অধ্যাপক জওহরলাল বসাকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
Published: 29th, July 2025 GMT
পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক জওহরলাল বসাক তুলশীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে পাবনা জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা পাবনা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে।
রবিবার (২৭ জুলাই) দুপুরে পাবনা শহরের কালাচাঁদপাড়া এলাকায় নিজ বাড়িতে ঢুকে জওহরলাল বসাক তুলশী (৭৭) কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় তারা একটি ফোন ছিনিয়ে নিযে ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে চলে যায়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তারা বলেন, জওহরলাল বসাক তুলশী পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি পাবনার সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তার উপর সন্ত্রাসী হামলা মেনে নেয়া যায় না। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি, যা দুঃখজনক। পুলিশের গাফিলতি কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার না করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।
আরো পড়ুন:
বাকৃবিতে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চান শিক্ষার্থীরা, একমত না শিক্ষকরা
৩৫ বছর পর রাকসু তফসিল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মাসুম বগা, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক ইলিয়াস আহমেদ হিমেল রানা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইয়ামিন খান, সদস্য সচিব কমল শেখ টিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক দীপঙ্কর সরকার জিতু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, বুলবুল কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গোলাম জাহিদ রুপম, এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মার চরে জোড়া খুনের ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
পদ্মার চরে দুজনকে হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার নিহতের বাবা-মাসহ স্বজনেরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে সেখানে অঝোরে কেঁদেছেন। এ সময় অন্যরাও চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।
আজ শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খানপুর বাজারে ‘হতাহতদের পরিবার ও এলাকাবাসী’র ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। আমান মণ্ডল ও নাজমুল মণ্ডলকে গুলি করে হত্যাসহ মুনতাজ মণ্ডল ও রাকিব হোসেনকে আহত করার প্রতিবাদ এবং দোষীদের বিচার দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনের ব্যানারের এক পাশে নিহত-আহত ব্যক্তিদের ছবি, আরেক পাশে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সাতজনের ছবি সাঁটিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি জানান তাঁরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার না করা হলে তাঁরা কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন।
আরও পড়ুনদুজনকে হত্যার ঘটনায় ‘কাকন বাহিনীর’ কাকনকে প্রধান আসামি করে মামলা২৯ অক্টোবর ২০২৫বাঘা উপজেলার নিচ খানপুর গ্রামের নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনাজ মণ্ডল জানান, দিনদুপুরে গুলি করে তাঁর ছেলেসহ দুজনকে গুলি করে হত্যা করার পরও আসামিরা এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। তাদের স্বজনেরাও ঘুরে বেড়াচ্ছে বুক ফুলিয়ে। প্রশাসনকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেনের ভাষ্য, হত্যাকাণ্ডের ৫ দিন পার হলেও মূল আসামিদের ধরতে না পারা রহস্যজনক। খানপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ মণ্ডল বলেন, হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করলে তাদের ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা যাবে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার আরেক যুবক নাজমুলের বাবা শুকুর মণ্ডল মানববন্ধনে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আর কিছু বলতে পারেননি। তিনি হাউমাউ করে কেঁদে ফেলেন।
গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজশাহীর বাঘা ও কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তের ১৪ হাজার মাঠ নামে পরিচিত চাকলার চর এলাকায় কাশবনখেত নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন আমান মণ্ডল, নাজমুল মণ্ডল (২৬), মুনতাজ মণ্ডল (৩২) ও রাকিব হোসেন (১৮)। এর মধ্যে আমান ও নাজমুল মারা যান। অপর দুজন রামেক হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
মুনতাজ মণ্ডলের পিতা চান মণ্ডল বলেন, নদীভাঙনের শিকার হয়ে তাঁরা বর্তমানে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার নিচ খানপুর গ্রামে বসবাস করছেন। চাকলার চর এলাকায় তাঁদের পৈতৃক জমি রয়েছে। সেই জমিতে তাঁরা কাশবনের খড় কাটছিলেন। কথিত ‘কাকন বাহিনী’র লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেই জমি দখলে নিতে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।
এ ঘটনায় বাহিনীর প্রধান দৌলতপুর থানার মাঝদিয়াড় বৈরাগী চরের হাসানুজ্জামান ওরফে কাকন ইঞ্জিনিয়ারকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০–৩০ জনকে আসামি করে মিনাজ মণ্ডল দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তী সময় পুলিশ শটগানের কার্তুজের ৫৫টি খালি খোসা ও ১৫টি গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
এদিকে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর অনুমান ১২টার সময় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা এলাকার পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় লিটন ঘোষ (৩০) নামের একজনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ। লিটন ঘোষ কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা থানার রায়টা ঘোষপাড়া গ্রামের জামরুল ঘোষের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরদী লক্ষ্মীকুণ্ডা নৌ পুলিশ ক্যাম্পের (ইনচার্জ) এসআই শফিউদ্দিন বলেন, তাঁর শরীরে অসংখ্য জখমের চিহ্ন ছিল। সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে লিটনও নিখোঁজ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, দৌলতপুর-বাঘা সীমান্তে চর দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুনকথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল১১ ঘণ্টা আগে