“অপচয় নয়, প্রয়োজনই অগ্রাধিকার” এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (এলজিআরডি) অধীন স্থানীয় সরকার বিভাগে শুরু হয়েছে ব্যয় সংকোচনের এক যুগান্তকারী প্রক্রিয়া। এর মধ্য দিয়ে ২০২৪–২৫ অর্থবছরেই ২০৮৯ কোটি টাকা সাশ্রয়ের নজির স্থাপন করেছে বিভাগটি।

স্থানীয় সরকার বিভাগের এই সাশ্রয় প্রক্রিয়ার পেছনে সরাসরি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা, যৌক্তিকতা ও জনস্বার্থ যাচাই করে এই ব্যয় হ্রাস নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বাতিলের পথে পাঁচ প্রকল্প

আরো পড়ুন:

৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত 

সংশোধনের অংশ হিসেবে পাঁচটি প্রকল্প বাতিলের চূড়ান্ত পর্যালোচনায় রয়েছে, যেগুলোর সম্মিলিত প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭৬ কোটি টাকা। প্রকল্পগুলো হলো:

১.

রাজনৈতিক প্রভাবে অনুমোদিত একটি পৌর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প

২. কম চাহিদাসম্পন্ন একটি আঞ্চলিক বাজার নির্মাণ প্রকল্প

৩. অপরিকল্পিত ও ব্যয়বহুল পানি শোধন প্রকল্প

৪. সমান্তরাল ও পরস্পরবিরোধী একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প

৫. পরিবেশবিরোধী বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্প

এসব প্রকল্প বাতিল হলে সাশ্রয় হওয়া অর্থ বাস্তব চাহিদা ও জনমুখী প্রকল্পে পুনঃবিনিয়োগ করা হবে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “উন্নয়ন মানেই প্রকল্প নয়। জনগণের প্রয়োজন ও টেকসই পরিকল্পনা ছাড়া কোনো প্রকল্পই অর্থবহ হয় না। এখন আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি প্রকল্পের মেরিট, কার্যকারিতা ও জনবান্ধব চরিত্রে। কোনো রাজনৈতিক বা ব্যক্তি স্বার্থে প্রকল্প আর টিকবে না।”

তিনি আরো জানান, বাজেট সংকটের মধ্যেও জনস্বার্থ নিশ্চিত করাই এখন অগ্রাধিকার। প্রকল্প গ্রহণে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী যাচাই প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।

প্রকল্প যাচাইয়ে নতুন রীতিনীতি

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, মাননীয় উপদেষ্টার নির্দেশে আমরা প্রকল্প যাচাইয়ের জন্য নতুন স্ক্রুটিনি মেকানিজম চালু করেছি। চলতি অর্থবছরে এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ২০৮৯ কোটি টাকা ব্যয় হ্রাস সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, এই উদ্যোগ এককালীন নয়। এখন থেকে প্রতিটি প্রকল্প অনুমোদনের আগে ক্ষেত্র জরিপ, বাস্তবতা যাচাই ও অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে।

পুনর্মূল্যায়নে অর্ধশতাধিক প্রকল্প

স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় থাকা ১৩০টির বেশি প্রকল্পের মধ্যে প্রায় ৭০টির পুনর্মূল্যায়ন প্রক্রিয়াধীন। অনেক প্রকল্প বাস্তবতার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় বাদ পড়ছে। আবার কিছু প্রকল্পে বাজেট কমিয়ে নতুন কাঠামোতে পুনর্গঠন করা হচ্ছে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, প্রকল্প প্রাক্কলন থেকে মাঠপর্যায়ের চাহিদা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এতে কেবল ব্যয় কমানোই নয়, প্রকল্পের মানও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী জানান, ভবিষ্যতে যাতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা ভুল তথ্য দিয়ে প্রকল্প অনুমোদনের সুযোগ না থাকে, সেজন্য প্রযুক্তিনির্ভর যাচাই পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। একই সঙ্গে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ক্ষমতায়ন করা হয়েছে যাতে তারা নিজ নিজ এলাকার প্রকল্প নিরীক্ষায় আরো কার্যকর হতে পারেন।

সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া বলেন, বাংলাদেশে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছতার অভাব ছিল। স্থানীয় সরকার বিভাগের এই উদ্যোগ প্রশাসনিক সংস্কারের এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মকর্তা মো. জালাল হোসেন বলেন, একটি প্রকল্প মানেই উন্নয়ন নয়—এই উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ এখন প্রকল্প মান, জনগণের অংশগ্রহণ এবং সাশ্রয়ের এক নতুন ধারায় প্রবেশ করেছে। উপদেষ্টার নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়া শুধু এলজিআরডি নয়, বরং সরকারের বাজেট ব্যবস্থাপনার প্রতিটি স্তরের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে।

ঢাকা/এএএম/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স থ ন য় সরক র ব ভ গ র ন প রকল প প রকল প র প রকল প ব প রক র য় ব যবস থ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

চলতি মাসে মুক্তি পাবে আলোচিত পাঁচ সিনেমা

সারা বছরজুড়েই মুক্তি পেয়ে থাকে ভারতের বিভিন্ন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সিনেমা। বিশেষ করে বলিউড ও দক্ষিণী সিনেমার জন্য অপেক্ষায় থাকেন দর্শকরা। জুন মাসে দক্ষিণী ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি ও বলিউডের বেশ কটি সিনেমা মুক্তি পাবে। এর মধ্যে আলোচিত কয়েকটি সিনেমা নিয়ে এই প্রতিবেদন—
   
হরি হারা বীরা মালু
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার ‘পাওয়ার স্টার’খ্যাত অভিনেতা পবন কল্যাণ। তাকে নিয়ে পরিচালক কৃষ নির্মাণ করেছেন ‘হরি হারা বীরা মালু’ সিনেমা। বেশ আগে সিনেমাটি মুক্তির কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। সব জটিলতা কাটিয়ে আগামী ১৩ জুন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির কথা রয়েছে। বীরা মালুর জীবনী নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। মোগল সাম্রাজ্যের পটভূমিতে সাজানো হয়েছে সিনেমাটি কাহিনি। এতে পবনের বিপরীতে ২৮ বছর বয়সি অভিনেত্রী নিধি আগরওয়াল জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। পবনের আলোচিত এ সিনেমার বাজেট ২০০ কোটি রুপি। 

কুবেরা
শেখর কামুলা নির্মিত তেলেগু সিনেমা ‘কুবেরা’। সিনেমাটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন— নাগার্জুনা আক্কিনেনি, ধানুশ, রাশমিকা মান্দানা। সামাজিক গল্পের সিনেমাটি আগামী ২০ জুন বিশ্বব্যাপী মুক্তির পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা। সিনেমাটির বাজেট ধরা হয়েছে ৮০-১২০ কোটি রুপি।  

সিতারে জমিন পার
আমির খান পরিচালিত ও অভিনীত আলোচিত সিনেমা ‘তারে জমিন পার’। ২০০৭ সালে এ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে তার অভিষেক ঘটে। মুক্তির পর সিনেমাটি বক্স অফিসে দারুণ সাড়া ফেলেছিল। এ সিনেমার সিক্যুয়েল নির্মিত হয়েছে। এর নাম রাখা হয়েছে— ‘সিতারে জমিন পার’। এর মাধ্যমে অভিনয়ে ফিরেছেন আমির। তার সহশিল্পী হিসেবে রয়েছেন জেনেলিয়া ডিসুজা। অভিনয়ের পাশাপাশি এটি প্রযোজনাও করছেন আমি। আগামী ২০ জুন সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে। এটি পরিচালনা করেছেন আর. এস. প্রসন্ন।  

আরো পড়ুন:

বিয়ে করলেন হিনা খান, ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াইটাও চলছে

‘লিচুর বাগান’ দেখে সাবিলাকে নিয়ে যা বললেন চয়নিকা চৌধুরী

জে. এস. কে.
সত্য ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রবীণ নারায়ণন নির্মাণ করেছেন ‘জে. এস. কে.’ সিনেমা। জোনাকী নামে এক নারীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে মালায়ালাম ভাষার এই সিনেমার কাহিনি। যে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করে। জোনাকী চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনুপমা পরমেশ্বর। এতে সুরেশ গোপী একজন আইনজীবীর চরিত্র রূপায়ন করেছেন। আদালতে বিচারকার্য শুরু হওয়ার পর সত্য সামনে আসতে থাকে। আগামী ২০ জুন মুক্তি পাবে সিনেমাটি।
 
কান্নাপ্পা
বিষ্ণু মঞ্চুকে নিয়ে মুকেশ কুমার সিং নির্মাণ করেছেন ‘কান্নাপ্পা’ সিনেমা। তেলেগু ভাষার এ সিনেমায় ক্যামিও চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোহন বাবু, প্রভাসের মতো তারকারা। ভগবান শিবের কিংবদন্তি ভক্ত কান্নাপ্পার উপর ভিত্তি করে এগিয়েছে কাহিনি। বিগ-বাজেটের আধ্যাত্মিক ঘরানার সিনেমাটি ২৭ জুন মুক্তি পাবে। ভিএফএক্স, বৃহৎ পরিসরে সেট এবং পৌরাণিক থিমসহ নানা কারণে সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশা অনেক। সিনেমাটির বাজেট ধরা হয়েছে ২০০ কোটি রুপি। 

তথ্যসূত্র: সিয়াসাত ডটকম, পিঙ্কভিলা

ঢাকা/শান্ত/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ