বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাড়াতে গেলে খরচও বেড়ে যাবে
Published: 5th, June 2025 GMT
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে নতুন করে বিনিয়োগ বা ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী হওয়ার মতো পদক্ষেপ তুলনামূলক কম; বরং নতুন করে বিনিয়োগ বা ব্যবসা বাড়াতে গেলে খরচ বাড়বে। এ ছাড়া গত কয়েক দশকে আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে স্থানীয়ভাবে যেসব শিল্প গড়ে উঠেছে, সেগুলোর সুরক্ষায় সমন্বিত কোনো উদ্যোগ নেই। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু খাতে কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে; কিন্তু সামগ্রিকভাবে স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি; বরং স্থানীয় শিল্প কোথাও কোথাও আমদানি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পড়বে।
গত দু-তিন বছরের ব্যবধানে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ফলে স্থানীয় শিল্পের কাঁচামালের আমদানি খরচও ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে; কিন্তু সেই তুলনায় পণ্যের দাম বাড়েনি। এ কারণে বেশির ভাগ স্থানীয় শিল্পের মুনাফা কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দরকার ছিল স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু বাজেটে তার বাস্তব কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি; বরং কিছু ক্ষেত্রে আমরা বিপরীতমুখী পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি। নারীদের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে সরকার বাজেটে স্যানিটারি ন্যাপকিন বাজারজাতের ক্ষেত্রে পরিবেশক পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দিয়েছে। স্যানিটারি ন্যাপকিনের মূল্য নির্ধারণপ্রক্রিয়ায় যার প্রভাব ১ থেকে ২ শতাংশ। অন্যদিকে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির প্রধান কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে উৎপাদন পর্যায়ে ১০ শতাংশ খরচ বেড়ে যাবে। বাড়তি খরচের এই চাপ প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে পণ্যের দাম কিছুটা হলেও বাড়বে। একদিকে পরিবেশক পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম কমানোর চেষ্টা দেখছি; অন্যদিকে কাঁচামাল আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তাতে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে ভ্যাট অব্যাহতির সুফল পাওয়া যাবে না।
এ ছাড়া এবারের বাজেটে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আগ্রহ-উদ্দীপক কার্যকর কোনো ব্যবস্থা দেখতে পাইনি। আমদানি বিকল্প হিসেবে দেশে গত কয়েক দশকে বেশ কিছু টয়লেট্রিজ ও কসমেটিক পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পের ৮০ ভাগ কাঁচামালই আমদানিনির্ভর। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক বছর ধরে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান চাপে রয়েছে। তাই ডলারের উচ্চ মূল্যের এ সময়ে এসব কারখানার জন্য বিশেষ সুরক্ষার দরকার ছিল।
এ ছাড়া এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ খাতের বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ দেখছি। এসব পদক্ষেপের কারণে কিছু নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়তে পারে। সেটি হলে নতুন করে কেউ কারখানা স্থাপন বা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলে তাতে নির্মাণের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে এই পদক্ষেপও ব্যবসা সম্প্রসারণ বা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে।
— মালিক মোহাম্মদ সাঈদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্কয়ার টয়লেট্রিজ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পদক ষ প স রক ষ ব যবস আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিনিয়োগ ও ব্যবসা বাড়াতে গেলে খরচও বেড়ে যাবে
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তাতে নতুন করে বিনিয়োগ বা ব্যবসা সম্প্রসারণে আগ্রহী হওয়ার মতো পদক্ষেপ তুলনামূলক কম; বরং নতুন করে বিনিয়োগ বা ব্যবসা বাড়াতে গেলে খরচ বাড়বে। এ ছাড়া গত কয়েক দশকে আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে স্থানীয়ভাবে যেসব শিল্প গড়ে উঠেছে, সেগুলোর সুরক্ষায় সমন্বিত কোনো উদ্যোগ নেই। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু খাতে কিছু সুবিধা দেওয়া হয়েছে; কিন্তু সামগ্রিকভাবে স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত হয়নি; বরং স্থানীয় শিল্প কোথাও কোথাও আমদানি পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পড়বে।
গত দু-তিন বছরের ব্যবধানে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ফলে স্থানীয় শিল্পের কাঁচামালের আমদানি খরচও ৫০ শতাংশ বেড়ে গেছে; কিন্তু সেই তুলনায় পণ্যের দাম বাড়েনি। এ কারণে বেশির ভাগ স্থানীয় শিল্পের মুনাফা কমে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে দরকার ছিল স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা। কিন্তু বাজেটে তার বাস্তব কোনো প্রতিফলন দেখা যায়নি; বরং কিছু ক্ষেত্রে আমরা বিপরীতমুখী পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি। নারীদের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে সরকার বাজেটে স্যানিটারি ন্যাপকিন বাজারজাতের ক্ষেত্রে পরিবেশক পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দিয়েছে। স্যানিটারি ন্যাপকিনের মূল্য নির্ধারণপ্রক্রিয়ায় যার প্রভাব ১ থেকে ২ শতাংশ। অন্যদিকে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির প্রধান কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে উৎপাদন পর্যায়ে ১০ শতাংশ খরচ বেড়ে যাবে। বাড়তি খরচের এই চাপ প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। ফলে পণ্যের দাম কিছুটা হলেও বাড়বে। একদিকে পরিবেশক পর্যায়ে ভ্যাট অব্যাহতির সুবিধা দিয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম কমানোর চেষ্টা দেখছি; অন্যদিকে কাঁচামাল আমদানির শুল্ক ১০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তাতে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হলেও সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে ভ্যাট অব্যাহতির সুফল পাওয়া যাবে না।
এ ছাড়া এবারের বাজেটে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য আগ্রহ-উদ্দীপক কার্যকর কোনো ব্যবস্থা দেখতে পাইনি। আমদানি বিকল্প হিসেবে দেশে গত কয়েক দশকে বেশ কিছু টয়লেট্রিজ ও কসমেটিক পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প গড়ে উঠেছে। এসব শিল্পের ৮০ ভাগ কাঁচামালই আমদানিনির্ভর। ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক বছর ধরে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান চাপে রয়েছে। তাই ডলারের উচ্চ মূল্যের এ সময়ে এসব কারখানার জন্য বিশেষ সুরক্ষার দরকার ছিল।
এ ছাড়া এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ খাতের বেশ কিছু পণ্যের শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপ দেখছি। এসব পদক্ষেপের কারণে কিছু নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়তে পারে। সেটি হলে নতুন করে কেউ কারখানা স্থাপন বা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিলে তাতে নির্মাণের খরচ বেড়ে যাবে। ফলে এই পদক্ষেপও ব্যবসা সম্প্রসারণ বা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করবে।
— মালিক মোহাম্মদ সাঈদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, স্কয়ার টয়লেট্রিজ।