যাত্রীর চাপ বৃদ্ধির আগেই ঈদযাত্রায় ভোগান্তি হচ্ছে টানা বৃষ্টিতে। উত্তরবঙ্গের প্রবেশ দুয়ার খ্যাত গাজীপুরের চন্দ্রায় প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ জুড়ে যানজট হয়েছে। গাড়ির চাপ এবং বৃষ্টিতে সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে ছিল ধীরগতি। ঈদযাত্রায় বেড়েছে এসি বাসের ভাড়া। কোন কোন পরিবহনে এসি বাসের ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সরকার সাধারণ বাসের ভাড়া নির্ধারণ করলেও, এসি বাসে তা ঠিক করেন মালিকরা।

নন-এসি বাসের ভাড়াও বাড়ানো হয়েছে কৌশলে। এসব বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু ঈদের সময়ে শেষ গন্তব্যের সরকার নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। যেমন ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৩১০ টাকা হলেও, সাধারণ সময়ে ‘আলম এশিয়া’, ‘ইমাম’সহ বিভিন্ন বাসে ২০০ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু রোববার থেকে নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। যাত্রী যেখানেই নামুন, ‘ইমাম’ শেষ গন্তব্য হালুয়াটের ভাড়া নিচ্ছে।

একই চিত্র গাবতলী টার্মিনাল এলাকায়। রংপুরগামী এসি বাসের ভাড়া ছিল হাজার টাকা। ঈদে তা এক হাজার ৬০০ টাকাও নেওয়া হয়েছে। একই অবস্থা খুলনা, রাজশাহীর বাসেও। রংপুরের যাত্রী আসাদুজ্জামান মিলন সমকালকে বলেছেন, নন-এসি বাসের ভাড়া ছিল ৫০০ টাকা। কিন্তু টিকিট নেই। এসি বাসে এক হাজার ৬০০ টাকা চাইছে। এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৮০০ টাকা। শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, এসি বাসের ভাড়ায় সরকারকে ভ্যাট দিতে হয়। বিলাসবহুল বাস, তাই ভাড়াও বেশি। ঈদের সময়ে ফিরতি যাত্রায় বাস খালি ফেরে। তাই খরচ পোষাতে ভাড়া বৃদ্ধি করতে হয়। কিন্ত নন-এসি বাসের সবাড়া বাড়ে নি। 

রোববার ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকেও প্রায় সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে যাত্রা করেছে। তিন স্তরের তল্লাশি থাকায় বিনাটিকিটে যাত্রী স্টেশনে প্রবেশ করতে পারছে না,  ফলে  ভিড় নেই। তবে প্রতি বছরই ঈদের আগে দিন কড়াকড়ি ভেঙে পড়ে। উপচেপড়া ভিড় হয় ট্রেনে। 

আগামী ৫ থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ঈদের ছুটি। ঈদ হবে ৭ জুন। এ হিসেবে ঈদের আগে ছুটি মাত্র দুইদিন, ৫ জুন বৃহস্পতিবার এবং ৬ জুন শুক্রবার। ৪ জুন বুধবার শেষ কর্মদিবস। অধিকাংশ যাত্রী এই দুই দিনে যাত্রা করবেন। ঈদের আগের স্বল্প ছুটি এবং বৃষ্টির কারণে এবারের ঈদযাত্রায় ব্যাপক ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। রাজধানীমুখী পশুবাহী গাড়ির ভিড়, মহাসড়কের আশেপাশের হাটও হবে ভোগান্তির কারণ।  

আগামী ৪ জুন অফিস, আদালত, কলকারখানাসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে ছুটি হবে। যাত্রী ঢলে যান সঙ্কট এবং শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদয ত র ঈদয ত র য় সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অপহৃত মোটরসাইকেলচালক যেভাবে ময়মনসিংহে উদ্ধার হলেন

রাজধানীর মালিবাগ থেকে ফকিরের পুল যাওয়ার পথে হঠাৎ ভাড়ায় চালানো মোটরসাইকেলের চালক কামরুল হাসানের সামনে একটি মাইক্রোবাস এসে দাঁড়ায়। গাড়িতে স্টিকারে লেখা ছিল ‘প্রেস’। ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল কামরুলকে জোর করে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর মুঠোফোনটি বন্ধ করে মারধর শুরু করে তাঁকে। চাওয়া হয় চার লাখ টাকা মুক্তিপণ, না দিলে মৃত্যুর হুমকি।

ময়মনসিংহ নগরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চুরখাই এলাকা থেকে গতকাল শনিবার রাত ১১টার দিকে কামরুল হাসানকে উদ্ধার করে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। এ সময় অপহরণকারী চক্রের সাত সদস্যকে আটক করা হয়। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে ময়মনসিংহে র‍্যাব-১৪–এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাবের অধিনায়ক নয়মুল হাসান।

উদ্ধার হওয়া কামরুল হাসান (৩২) বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ধামাহার শোলাগাড়ী গ্রামের প্রয়াত আনোয়ারুল ইসলামের ছেলে। তিনি রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় পাঁচ বছর ধরে স্ত্রী ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন। অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ার করে সংসার চালান। গতকাল বেলা তিনটার দিকে ঢাকার মালিবাগ থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হঠাৎ আমার চলন্ত মোটরসাইকেলের সামনে ১০ থেকে ১২ জনের দলটি এসে গাড়ি থামিয়ে কিছু না বলেই জোর করে তাদের গাড়িতে তুলে নেয়। গাড়িতে চালক ছাড়া ৬ জন ওঠে। আমাকে গাড়িতে তুলে মুঠোফোনটি নিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয়। এরপর চার লাখ টাকা মুক্তিপণের জন্য মারধর করতে থাকে। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। একপর্যায়ে টাকা দিতে রাজি হলে মুঠোফোনটি চালু করে আমাকে দেওয়া হয়। তারপর নিজের গ্রামের পরিচিত এক ভাইকে ফোন করে নিজে বিপদে পড়ার কথা জানিয়ে চার লাখ টাকা ব্যবস্থা করার কথা বলি। পরে আমার পরিবারের সদস্যরা র‍্যাবের কাছে জানালে র‍্যাব টহল বসিয়ে আমাকে উদ্ধার করে।’

কামরুল হাসানকে অপহরণের অভিযোগে আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাহমুদনগর গ্রামের মো. রিফাত হাসান ওরফে মিন্টু (২৯), একই গ্রামের মামুন অর রশিদ (২৪), পাঠানতুলা গ্রামের মো. আশরাফুল ইসলাম (২৯), পশ্চিম দাপুনিয়া গ্রামের মো. আল আমিন (৩৫), তাঁতকুড়া গ্রামের মো. মোতালিব (৩৬), ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানা এলাকার শিকদারকান্দা গ্রামের মো. মিরাজ খাঁ (৫২) ও ঢাকার মালিবাগ রেলগেট এলাকার মো. আমিন কাজী (২২)।

র‍্যাব জানিয়েছে, যে গাড়িটি দিয়ে কামরুল হাসানকে অপহরণ করা হয়েছে, সেটি জব্দ করেছে তারা। গাড়ি থেকে সংসদ সদস্যদের গাড়িতে ব্যবহার করার মনোগ্রাম, গাজীপুর পুলিশ ও ডিবি, প্রেস ও চ্যানেল-১৬, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আরএএম গার্মেন্ট, বিজিএমইএ লেখা লেমিনেটিং করা কাগজ উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১৪–এর অধিনায়ক নয়মুল হাসান বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করে টার্গেট করে বিভিন্ন ব্যক্তিকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করত। সে জন্য কখনো গাড়ির সামনে সংসদ সদস্য লেখা লোগো, কখনো সাংবাদিক, পুলিশ বা অন্য পরিচয় লেখা স্টিকার ব্যবহার করত। বর্তমানে সংসদ না থাকায় প্রেস, পুলিশ ও এনবিআর লেখা স্টিকার ব্যবহার করে অপহরণ করছিল চক্রটি। অপহরণকারী চক্রটিকে ঢাকায় সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়মনসিংহ সীমান্তে ২২ জনকে ঠেলে দিলো বিএসএফ
  • ঈদের আগে-পরে যেমন থাকবে আবহাওয়া
  • গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জলাবদ্ধতা, ঈদযাত্রায় ভোগান্তির আশঙ্কা
  • ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড় ধসের শঙ্কা 
  • ঘুমের মধ্যেই শেষ রিয়াজ রহিমার গোটা পরিবার
  • চার নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে, বাড়ছে তিস্তার পানিও
  • ঢাকায় অপহৃত মোটরসাইকেলচালক যেভাবে ময়মনসিংহে উদ্ধার হলেন
  • দুপুরের মধ্যে দেশের ১১ অঞ্চলে ঝড়ের আভাস
  • দুই জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল পাঁচজনের