ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার আয়মন নদীর ওপর নির্মিত গহুর মোল্লার কালভার্ট ধসে পড়ায় দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে আয়মন নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি এবং কালভার্টের দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ায় শুক্রবার সকালে পাটাতন ধসে যায়। কালভার্টটি দ্রুত মেরামত করে মানুষের দুর্ভোগ কমানোর আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
কালভার্টটি ভেঙে পড়ার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত নদী খননকে দায়ী করেছে মুক্তাগাছা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তাদের দাবি, কালভার্টের উভয় পাশে ৩০ মিটারের মধ্যে কোনো খনন কাজ করা হয়নি। সুতরাং কালভার্ট ধসে পড়ার দায় নিতে রাজি নয় পাউবো।
জানা গেছে, খেরুয়াজানী ইউনিয়নের পলশা ভিটিবাড়ী গ্রামের কালভার্টটি ২০০১ সালের দিকে নির্মাণ করে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। সম্প্রতি পাউবোর অপরিকল্পিত নদী খননের কারণে গোড়ার মাটি সরে গিয়ে নড়বড়ে হয়ে পড়ে কালভার্টটি। এ কারণে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে নদীর পানির তীব্র স্রোতে শুক্রবার সকালে কালভার্টটি ধসে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা মফিজুল ইসলাম জানান, এ কালভার্ট দিয়ে পলশার স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা চলাচল করত। হঠাৎ করে শুক্রবার সকালে কালভার্টটি ভেঙে পড়ায় কয়েকটি গ্রামের মানুষের চলাচল বন্ধ রয়েছে।
মনিরুজ্জামান নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘কালভার্টটি পলশা গহুর মোল্লা ব্রিজ নামেই পরিচিত। অপরিকল্পিতভাবে আয়মন নদী খননের কারণেই চোখের সামনে ভেঙে পড়তে দেখলাম। আমাদের ভোগান্তি শুরু হয়ে গেছে। কালভার্টটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের ভাষ্য, কালভার্টটি ভেঙে পড়ায় শুক্রবার সকাল থেকে পণ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। কয়েক গ্রামের মানুষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আয়মন নদীর ওপর কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই কালভার্টের কারণে এ অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে অনেকটাই স্বাবলম্বী। হঠাৎ করে এটি ভেঙে যাওয়ায় মাথায় হাত পড়েছে। দ্রুত কালভার্টটি নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
মুক্তাগাছা উপজেলা প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বক্স কালভার্টটি আমরাই নির্মাণ করেছিলাম। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড অপরিকল্পিতভাবে নদী খনন করার কারণে বক্স কালভার্টটি ভেঙে গেছে।’ তাঁর ভাষ্য, আজ শনিবার মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠাবেন। দ্রুত সময়ের ভেতর এটি পুনর্নির্মাণ করার চেষ্টা করবেন। আগের মতো বক্স কালভার্ট দিয়ে চললে কালভার্টটিই নির্মাণ করা হবে, তা না হলে কালভার্টের জায়গায় একটি সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হবে। তবে জনগণের ভোগান্তি যাতে না হয় সেজন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম জানান, কালভার্ট ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন তারা। দু’পাশের মাটি সরে যাওয়ার কারণে এটি ঢলে পড়েছে। আবহাওয়া ভালো হলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে ভিন্ন মত পোষণ করেছেন  ময়মনসিংহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখলাক উল জামিল। তিনি বলেন, ‘আমরা নদ খনন করার আগে উপজেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি সেটি সংরক্ষণ করার জন্য। কালভার্টের দুই পাশে ৩০ মিটারের মধ্যে আমরা কোনো খনন কাজ করিনি। এখন যদি সেটি ভেঙে পড়ে তাহলে দায় কেন আমরা নেব?’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর ল ইসল ম উপজ ল খনন ক

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টি ঝরবে আরও চারদিন

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টি চলতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার রাতে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করেছে। তবে এর প্রভাবে বৃষ্টি ঝরবে আরও চারদিন।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আশঙ্কা নেই। ২৪ মে টেকনাফ দিয়ে মৌসুমি বায়ুর প্রবেশ ঘটে। এটা অনেক সক্রিয়। এ সক্রিয়তা ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হতে দেয়নি।  

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা ও রংপুর বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। অনেক জায়গায় দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

এতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশেপাশের এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি প্রথমে নিম্নচাপ তারপর গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় একই এলাকায় অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করার পর সাতক্ষীরা ও আশেপাশের এলাকায় স্থলগভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করে। এটি আরও উত্তর, উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। 

আজ শুক্রবার ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতে পারে। সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। 

শনিবার রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, বরিশাল ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। 

রোববার চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। 

চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল পাঁচজনের
  • জুলাই আন্দোলনে জীবিত ভাইকে নিহত দেখিয়ে মামলা, নেপথ্যে কী?
  • কালভার্ট ধসে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, বিপাকে নদীর দু’পারের মানুষ
  • ময়মনসিংহে ধসে পড়েছে গহুর মোল্লার ব্রিজ, যোগাযোগ বন্ধ
  • আর কতদিন থাকবে বৃষ্টি?
  • ঢাকায় আজ মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত
  • ময়মনসিংহে ১১ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি ট্রেন লাইনচ্যুত
  • সিলেটমুখী নিম্নচাপটি এখন টাঙ্গাইলে, আজ রূপ নিতে পারে লঘুচাপে  
  • বৃষ্টি ঝরবে আরও চারদিন