শখের বসে ২০টি গরু দিয়ে শুরু করা হয় খামার। কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন ব্যবসায়ী এরশাদ উদ্দিনের জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে আছে ৩ শতাধিক পশু। এগুলোর মধ্যে অর্ধেক এবারের কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। আধুনিক ও অর্গানিক পদ্ধতিতে লালন-পালন করায় এ খামারের পশুর চাহিদা অনেক। বিক্রির জন্য রাখা অর্ধেক পশু এরইমধ্যে বুকিং দিয়ে রেখেছেন ক্রেতারা। জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের গরুগুলোর মধ্যে আলাদা করে নজর কেড়েছে ‘সুন্দরী’ ও ‘রাজাবাবু’। এদের দেখতে প্রতিদিন খামারে ভিড় করছেন অনেক মানুষ।
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়ের রৌহা গ্রামে জেসি অ্যাগ্রো ফার্ম। খোলা জায়গায় বিশাল শেডের নিচে লালন-পালন করা হচ্ছে ষাঁড়, মহিষ ও গাভি। তবে, ষাঁড়ের সংখ্যাই বেশি। ২৪ ঘণ্টা এসব পশুর সেবা-যত্নে ব্যস্ত থাকেন ২০-২৫ জন কর্মী। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, দুই বেলা গোসল, খাবার তৈরি, খাবার দেওয়া, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য—সবকিছুতেই থাকে কর্মীদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। এ কারণে জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের পশুর চাহিদা ব্যাপক। পশু দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছেন এ খামারে। পছন্দ হলে বুকিং দিয়ে যাচ্ছেন।
খামারের কর্মীরা জানিয়েছেন, কোরবানির জন্য সুস্থ, সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান পশুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই খামারটি বড় করা হচ্ছে। মাত্র ২০টি গরু দিয়ে শুরু হলেও এখন সেখানে ৩ শতাধিক পশু আছে। এবার সেখান থেকে ১৫০টি ষাঁড় বিক্রির লক্ষ্য নির্ধারণ করা রয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঈদে পশুরহাট এলাকায় ব্যাংক লেনদেন রাত ১০টা পর্যন্ত
খামারে ভুট্টা দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি প্রাকৃতিক খাবার সাইলেস খেতে দেওয়া হয় গরু-মহিষকে। এ সাইলেস বাজার থেকে কেনা হয় না। খামারেই বানানো হয় এ পশুখাদ্য। এখানকার কর্মীরা অনেক দক্ষ। পশুর অসুখ-বিসুখে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া হয়। খামারের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
লাল, খয়েরি, সাদা ও কালো রঙের বিভিন্ন জাতের ষাঁড় আছে জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে। এগুলোর মধ্যে দেশি জাত ছাড়াও ব্রাহামা, শাহীওয়াল, হরিয়ানা, গয়াল, নেপালি, ইন্ডিয়ান বইল উল্লেখ্যযোগ্য। এগুলো ছয় মাস থেকে এক বছর ধরে লালন-পালন করা হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও আকর্ষণীয় ষাঁড়টির নাম ‘রাজাবাবু’। এর থাকা-খাওয়া, পরিচর্যাসহ সবকিছু আলাদা। ওজন ৮০০ কেজি ছাড়িয়ে গেছে। ‘সুন্দরী’ নামের আরেকটি ধবধবে সাদা ষাঁড়ও আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। এ দুটি ষাঁড় দেখতে প্রতিদিনই খামারে ভিড় করছে লোকজন।
জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে গরু দেখতে আসা ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেছেন, প্রতি বছর আমরা এ খামার থেকেই কোরবানির জন্য গরু কিনে থাকি। এ খামারের বিশেষ দিক হচ্ছে, এখানকার গরুগুলোকে প্রাকৃতিক উপায়ে খাবার দিয়ে বড় করা হয়। এখানে কোনো ভেজাল পাইনি। ইচ্ছে আছে, এ বছরও এখান থেকে গরু কিনব। তাই, দেখতে এসেছি। যদি পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী পছন্দের পশু পেয়ে যাই, তাহলে বুকিং দিয়ে যাব। কোরবানির আগে এসে নিয়ে যাব।
জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের ম্যানেজার মোহাম্মদ রিয়াদ জানান, খামারে কেজি হিসেবে পশু বিক্রি করা হয়। এবার প্রতি কেজির দাম ধরা হয়েছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। তারা এগুলো হাট-বাজারে নিয়ে যান না। ক্রেতারা ফোনে কিংবা অনলাইনে যোগাযোগ করে ষাঁড় বুকিং দিয়ে রাখেন। ঈদের আগে সুবিধামতো সময়ে ক্রেতারা এগুলো নিজ দায়িত্বে নিয়ে যান। বিক্রির জন্য রাখা ষাঁড়ের মধ্যে ৭০ ভাগ বুকিং হয়ে গেছে। আশা করা হচ্ছে, ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যাবে সব ষাঁড়। এবার জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে আড়াই থেকে ৩ কোটি টাকার পশু বিক্রি হতে পারে।
করিমগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উপ-সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো.
ঢাকা/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট ক রব ন র স ন দর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চতুর্থ দিনেও বন্ধ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা, ফিরে যাচ্ছেন রোগী
ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চতুর্থ দিনের মতো অচলাবস্থা বিরাজ করছে। চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের মারামারি ও সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার সকাল থেকেই বন্ধ রয়েছে চিকিৎসাসেবা। এতে করে প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসা শত শত রোগীকে ফিরে যেতে হচ্ছে।
আজ শনিবারও হাসপাতালটিতে কোনো চিকিৎসাসেবা চালু করা যায়নি। রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকে আজ সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও চিকিৎসা না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন।
আজিমপুর থেকে চোখের সমস্যা নিয়ে আসেন আজিজ মিয়া। তিনি সমকালে বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে চারদিন সেবা বন্ধ, সরকার থেকে কেনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ জনগণ চিকিৎসাসেবা নিবে কোথা থেকে। অর্থসংকটে বেসরকারি হাসপাতালেও সেবা নিতে পারবো না। এখন আমরা কী করবো।’
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. জানে আলম বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক ও কর্মীরা কাজে ফিরতে অনিচ্ছুক।’
চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয় উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তবে এখনও কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করছে দ্রুত চিকিৎসাসেবা চালু করার, তবে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যেন আবার না ঘটে, সে বিষয়েও সজাগ থাকতে হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, হাসপাতালটিতে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। চিকিৎসাসেবা বন্ধ থাকায় এসব রোগীকে এখন অন্যান্য হাসপাতালে ছুটতে হচ্ছে।