সঙ্গেই বেশি যেত, যাঁর বোর্ড সভায় ভিন্নমত প্রদানের সুযোগ ছিল না বলে ফারুকের প্রতি অনাস্থা আনা পরিচালকেরাই বিভিন্ন সময় বলেছেন। কই তখন তো তাঁরা কেউ নাজমুল হাসানের প্রতি অনাস্থা আনেননি? উল্টো হীরক রাজার পারিষদের ব্যক্তিত্বহীন সদস্যদের মতো সবকিছুতে ওপর–নিচ মাথা নেড়ে গেছেন।
বিসিবির সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ