অপেক্ষারও একদিন শেষ হয়, মুখে ফোটে সোনালি হাসি
Published: 5th, June 2025 GMT
অপেক্ষারও একদিন শেষ হয়।
পথ যতই দীর্ঘ হোক, যতটা নীরব হোক প্রহর, এক সময় ঠিকই আসে সেই মুহূর্ত—যখন ক্লান্ত চোখের সামনে সত্যি দাঁড়ায় বহুদিনের দেখা স্বপ্ন।
যে স্বপ্ন, যে গল্পগুলো বারবার থেমে গিয়েছিল মাঝপথে, প্রান্তে, প্রায় শেষে—মুখ থুবড়ে পড়েছিল সম্ভাবনার নিষ্ফল প্রতীক্ষা নিয়ে; সেই গল্পগুলোই এবার জেগে উঠেছে, লিখেছে নতুন ইতি। জয়ের শেষবিন্দু ছুঁয়ে বলেছে, ‘আমরাও পারি। আমরাও এখন ইতিহাস।’
ফুটবল থেকে ক্রিকেট—ইংল্যান্ড, বেলজিয়াম থেকে শুরু করে অস্ট্রেলিয়া, ভারত—এই মৌসুমে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ট্রফি জয়ের আরাধ্যের মুহূর্তের দেখা পেয়েছে সেই সব দল, যারা তৃষ্ণার্ত হয়ে ছিল দিনের পর দিন, বছরের পর বছর। যা আবার কারও জন্য ছিল কখনোই না পাওয়ার দুঃখ। যাদের কণ্ঠস্বরে ছিল কেবল আক্ষেপ আর হাহাকারের শব্দ, তাদের গলায় এবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে বিজয়ের জয়গান। ২০২৫ হয়ে উঠেছে সেই বছর, যখন না পাওয়ারা পেয়েছে, অপেক্ষারা ছুঁয়েছে পূরণের শিখর। আর অসমাপ্ত গল্পগুলো শেষ হয়েছে এক সোনালি পরিসমাপ্তিতে।
এমন পূর্ণতার অনুভূতি কী, বিরাট কোহলিকেই জিজ্ঞেস করে দেখুন। ক্রিকেট দুনিয়ার সবচেয়ে বড় তারকা। ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি—আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রায় সব জিতেছেন। কিন্তু আইপিএল ট্রফি ছিল না। ছিল না আসলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুরই।
২০০৮ সালে আইপিএল শুরুর প্রথম দিন থেকেই একসঙ্গে পথচলা বেঙ্গালুরু ও কোহলির। ১৭ বছরের দীর্ঘ পথচলায় তিনবার ফাইনালে উঠলেও ট্রফি অধরাই ছিল। অথচ বছর চারেক আগে আইপিএলে নাম লেখানো দলেরও ট্রফি আছে।
দেড় যুগে প্রথমবার আইপিএল ট্রফি জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিহারের ভোটার তালিকা নিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট: ‘মৃত’ নন জীবিত এমন ১৫ জনকে হাজির করলে ব্যবস্থা
বিহারে খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ চিহ্নিত ১৫ জন জীবিতকে হাজির করাতে পারলে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবেন। বিহারের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে মামলাকারীদের আইনজীবীদের এ আশ্বাস দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সূর্য কান্ত ও জয়মাল্য বাগচী এ আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে তাদের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া দেওয়া হলে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আবেদনকারীদের উদ্দেশে দুই বিচারপতি বলেছেন, প্রক্রিয়ায় অনিয়ম বা ত্রুটি পাওয়া গেলে অবশ্যই তাঁরা ব্যবস্থা নেবেন।
মামলাকারীদের আবেদন মেনে সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য খসড়া ভোটার তালিকা পেশ করার ওপর স্থগিতাদেশ দেননি। তবে ইসিকে তাঁরা বলেছেন, তাদের কাজ গণহারে ভোটার বাদ দেওয়া নয়। তাদের দেখা উচিত যাতে গণহারে ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা যায়।
এসআইআর–প্রক্রিয়া অনুযায়ী ভোটার তালিকা সংশোধনের পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হবে ১ আগস্ট। সে লক্ষ্যেই ইসি এগিয়ে চলেছে। ইসি সূত্রে খবর, নিবিড় সংশোধনপ্রক্রিয়ার পর প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে ৬৫ লাখেরও বেশি নাম খসড়া তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছে। তাঁদের মধ্যে অন্তত ২২ জন ‘মৃত’, ৩৬ লাখ ‘নিখোঁজ’। এ ছাড়া বেশ কয়েক লাখ ভোটারের নাম বিভিন্ন এলাকার তালিকায় রয়েছে। অর্থাৎ একই ভোটার অন্তত দুই জায়গায় নথিভুক্ত। আগের তালিকা অনুযায়ী বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা ৭ কোটি ৮৯ লাখ। ইসির দাবি, এই তালিকায় বহু ভোটার ভুয়া। তাদের বাদ দিতেই এই নিবিড় সংশোধন।
যে প্রক্রিয়ায় এই খসড়া তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, মামলাকারীদের আপত্তি তা নিয়েই। তাঁদের অভিযোগ, ইসি যেভাবে নাগরিকত্বের যাচাই করছে, সে জন্য যেসব নথি পেশ করতে বলা হচ্ছে, তা বহু ক্ষেত্রে সম্ভবপর নয়। তেমন করা তাদের কাজও নয়। সেই কাজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে বহু দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকার ইসি কেড়ে নিচ্ছে।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার শুনানি হয়। মঙ্গলবারের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে আশ্বস্ত করে বিচারপতিরা বলেন, কমিশনের ত্রুটি–বিচ্যুতি দেখলে তাঁরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেবেন। ভোটার প্রমাণে আধার কার্ড ও ভোটার কার্ডকে নথি হিসেবে গ্রাহ্য করার সুপারিশ বিচারপতিরা জোরের সঙ্গে করেছেন। এই দুই নথি জাল করা সহজ বলে ইসির দাবি নস্যাৎ করে বিচারপতিরা বলেছেন, যে ১১টি নথির ওপর নির্ভর করে তারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, সেগুলোর প্রতিটিই জাল করা সম্ভব। কপিল সিব্বাল ও প্রশান্ত ভূষণকে বিচারপতিরা বলেন, খসড়া ভোটার তালিকায় ‘মৃত’ অথচ আসলে জীবিত, এমন ১৫ জনকে আপনারা হাজির করুন। আমরা ব্যবস্থা নেব।
আগামী ১২ ও ১৩ আগস্ট এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগে ৮ আগস্টের মধ্যে মামলাকারীদের বক্তব্য লিখিতভাবে আদালতে পেশ করতে হবে।