জামালপুরে নতুন গ্যাসক্ষেত্রে কী পরিমাণ গ্যাস মজুদ, জানতে সময় লাগবে ১৫ দিন
Published: 2nd, June 2025 GMT
জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে নতুন কূপ খননের পর প্রাথমিক পরীক্ষায় গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। নতুন গ্যাসক্ষেত্রের কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস বের হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই কূপ থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গ্যাস উত্তোলনের জন্য নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আরও ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। এরপর নিশ্চিত হওয়া যাবে কূপে কী পমিমাণ গ্যাস মজুত রয়েছে এবং মজুতকৃত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাবে কি না? সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এটি হতে পারে দেশের ৩০তম গ্যাসক্ষেত্র।
আরও পড়ুনজামালপুরে কূপে গ্যাসের সন্ধান, ১৪০০ মিটার নিচ থেকে বের হচ্ছে গ্যাস২০ ঘণ্টা আগে‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ কূপ খনন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ২ হাজার ৬০০ মিটার খনন করা হয়েছে। ক্ষেত্রটির খনন করা একটি কূপের ১ হাজার ৪৪৪ মিটার মাটির নিচের স্তর থেকে গত শনিবার গভীর রাত থেকে গ্যাস বের হতে শুরু করে। স্থাপিত পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছিল। তাতে আগুন দিয়ে অগ্নিশিখা প্রজ্বালন করা হয়, যা কোনো ক্ষেত্রে গ্যাসের অবস্থানের প্রমাণ। আর গত শনিবার দুপুর থেকে প্রতিদিন ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস বের হচ্ছে। এ ছাড়া তেল বা পদার্থ আছে কি না, তা পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।
কূপ থেকে গ্যাস বের হওয়ার খবরে স্থানীয় লোকজন ভিড় করছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামালপুরে নতুন গ্যাসকূপের সন্ধান পাওয়ার খবরটি নিঃসন্দেহে স্বস্তির ও খুশির। যদি বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনের মতো গ্যাস পাওয়া যায়, তাহলে জামালপুরের মানুষের চাহিদা পূরণ করে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের দাবি জানান তাঁরা।
প্রকল্পের পরিচালক মো.
বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, দেশের গ্যাসসংকট মোকাবিলায় দেশি জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে কাজ করছে সরকার। এই লক্ষ্যে ২০২৪-২৬ অর্থবছরে সরকার মোট ৫০টি কূপ অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তারই অংশ হিসেবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতাধীন বাপেক্স এক্সপ্লোরেশন ব্লক-৮-এর জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে ১৯৮০ সালের ভূকম্পন জরিপ (সিসমিক), ২০১৪-১৫ সালের ভূকম্পন জরিপ ও ২০১৫-১৬ সালের ক্লোজ গ্রিড সিসমিক জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ কূপটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কূপ খননের কাজ শুরু হয়। বাপেক্সের প্রকৌশলী, শ্রমিকসহ ২২০ জন ব্যক্তি খননকাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়। ২৪ জানুয়ারি কূপের আনুষ্ঠানিক খননকাজের উদ্বোধন করে বাপেক্স। এর আগে ২০১৪ সালে একই এলাকায় গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক প খনন র
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ