এ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া ক্লাব বিশ্বকাপে পেনাল্টি নেওয়ার সময় যদি পা পিছলে যায় হুলিয়ান আলভারেজের, আর তাতে যদি বলে দুবার পা লেগে যায়। তবে এবার তিনি নতুন করে আবার শট নেওয়ার সুযোগ পাবেন। কাল এমনটাই জানিয়েছে ফুটবলের নিয়ম প্রণয়নকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি)।

মঙ্গলবার সংস্থাটি ‘ডাবল টাচ’–সংক্রান্ত নিয়মে সংশোধনের কথা জানিয়ে জানিয়েছে, পেনাল্টি নিতে গিয়ে খেলোয়াড় যদি অসাবধানতাবশত বল দুবার স্পর্শ করেন এবং তা থেকে গোল হয়। তবে গোল বাতিল করে শট আবার নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে।

মার্চে চ্যাম্পিয়নস লিগে মাদ্রিদ ডার্বির টাইব্রেকারে এমনই এক ঘটনায় গোল করার পর শট বাতিল হয়ে যায় আলভারেজের। পা পিছলে গিয়ে বলের ওপর দুবার স্পর্শ লেগেছিল তাঁর, যা ধরতে ভুল করেনি ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)। নিয়ম অনুযায়ী গোল বাতিল করে দেওয়া হয় এবং রিয়াল মাদ্রিদ পরে জিতে যায় ৪-২ ব্যবধানে।

ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা তখন বলেছিল, ‘বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী রেফারিকে গোল বাতিল করতেই হতো।’ তবে তারা বিষয়টি নিয়ে ফিফা ও আইএফএবির সঙ্গে আলোচনায় বসবে বলেও জানিয়েছিল।

অবশেষে মঙ্গলবার আইএফএবি জানিয়েছে, নিয়মটি ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে। তবে ফিফা জানিয়েছে, চলতি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হওয়া ক্লাব বিশ্বকাপে এটি প্রযোজ্য হবে।

আইএফএবির সেক্রেটারি লুকাস ব্রুড এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যখন পেনাল্টি নিতে গিয়ে খেলোয়াড় অনিচ্ছাকৃতভাবে একসঙ্গে দুই পায়ে বা শট নেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই অন্য পায়ে বল লাগান, তখন অনেক সময় রেফারিরা গোল বাতিল করে দেন। অথচ নিয়মটি মূলত ইচ্ছাকৃত দ্বিতীয় ছোঁয়ার জন্য প্রযোজ্য।’

ব্রুড আরও যোগ করেন, এমন অনিচ্ছাকৃত ছোঁয়ায় গোলরক্ষক বিভ্রান্ত হতে পারেন, এ ধরনের ঘটনায় বল জালে গেলে তা পুনরায় নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
তবে যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বলে দ্বিতীয়বার পা ছুঁলেও গোল না হয়, তখন নিয়ম অনুযায়ী বিপক্ষ দলকে ইনডিরেক্ট ফ্রি–কিক দেওয়া হবে। আর টাইব্রেকারে এ ধরনের শট ব্যর্থ হলে তা ‘মিস’ হিসেবেই ধরা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল ব ত ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ