মেজর সিনহা হত্যা মামলার আপিলের রায় আজ
Published: 2nd, June 2025 GMT
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের করা আপিলের শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আজ সোমবার রায়ের দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেন সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বৃহস্পতিবার এ দিন ধার্য করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো.
শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মেজর সিনহা হত্যা মামলাটি একটি আলোচিত মামলা। তিনি ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের ফাঁসিসহ বিচারিক আদালতের পুরো রায় বহালের আবেদন করেন।
এর আগে ২১ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মেজর সিনহা হত্যা মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টের এই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দেন। পরে ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টের এই বেঞ্চে আপিলের ওপর শুনানি শুরু হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয় সিনহা মো. রাশেদ খানকে। তিনি ছিলেন সেনাবাহিনীর একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজর, যিনি স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডের দায়ে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এ মামলায় রায় দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল।
রায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফাঁসির রায় দেওয়া হয়। এছাড়া সিনহাকে হত্যায় সহযোগিতা এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্য এবং পুলিশের তিন সোর্সকে দেওয়া হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার করে সাড়ে চার বছর আগে মেজর সিনহাকে হত্যার ঘটনা সমালোচনার ঝড় বইয়ে দিয়েছিল দেশজুড়ে।
মামলার ১৫ আসামির মধ্যে বাকি চার পুলিশ সদস্য এবং তিন এপিবিএন সদস্যকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। পরে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা আপিল করেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জগন্নাথের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এস এম আনোয়ারা বেগমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা একটি মামলায় গত বৃহস্পতিবার তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। ষাটোর্ধ্ব অধ্যাপক আনোয়ারাকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দা জানিয়ে গতকাল বিবৃতি দিয়েছিল মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।
আজ সোমবার অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের জামিন চেয়ে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। শুনানি নিয়ে সিএমএম আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। আনোয়ারা বেগমের আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জামিন আবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক আনোয়ারা বেগমের বয়স ৭০ বছর। তিনি ৩৫ বছর যাবৎ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক একজন নারী। তিনি অসুস্থ। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, তিনি জামিন পাওয়ার হকদার।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করে আদালতে বক্তব্য রাখা হয়। উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত ৫০০ টাকা মুচলেকায় অধ্যাপক আনোয়ারার জামিন মঞ্জুর করেন। আদালতে আনোয়ারা বেগমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তাঁর আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার দায়ের করা হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বুধবার আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয় রাজধানীর সূত্রাপুর থানায়। সূত্রাপুর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়, গত বছরের ১৯ জুলাই রায়সাহেব বাজারের কাছে স্টার হোটেলের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আন্দোলনকারী ও ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ্য করে গুলি চালানো হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ঘটনা ঘটান। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। এ ঘটনায় সুজন মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সূত্রাপুর থানায় এই মামলা করেন।
আনোয়ারা বেগম একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন।
আরও পড়ুনকারাবন্দী অধ্যাপক আনোয়ারা চার বছর আগে অবসরে যান০১ জুন ২০২৫