জবির দর্শন বিভাগে পদোন্নতি সভা আজ, নিষ্পত্তি হয়নি ৩ শিক্ষকের গবেষণা জালিয়াতির অভিযোগ
Published: 31st, May 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দর্শন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদের পদোন্নতি সভা ডাকা হয়েছে আজ শনিবার। এক বছর আগে বিভাগটির তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ উঠে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সে সময় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর গঠন করা হয় আরেকটি কমিটি। তবে অভিযোগ পুরোপুরি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তাদের পদোন্নতি সভা ডাকা হয়েছে। যদি আজকের সভা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আহ্বান করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন করেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো.
তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বিশ্ববিদ্যালয়টির জ্যৈষ্ঠ অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।
এ বিষয়ে প্রথম তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘এই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন অনেক আগেই জমা দিয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেবে। এছাড়া, ৫ আগস্টের পর আরও একটি তদন্ত কমিটি করেছে নতুন প্রশাসন।
রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, নতুন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন। এ বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের কাছে দ্বিতীয় কমিটির প্রতিবেদনও জমা পড়েছে। তবে প্রতিবেদনটি ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে উঠেনি বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সম্প্রতি নতুন পদোন্নতি সভার নির্দেশনা আসলে অভিযুক্ত শিক্ষকরাও আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দর্শন বিভাগে এই সভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সিন্ডিকেট সভায় প্রতিবেদন পাশ না হওয়ার আগেই নতুন বোর্ড কীভাবে হচ্ছে তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন আহমদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া মেলেনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. জসিম খান সমকালকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি কুচক্রী মহল এসব ষড়যন্ত্র করছে। তারা আমাকে বিভিন্নভাবে অপদস্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত করছে বারবার। তদন্ত কমিটি আমার বিষয়ে কোনো ত্রুটি পেলে অবশ্যই আমাকে শাস্তির আওতায় আনতো। কিন্তু আমি কোনো অপরাধ না করেও জীবন থেকে এক বছর হারিয়েছি। শতশত শিক্ষকের পেছনে পড়ে গেছি আমি।’
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্য দুই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপরে ওই শিক্ষকদের নতুন আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাই। নিয়মের ভিতর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বোর্ড আহ্বান করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘সকল নিয়মকানুন মেনেই সভার আয়োজন করা হয়েছে। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই এগিয়েছি আমরা। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও ইউজিসির অনুমোদনেই এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। ইউজিসির রিপোর্টে সভার আয়োজন করতে কোনো বাধা নেই- বলা হয়েছে। আমরা ইউজিসিকে সভার বিষয়ে অবগত করেছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।
আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।
আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।
জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।
সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।