বিদ্যুৎ খাতে প্রদত্ত ভর্তুকির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিগুলোও পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমাতে এনার্জি অডিট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে নীতিগতভাবে আমরা বিদ্যুতের মূল্য আপাতত না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সোমবার জাতীয় বাজেট বক্তৃতায় এসব তথ্য তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা ড.
উপদেষ্টা বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে কৃষি উৎপাদনের জন্য সারসহ অন্যান্য উপকরণে প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। এছাড়া খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্ব বিবেচনায় সারের মজুদ বা বাফার স্টক বাড়ানো হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম প্রধান অগ্রাধিকার। আউশ ও আমন উৎপাদনে ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে ৯ লাখ টন চাল ও ৭ লাখ টন গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিই। এর আওতায় ইতোমধ্যে ৮ লাখ ৫০ হাজার টন চাল ও ২ লাখ টন গম আমদানি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমদানির তুলনায় রপ্তানিতে অধিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চলতি হিসাবের ভারসাম্যে ক্রমাগত উন্নতি সাধিত হচ্ছে। ২০২৫ সালের মার্চ মাসের শেষে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ০ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। তবে সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতি চলমান থাকায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর গতি কিছুটা শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে প্রকল্পগুলোর জন্য প্রতিশ্রুত বৈদেশিক ঋণ ছাড়ে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুন নাগাদ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর নিকট হতে আরও প্রায় ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা পাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বিগত সরকারের সময়ে আর্থিক খাতে নজিরবিহীন লুটপাট ও দুর্নীতির ফলে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পায়। বারবার পুনঃতফশিলিকরণের মাধ্যমে আর্থিক খাতের প্রকৃত অবস্থা গোপন রাখা হয়েছিল। কিন্তু আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী লোন লিজ ক্লাসিফিকেশন ও প্রভিশনিং ব্যবস্থা অবলম্বন করেছি। ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২০২৩ সালের জুন মাসের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ২০ দশমিক ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট ২০২৫ ২৬ সরক র দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই ট্রাক উল্টে বিস্ফোরণ
কুমিল্লা-সিলেট এবং ব্রাহ্মণবড়িয়া-ঢাকা মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার শহর বাইপাস সড়কের বিরাসার নামক স্থানে গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাক উল্টে-প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
বুধবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ট্রাকের প্রায় দুই শতাধিক সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনায় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। এ ঘটনায় শহর বাইপাস সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বোঝাই একটি ট্রাক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বর্ডার বাজারের দিকে আসছিল। বর্ডার বাজার পৌঁছার এক কিলোমিটার আগে বিরাসার গ্যাসফিল্ড এলাকায় বাইপাস সড়কের খানাখন্দে ভরা সড়কে সিলিন্ডারবাহী ট্রাকটি উল্টে যানজটে আটকে পড়া একটি প্রাইভেট কারের ওপর ছিটকে পড়ে। এক পর্যায়ে ট্রাক ও প্রাইভেট কারে আগুন ধরে যায়। পরে বিকট শব্দে একটার পর একটা সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হতে থাকে। এসময় আশপাশ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় বাইপাস সড়কে সবধরণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। এতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফায়ার সার্ভিস ও সরাইল ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় একঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ভোর ৪টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বিকল্প পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে যান চলাচল করে।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক মাহাবুব রহমান সাবিক বলেন, আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর থেকে সিএনজি নিয়ে লালপুরের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় বিরাসার মোড়ে একটি প্রাইভেট কার রাস্তার খাদে আটকে যায়। এ সময় প্রাইভেটকারের যাত্রীরা ধাক্কাধাক্কি করছিলেন। এর মধ্যে পেছন থেকে গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি একটি ট্রাক এসে প্রাইভেটকারের ওপর উল্টে গিয়ে পড়ে। পরে প্রাইভেট কারের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। পরে ট্রাকে থাকা সিলিন্ডার গুলোতে আগুন ধরতে শুর করে। পরে একে একে সিলিন্ডার গুলোতে বিস্ফোরণ শুরু হয়। পরে আমি দ্রুত ৯৯৯-এ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে জানাই। তিনি জানান, এ দুর্ঘটনা সড়কের খানাখন্দেকর কারণে ঘটেছে।
ঘটনাস্থলের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন জানান, বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে দেখি রাস্তায় আগুন। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই। রাস্তার নাজুক অবস্থার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক নিউটন দাস জানান, দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকারের ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্তের পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। পুলিশ শহরের ভেতর দিয়ে বিকল্পপথে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করে। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সড়কটিতে উদ্ধার কাজ চলছিল বলে তিনি জানান।