লক্ষ্মীপুরে জোয়ারের পানিতে ৪০ গ্রামে দুর্ভোগ, বিদ্যুৎহীন অনেকে এলাকা
Published: 30th, May 2025 GMT
বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট জোয়ারের পানিতে ফুলে উঠছে মেঘনা নদী। এতে প্লাবিত হয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলার উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৪০টি গ্রাম। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। এদিকে ঝোড়ো হাওয়ায় গাছ উপড়ে লক্ষ্মীপুরের অনেক স্থানে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে গতকাল সকাল থেকেই বিদ্যুৎহীন পুরো জেলা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সকাল থেকেই জোয়ারের পানিতে ফুলে উঠছে নদী। পানির উচ্চতা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় তিন থেকে চার ফুট বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদরের চর রমনী মোহন; রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী; কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন, পাটারির হাট, চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর ফলকন; রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, চর রমিজ, বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের মেঘনা নদীসংলগ্ন অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। বাড়িঘরের পাশাপাশি এসব গ্রামের ফসলি জমি, হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, নদী–তীরবর্তী বাঁধ না থাকায় সহজেই নদীর পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে।
সদর উপজেলার মজু চৌধুরীর হাট এলাকার বাসিন্দা ফাতেমা বেগম জানান, সন্ধ্যার আগে হঠাৎ নদীর পানি ফুলে ওঠে। সন্ধ্যার মধ্যেই তাঁর ঘরে দুই ফুট পানি উঠে যায়। এতে ঘরের মালামাল নিয়ে চরম বেকায়দায় পড়ে তাঁর পরিবার। ঘরে থাকা ধান ও সয়াবিন সব ভিজে গেছে।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, লক্ষ্মীপুরে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট বেড়েছিল। তবে তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসছে।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, রামগতি ও কমলনগর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলায় ২৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৬৪টি মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনা খাবার মজুত রয়েছে।
বিদ্যুৎহীন পুরো জেলাঘূর্ণিঝড়ের কারণে লক্ষ্মীপুরে গাছ পড়ে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে যাওয়ায় পুরো জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে। তীব্র বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার কারণে গতকাল সকাল থেকেই জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকেও বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করা যায়নি। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কাজ করছেন।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫টি উপজেলা ও ৩ পৌরসভা মিলে ৯ হাজার ৬৪৪ কিলোমিটার বিদ্যুতের লাইন আছে। এর আওতায় গ্রাহকসংখ্যা ৫ লাখ ৫১ হাজার ৭৬৪। লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। এমনকি মুঠোফোনের চার্জও শেষ হয়ে যাচ্ছে।
লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব দ য ত র ল ইন লক ষ ম প র র উপজ ল র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
বাহরাইনের প্রতি বাংলাদেশিদের জন্যে ভিসা চালুর অনুরোধ
ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, দক্ষ ও আধা দক্ষ শ্রমিকসহ বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য ভিসা সুবিধা পুনরায় চালু করতে বাহরাইনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
উপদেষ্টা দু’দেশের জনগণের সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে ভিসা পুনরায় চালুর এ অনুরোধ জানান।
বাহরাইনে ২১তম আইআইএসএস মানামা সংলাপের ফাঁকে শনিবার (১ নভেম্বর) দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন খালিফা আল ফাদেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নেন তিনি। এ সময়ে ভিসা পুনরায় চালুর অনুরোধটি জানান উপদেষ্টা।
রবিবার (২ নভেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে তৌহিদ হোসেন কমিউনিটির কল্যাণ নিশ্চিত এবং সামাজিক সম্পর্ক মজবুতের লক্ষ্যে বাহরাইনে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য ‘ফ্যামিলি ভিসা’ প্রদানের বিষয়টি বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান।
বাহরাইনের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির অর্থনীতিতে বাংলাদেশের নাগরিকদের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, তার দেশের সরকার ধাপে ধাপে ভিসা সুবিধা পুনরায় চালুর জন্য কাজ করছে।
বৈঠকে উভয়ে দু’দেশের দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তরে একটি চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করেন।
তৌহিদ হোসেন ২১তম মানামা সংলাপের অধিবেশনের পাশপাশি আরো কিছু অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন। এসব আয়োজনে বিশ্ব নেতা, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নীতি নির্ধারকরা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবেন।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা