জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে নতুন কূপ খননের পর প্রাথমিক পরীক্ষায় গ্যাসের সন্ধান পেয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। নতুন গ্যাসক্ষেত্রের কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস বের হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই কূপ থেকে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গ্যাস উত্তোলনের জন্য নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আরও ১৫ দিন সময় লাগতে পারে। এরপর নিশ্চিত হওয়া যাবে কূপে কী পমিমাণ গ্যাস মজুত রয়েছে এবং মজুতকৃত গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা যাবে কি না? সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এটি হতে পারে দেশের ৩০তম গ্যাসক্ষেত্র।

আরও পড়ুনজামালপুরে কূপে গ্যাসের সন্ধান, ১৪০০ মিটার নিচ থেকে বের হচ্ছে গ্যাস২০ ঘণ্টা আগে

‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ কূপ খনন প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ২ হাজার ৬০০ মিটার খনন করা হয়েছে। ক্ষেত্রটির খনন করা একটি কূপের ১ হাজার ৪৪৪ মিটার মাটির নিচের স্তর থেকে গত শনিবার গভীর রাত থেকে গ্যাস বের হতে শুরু করে। স্থাপিত পাইপ দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছিল। তাতে আগুন দিয়ে অগ্নিশিখা প্রজ্বালন করা হয়, যা কোনো ক্ষেত্রে গ্যাসের অবস্থানের প্রমাণ। আর গত শনিবার দুপুর থেকে প্রতিদিন ৭ দশমিক ৩ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস বের হচ্ছে। এ ছাড়া তেল বা পদার্থ আছে কি না, তা পরীক্ষা শেষে জানা যাবে।

কূপ থেকে গ্যাস বের হওয়ার খবরে স্থানীয় লোকজন ভিড় করছেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জামালপুরে নতুন গ্যাসকূপের সন্ধান পাওয়ার খবরটি নিঃসন্দেহে স্বস্তির ও খুশির। যদি বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনের মতো গ্যাস পাওয়া যায়, তাহলে জামালপুরের মানুষের চাহিদা পূরণ করে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহের দাবি জানান তাঁরা।

প্রকল্পের পরিচালক মো.

মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৪ জানুয়ারি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে খননকাজ শুরু করেছি। ২৫ এপ্রিল আমাদের খনন কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। এখন আমাদের অয়েল টেস্টিংয়ের কাজ চলমান আছে। অয়েল টেস্টিংয়ের পর আমরা জানতে পারব, এখানে গ্যাসের কী পরিমাণ মজুত আছে এবং গ্রিডে দেওয়ার মতো অবস্থা আছে কি না? এরপর সবকিছুর বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।’

বাপেক্স সূত্রে জানা গেছে, দেশের গ্যাসসংকট মোকাবিলায় দেশি জ্বালানির উৎস অনুসন্ধানে কাজ করছে সরকার। এই লক্ষ্যে ২০২৪-২৬ অর্থবছরে সরকার মোট ৫০টি কূপ অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তারই অংশ হিসেবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের আওতাধীন বাপেক্স এক্সপ্লোরেশন ব্লক-৮-এর জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের তারতাপাড়া গ্রামে ১৯৮০ সালের ভূকম্পন জরিপ (সিসমিক), ২০১৪-১৫ সালের ভূকম্পন জরিপ ও ২০১৫-১৬ সালের ক্লোজ গ্রিড সিসমিক জরিপের তথ্যের ভিত্তিতে ‘জামালপুর-১ অনুসন্ধান’ কূপটি খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রায় ১৬৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কূপ খননের কাজ শুরু হয়। বাপেক্সের প্রকৌশলী, শ্রমিকসহ ২২০ জন ব্যক্তি খননকাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন। চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি কূপ খননের স্থানে ড্রিলিং রিগ স্থাপন করা হয়। ২৪ জানুয়ারি কূপের আনুষ্ঠানিক খননকাজের উদ্বোধন করে বাপেক্স। এর আগে ২০১৪ সালে একই এলাকায় গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক প খনন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ