হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া সীমান্তে ২২ জনকে পুশইন করল বিএসএফ
Published: 3rd, June 2025 GMT
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে ২২ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ। মঙ্গলবার ভোর রাতে হালুয়াঘাটের সূর্যপুর সীমান্ত ও ধোবাউড়া উপজেলার মুন্সিপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশইন করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোর ৪টায় হালুয়াঘাটের গাজীরভিটা ইউনিয়নের সূর্যপুর বিওপির আওতায় সীমান্ত পিলার ১১২৮/৬ এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় ১০ জনকে আটক করা হয়। পরে তাদের হালুয়াঘাট থানায় নিয়ে আসা হয়।
আটকরা হলেন- নড়াইল জেলার কালিয়া থানার কৃষ্ণপুর এলাকার ইদ্রিস মোল্লার স্ত্রী পারভীন আক্তার (৫৫), তার মেয়ে মরিয়ম (১৭), মাগুড়া জেলার শালিকা থানার ছানড়া এলাকার মৃত জাহিদ মণ্ডলের স্ত্রী রিনা আক্তার (৪৩), তার মেয়ে মোছা.
অপর দিকে ধোবাউড়ার মুন্সিপাড়া এলাকা দিয়ে ১২ জনকে পুশইন করে বিএসএফ। তাদের সবাই ভারতের গুজরাট প্রদেশের শায়ন এলাকায় বসবাস করতেন। তাদের কেউ জেলে, কেউ রাজমিস্ত্রি এবং মুদি দোকান পরিচালনা করে আসছিলেন ২০-২৫ বছর ধরে।
ধোবাউড়া সীমান্ত দিয়ে আটকরা হলেন- নড়াইল জেলার কালিয়া থানার বুইঁবাগ এলাকার মৃত রুস্তম আলীর ছেলে মো. জসর আলী (৫০)। তিনি ভারতের গুজরাট প্রদেশে জেলের কাজ করতেন। এছাড়া একই জেলার কালিয়া থানার কালিয়া মির্জাপুর এলাকার শিমুলের ছেলে রুবেল শেখ। তিনি গুজরাটে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। একই এলাকার মৃত লুতফর রহমানের ছেলে আবদুল্লাহ (২১), একই এলাকার শিমুল মোল্লার মেয়ে হাসিনা বেগম (৪৬)। এছাড়াও খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার মোল্লা ডাঙ্গা এলাকার মৃত মানিক মোল্লার ছেলে মরফু মোল্লা (৭০) এবং তার স্ত্রী মারুফা বেগম (৪৬), তার ছেলে আব্দুর রহিম মোল্লা (২১), এনায়েত মোল্লা (১৭), রহমতুল্লাসহ (২৪) আবদুর রহমান (১৯) তাদের দুই নাতনী গনি মোল্লার মেয়ে সুমাইয়া (১৩) এবং আবদুল্লাহ (৮)। তারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করে আসছিলেন।
ধোবাউড়ার মুন্সিপাড়া বিপিওর নায়েব সুবেদার খাইরুল ইসলাম তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো জানান, আমরা রাতে তাদের আটক করি। এখন উপজেলা প্রশাসনের কাছে নেওয়া হচ্ছে। তারা যে নির্দেশনা দেবে সেভাবে কাজ করবো। আটকরা ভারতের গুজরাট প্রদেশের শায়ন গ্রামে কাজ করতেন। কারো কারো আধার কার্ড ভারতীয় পুলিশ রেখে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান হারুণ জানান, আমরা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। আসলে তারা প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় নাগরিক কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন সরকার বলেন, এই বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প শইন ব এসএফ এল ক র ম ত র রহম ন করত ন
এছাড়াও পড়ুন:
সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবার মায়ের মুখ দেখলেন দুই মেয়ে
সীমান্তের ওপারে ভারতে মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শেষবারের মতো প্রিয় মুখখানি দেখতে সেখানে ছুটে যেতে চান এপারে বসবাসকারী দুই মেয়ে। কিন্তু মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় দুই দেশের সীমান্ত, যা পাসপোর্ট–ভিসা ছাড়া পাড়ি দেওয়া যায় না।
তবে শেষ পর্যন্ত মায়ের লাশের কাছে পৌঁছাতে দুই মেয়ের ভিসা–পাসপোর্টের দরকার পড়েনি। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মানবিক উদ্যোগে সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখার সুযোগ মেলে তাঁদের।
আজ মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার জগন্নাথপুর সীমান্তচৌকির বিপরীতে ভারতের নদীয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা এলাকায় লোজিনা বেগমের (৮০) লাশ দেখার জন্য এই সুযোগ করে দেওয়া হয়। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) এমন উদ্যোগে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
আজ দুপুরে বিজিবির চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের (৬ বিজিবি) পরিচালক, অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হাসান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দামুড়হুদার জগন্নাথপুর সীমান্তচৌকির (বিওপি) দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্তের প্রধান খুঁটি ৯৬/৮–এসের বিপরীতে ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোংরা বিএসএফ ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা। সেখানে নদীয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা গ্রামে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিক ফকির চানের স্ত্রী লোজিনা বেগম শারীরিক অসুস্থতার কারণে গতকাল সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে মৃত্যুবরণ করেন। বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামে বসবাস করেন লোজিনা বেগমের দুই মেয়ে বরকতি বেগম (৪৫) ও কুলসুম বেগম (৪০)। মায়ের মৃত্যুর খবরে দিশাহারা হয়ে পড়েন তাঁরা।
বিজিবি আরও জানায়, ভারতীয় ভূখণ্ডে মৃত্যুবরণকারী মাকে শেষবারের মতো দেখতে দুই মেয়েসহ নিকটাত্মীয়রা বিজিবির জগন্নাথপুর সীমান্তচৌকির কমান্ডার নায়েক সুবেদার মো. আবুল হাসানকে অনুরোধ করেন। এমন অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিবি ও বিএসএফের সমন্বয়ে মানবতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সীমান্তের প্রধান খুঁটি ৯৬/৮–এসের কাছে শূন্যরেখায় আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে লাশ দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয়। মারা যাওয়া নারীর দুই মেয়েসহ দুই দেশের নাগরিক ও নিকটাত্মীয়দের উপস্থিতিতে সেখানে বেদনাবিধুর পরিবেশ তৈরি হয়।
বিজিবি–বিএসএফের পাহারায় সীমান্তের শূন্যরেখায় মায়ের লাশ দেখার সুযোগ পান দুই মেয়ে। আজ মঙ্গলবার সকালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর সীমান্তে