ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনে ছাত্রদের নামাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া একটি কক্ষ নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযোগে উঠেছে, কলাভবনের ওই স্থানটি অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজেদের দখলে রাখতে চাচ্ছে। এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন বরাদ্দ বাতিলের জন্য প্রভাব খাটাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ১৯ মে কলাভবনের নিচতলার ১০২৪ নম্বর কক্ষটি সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নামাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার স্মারক নম্বর: প্রকৌঃ ৭০৯৯।

আরো পড়ুন:

কৃষকের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি

ড.

আসিফ নজরুল
দক্ষতা উন্নয়নে ৬ হাজার এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

পূর্বে এই কক্ষটি ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধীনে থাকলেও বিভাগটি সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে স্থানান্তরিত হয়। ফলে কক্ষটি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় প্রশাসন নামাজ কক্ষ হিসেবে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন স্পেস বরাদ্দ কমিটির এ সিদ্ধান্ত বানচালের জন্য নানামুখি অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, কক্ষটি নামাজের স্থানে রূপান্তর হওয়ার পর ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ সময় কক্ষটি ফাঁকা পড়ে থাকলেও মসজিদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া পর ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এটাকে নানাভাবে উচ্ছেদের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। 

কলাভবনের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, “মসজিদটি উচ্ছেদ করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার চেষ্টা করলে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। মসজিদ উচ্ছেদ করা হয় পাশের দেশ ভারতে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের ভূমিকায় আমরা দেখতে চায় না।”

অভিযোগের বিষয় বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন বলেন, “কক্ষটি আমাদেরই বরাদ্দ দেওয়া ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওটা নিয়ে নিতে চাইলে অন্য কোথাও আমাদের কক্ষ দিক। আমরা যখন নতুন ভবনে চলে যায়, তখন মোট ১৮টি কক্ষের চাবি কলা অনুষদকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী ওই কক্ষও আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেটার কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে।”

তিনি বলেন, “কলা ভবনের ১০২৪ নম্বর কক্ষ ক্রিমিনোলজি বিভাগের ক্রাইম ল্যাব ইন্সট্রাক্টরের জন্য বরাদ্দ করা। ল্যাব বানানোর জন্য কক্ষটি বিভাগের উদ্যোগে ডেকোরেশন করা হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য খুব তাড়াতাড়ি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হবে।”

নামাজের স্থান বরাদ্দে বাধা দেওয়া প্রশ্নে তিনি বলেন, “কক্ষটি তো আমাদের জন্যই বরাদ্দ। এটাতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। নামাযের স্থান ওখানে আছেই অথবা অন্য জায়গায় নিক বা আমাদেরকে অন্য জায়গায় দিক। আমাদেরকে না দিলে আমরা তো এমনটাই চাইব। আমরা তাদের জানিয়েছি এ বিষয়ে, এখন কতৃপক্ষ তাদেরকে দিয়ে দিলে আমাদের বলার কিছু থাকে না।”

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, “কক্ষ বরাদ্দ ডিন দেয় না। কক্ষের বিষয় ডিনের কাছে আবেদনও করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছে উপ উপাচার্যের (প্রশাসন) কাছে। উপ-উপাচার্যের সভাপতিত্বে যে মিটিং হয়েছে, সেখান থেকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমাদের (ডিন) থেকে কক্ষ বরাদ্দ হয়নি।”

তিনি বলেন, “ক্রিমিনোলজি এখন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের নতুন ভবনে চলে গেছে। আমি শুনেছি ২০২২ সাল থেকে এই কক্ষটা (কলা ভবনের ১০২৪ নম্বর কক্ষ) তাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল, তখন থেকেই এটি তালাবদ্ধ করে অব্যবহিত রয়ে গেছে। তারা এখন যেখানে গেছে, সেখানে তাদের রুম বরাদ্দ দেওয়া হোক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। এ বিষয়ে জানতে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র জন য আম দ র ন ভবন ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবিতে নামাজের কক্ষ নিয়ে বিতর্ক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলাভবনে ছাত্রদের নামাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া একটি কক্ষ নিয়ে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

অভিযোগে উঠেছে, কলাভবনের ওই স্থানটি অপরাধবিজ্ঞান বিভাগ নিয়মবহির্ভূতভাবে নিজেদের দখলে রাখতে চাচ্ছে। এছাড়া বর্তমান চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন বরাদ্দ বাতিলের জন্য প্রভাব খাটাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ১৯ মে কলাভবনের নিচতলার ১০২৪ নম্বর কক্ষটি সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নামাজের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার স্মারক নম্বর: প্রকৌঃ ৭০৯৯।

আরো পড়ুন:

কৃষকের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীর অবস্থান কর্মসূচি

ড. আসিফ নজরুল
দক্ষতা উন্নয়নে ৬ হাজার এসএসসি পরীক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে

পূর্বে এই কক্ষটি ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধীনে থাকলেও বিভাগটি সামাজিক বিজ্ঞান ভবনে স্থানান্তরিত হয়। ফলে কক্ষটি দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় প্রশাসন নামাজ কক্ষ হিসেবে বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন স্পেস বরাদ্দ কমিটির এ সিদ্ধান্ত বানচালের জন্য নানামুখি অপতৎপরতা চালাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, কক্ষটি নামাজের স্থানে রূপান্তর হওয়ার পর ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ সময় কক্ষটি ফাঁকা পড়ে থাকলেও মসজিদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া পর ক্রিমিনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এটাকে নানাভাবে উচ্ছেদের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। 

কলাভবনের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, “মসজিদটি উচ্ছেদ করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার চেষ্টা করলে অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। মসজিদ উচ্ছেদ করা হয় পাশের দেশ ভারতে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তাদের ভূমিকায় আমরা দেখতে চায় না।”

অভিযোগের বিষয় বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক শাহারিয়া আফরিন বলেন, “কক্ষটি আমাদেরই বরাদ্দ দেওয়া ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ওটা নিয়ে নিতে চাইলে অন্য কোথাও আমাদের কক্ষ দিক। আমরা যখন নতুন ভবনে চলে যায়, তখন মোট ১৮টি কক্ষের চাবি কলা অনুষদকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের চাহিদা অনুযায়ী ওই কক্ষও আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেটার কাগজপত্র আমাদের কাছে আছে।”

তিনি বলেন, “কলা ভবনের ১০২৪ নম্বর কক্ষ ক্রিমিনোলজি বিভাগের ক্রাইম ল্যাব ইন্সট্রাক্টরের জন্য বরাদ্দ করা। ল্যাব বানানোর জন্য কক্ষটি বিভাগের উদ্যোগে ডেকোরেশন করা হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য খুব তাড়াতাড়ি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি হবে।”

নামাজের স্থান বরাদ্দে বাধা দেওয়া প্রশ্নে তিনি বলেন, “কক্ষটি তো আমাদের জন্যই বরাদ্দ। এটাতে বাধা দেওয়ার কিছু নেই। নামাযের স্থান ওখানে আছেই অথবা অন্য জায়গায় নিক বা আমাদেরকে অন্য জায়গায় দিক। আমাদেরকে না দিলে আমরা তো এমনটাই চাইব। আমরা তাদের জানিয়েছি এ বিষয়ে, এখন কতৃপক্ষ তাদেরকে দিয়ে দিলে আমাদের বলার কিছু থাকে না।”

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, “কক্ষ বরাদ্দ ডিন দেয় না। কক্ষের বিষয় ডিনের কাছে আবেদনও করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা আবেদন করেছে উপ উপাচার্যের (প্রশাসন) কাছে। উপ-উপাচার্যের সভাপতিত্বে যে মিটিং হয়েছে, সেখান থেকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমাদের (ডিন) থেকে কক্ষ বরাদ্দ হয়নি।”

তিনি বলেন, “ক্রিমিনোলজি এখন সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের নতুন ভবনে চলে গেছে। আমি শুনেছি ২০২২ সাল থেকে এই কক্ষটা (কলা ভবনের ১০২৪ নম্বর কক্ষ) তাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল, তখন থেকেই এটি তালাবদ্ধ করে অব্যবহিত রয়ে গেছে। তারা এখন যেখানে গেছে, সেখানে তাদের রুম বরাদ্দ দেওয়া হোক।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পেস বরাদ্দ কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা। এ বিষয়ে জানতে তাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ