জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দর্শন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক পদের পদোন্নতি সভা ডাকা হয়েছে আজ শনিবার। এক বছর আগে বিভাগটির তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গবেষণা জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ উঠে। অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সে সময় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর গঠন করা হয় আরেকটি কমিটি। তবে অভিযোগ পুরোপুরি নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তাদের পদোন্নতি সভা ডাকা হয়েছে। যদি আজকের সভা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই আহ্বান করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য আবেদন করেন একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো.

জসিম খান, ড. মর্জিনা খাতুন ও আব্দুস সালাম। তবে তাদের বিরুদ্ধে গবেষণায় জালিয়াতির অভিযোগ উঠলে পদোন্নতি বোর্ড স্থগিত হয়।

তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বিশ্ববিদ্যালয়টির জ্যৈষ্ঠ অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয় কমিটি।

এ বিষয়ে প্রথম তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, ‘এই ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন অনেক আগেই জমা দিয়েছি। পরবর্তী পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেবে। এছাড়া, ৫ আগস্টের পর আরও একটি তদন্ত কমিটি করেছে নতুন প্রশাসন।

রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা গেছে, নতুন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছউদ্দীন। এ বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশাসনের কাছে দ্বিতীয় কমিটির প্রতিবেদনও জমা পড়েছে। তবে প্রতিবেদনটি ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে উঠেনি বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে সম্প্রতি নতুন পদোন্নতি সভার নির্দেশনা আসলে অভিযুক্ত শিক্ষকরাও আবেদন করেন। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দর্শন বিভাগে এই সভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

সিন্ডিকেট সভায় প্রতিবেদন পাশ না হওয়ার আগেই নতুন বোর্ড কীভাবে হচ্ছে তা জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াসউদ্দিন আহমদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও সাড়া মেলেনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. জসিম খান সমকালকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে একটি কুচক্রী মহল এসব ষড়যন্ত্র করছে। তারা আমাকে বিভিন্নভাবে অপদস্ত এবং ক্ষতিগ্রস্ত করছে বারবার। তদন্ত কমিটি আমার বিষয়ে কোনো ত্রুটি পেলে অবশ্যই আমাকে শাস্তির আওতায় আনতো। কিন্তু আমি কোনো অপরাধ না করেও জীবন থেকে এক বছর হারিয়েছি। শতশত শিক্ষকের পেছনে পড়ে গেছি আমি।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত অন্য দুই শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি। 

দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এরপরে ওই শিক্ষকদের নতুন আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাই। নিয়মের ভিতর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বোর্ড আহ্বান করেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, ‘সকল নিয়মকানুন মেনেই সভার আয়োজন করা হয়েছে। নিয়মতান্ত্রিকভাবেই এগিয়েছি আমরা। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও ইউজিসির অনুমোদনেই এই সভার আয়োজন করা হয়েছে। ইউজিসির রিপোর্টে সভার আয়োজন করতে কোনো বাধা নেই- বলা হয়েছে। আমরা ইউজিসিকে সভার বিষয়ে অবগত করেছি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গঠন কর কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

আজও চিকিৎসাসেবা বন্ধ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে, ভোগান্তিতে রোগীরা

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এখন অনেকটাই জনমানবশূন্য। গত বুধবার সকালে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে ত্রিমুখী সংঘর্ষের পর কাজে ফেরেননি চিকিৎসক, নার্স ও সহায়ককর্মীরা। ফলে বন্ধ হয়ে যায় বহির্বিভাগ, অস্ত্রোপচার ও জরুরি সেবা। আজ শুক্রবারও চালু হয়নি হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন মূল ফটক থেকেই।

আজ সকালের দিকে সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ও নার্স নেই। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা নতুন রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। আগে যেসব রোগী এখান থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন, তাদের অনেকে ফলোআপের জন্য এসে তা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, পুরো সেবা কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করছেন। তাদের ভাষ্য, হাসপাতালের ভেতর জুলাই যোদ্ধাদের কিছু অংশ সহিংস আচরণ করেছে। ভাঙচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে বারবার। এতে আতঙ্কে রয়েছেন চিকিৎসক ও স্টাফরা।

স্থানীয় চা দোকানি শাহ আলম বলেন, বুধবার সংঘর্ষের পর থেকে কেউ আসছেন না। হাসপাতাল পুরো ফাঁকা। মাঝে মাঝে আহত ছেলেগুলোর কাউকে কাউকে ভেতর থেকে বাইরে যেতে দেখি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে ৫০ জন জুলাই যোদ্ধা হাসপাতালে ভর্তি। আত্মহত্যার চেষ্টা করা চারজন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং একজন সিএমএইচে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া প্রায় ১৫০ জন সাধারণ রোগী ছিলেন, যারা নিরাপত্তার অভাবে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খায়ের আহমেদ চৌধুরী বলেন, আটজন ছাড়া বাকি জুলাই যোদ্ধারা সুস্থ। তাদের হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন নেই। ছুটি দেওয়া হলেও তারা হাসপাতাল ছাড়ছেন না। বর্তমানে আমি ছুটিতে রয়েছি। এত ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেব। তিনি জানান, চিকিৎসক ও স্টাফদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না গেলে কেউ কাজে ফিরবেন না।

যে ঘটনার জেরে অচলাবস্থা

হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত চার রোগী সঠিক চিকিৎসা না পাওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে গত ২৫ মে বিষপান করলে উত্তেজনার সূত্রপাত ঘটে। এরপর ২৭ মে পরিচালকের কক্ষে গিয়ে আরেক আহত শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এতে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়; তৈরি হয় অবিশ্বাসের আবহ। এরপর গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থায় যায়। হাসপাতালে ভর্তি জুলাই যোদ্ধা, কর্মচারী এবং রোগীদের সঙ্গে থাকা স্বজনদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্যানসার মানেই থেমে যাওয়া নয়
  • চরের কাদায় আটকে ছিল দুটি ডলফিন, নদীতে ছেড়ে দিলেন জেলেরা
  • আনন্দ, চমক আর তারকায় ভরপুর বিটিভির ‘আনন্দমেলা’
  • রাখাইনে সংঘর্ষে জান্তা বাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নিহত
  • ‘আগে জামায়াত নেতাদের হত্যার বিচার, এরপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন’
  • ‘আগে বিচার এরপরে সংস্কার তারপর নির্বাচন’
  • খুলনায় ছোট ভাইকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে
  • জি এম কাদের ঢাকায় ফিরলে কর্মসূচি দেবে রংপুর জাপা, বৈষম্যবিরোধীদের বিক্ষোভ স্থগিত
  • আজও চিকিৎসাসেবা বন্ধ চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে, ভোগান্তিতে রোগীরা