ঈদুল আজহার দিন শনিবারই (৭ জুন) ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সিটি কর্তৃপক্ষ। শনিবার (৭ জুন) রাতে ঢাকা উত্তর নগর ভবনে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। 

বিএনসিসির প্রশাসক বলেন, “নগরবাসীর সহযোগিতা এবং আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টায় মাত্র সাড়ে আট ঘণ্টায় ঈদের দিনের সমস্ত বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে।” 

এ কাজে ১০ হাজারেরও বেশি পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিয়োজিত ছিল বলে জানান তিনি।

আরো পড়ুন:

কোরবানির ৮৫ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ হয়েছে: ডিএনসিসি প্রশাসক

টানা ৫ দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস

প্রশাসক জানান, ঈদের দিনে প্রায় ৯ হাজার ২০০ টন কোরবানির বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৮০০ টনের বেশি বর্জ্য রাতের মধ্যে ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করা হয়। মোট অপসারিত বর্জ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ হাজার ৫০০ টন।

ঈদের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ বর্জ্য অপসারণ এবং রাত ১২টার আগেই বাকি কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানান প্রশাসক। তিনি বলেন, “আমরা ধারণা করছি, পুরো কোরবানির সময়ে ডিএনসিসি এলাকায় প্রায় ২০ হাজার টন বর্জ্য তৈরি হবে। সেই অনুযায়ী আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছি, পর্যাপ্ত জনবল, যানবাহন ও সরঞ্জাম রেখেছি।”

ডিএনসিসির পক্ষ থেকে সরবরাহকৃত পলিব্যাগ ব্যবহারে নগরবাসী বেশ সহযোগিতা করেছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নাগরিকরা নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য রাখায় আমাদের কর্মীদের কাজ অনেক সহজ হয়েছে। সবাই এমনভাবে সহযোগিতা করলে আগামী বছরগুলোতে আরো দ্রুত বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হবে।”

তিনি আরো জানান, রবিবার (৮ জুন) সকাল থেকে সড়ক ও নালা-নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে, যাতে দ্রুতই নগরী পুরোপুরি পরিচ্ছন্ন হয়ে ওঠে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলমসহ কর্পোরেশনের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। 

ঢাকা/এএএম/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এনস স র প ঈদ র দ ন ক রব ন র ড এনস স

এছাড়াও পড়ুন:

পাবনা-ঢাকা রুটে আবারও বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা

রাবেয়া বেগম আজ রোববার সকাল নয়টার দিকে ঢাকা থেকে পাবনার বেড়াগামী আলহামরা পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন। গন্তব্যের ২০ কিলোমিটার আগে পৌঁছার পর জানতে পারেন, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর হয়ে পাবনার বাস যেতে পারবে না। শাহজাদপুর বাসস্ট্যান্ডের অনেক আগে তালগাছি এলাকায় সব যাত্রীকে নামিয়ে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় তাঁকে বেড়ায় পৌঁছাতে হয়।

পাবনা ও শাহজাদপুরের অনেক যাত্রীকে আজ রোববার দিনভর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এই দুর্ভোগের কারণ, পাবনা ও শাহজাদপুর বাসমালিকদের পুরোনো দ্বন্দ্ব। আজ সকাল থেকে দুই এলাকার বাস চলাচল আবারও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। পাবনা থেকে শাহজাদপুর হয়ে ঢাকা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, জামালপুরসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যে কোনো বাস চলাচল করছে না। একইভাবে শাহজাদপুর থেকেও পাবনার দিকে কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না।

বাসমালিক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের কারণে চলতি বছরেই অন্তত চারবার বাস চলাচল বন্ধ ছিল। আর গত সাত-আট বছরে বাস চলাচল বন্ধ ছিল অন্তত ৩০ বার। একবার বাস চলাচল বন্ধ হলে তা চালু হতে সময় লেগেছে পাঁচ দিন থেকে তিন সপ্তাহ পর্যন্ত।

বাসমালিক ও শ্রমিকদের সূত্রে জানা যায়, শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতি ও পাবনার নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রুট ও সময়সূচি নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে। পাঁচ-ছয় দিন আগে নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির লোকজন শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতির মালিকানাধীন নবীনবরণ পরিবহন নামের একটি বাস আটকায়। এর প্রতিবাদে শাহজাদপুরের বাসমালিকেরা নগরবাড়ী সমিতির মালিকানাধীন বাসগুলো চলাচলে বাধা দেন। ঘটনার জেরে গতকাল শনিবার পাবনার দাশুড়িয়ায় নবীনবরণ পরিবহনের একটি বাস আটকে রাখে পাবনা বাসমালিক সমিতি। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় আজ সকালে শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতি শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে পাবনার সব বাসের চলাচল বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে পাবনার সড়ক দিয়েও শাহজাদপুরের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পাবনা ও শাহজাদপুর উভয় সমিতির দুই শতাধিক বাস আজ সকাল থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবহনশ্রমিকেরাও।

এদিকে পাবনা থেকে বেড়া হয়ে ঢাকাগামী বেশির ভাগ পরিবহনের কাউন্টার বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। দু–একটি বাসের কাউন্টার খোলা থাকলেও সেসব বাস বেড়া থেকে যাত্রী নিয়ে কাজীরহাট ফেরিঘাট হয়ে অথবা নাটোরের বনপাড়া হয়ে প্রায় ১০০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে ঢাকা যাচ্ছে।

পাবনা এক্সপ্রেস পরিবহনের বেড়া কাউন্টারের ব্যবস্থাপক মঞ্জুরুল হাসান বলেন, ‘শাহজাদপুর হয়ে পাবনার কোনো বাস যেতে না পারায় আমাদের বাসগুলো হয় ফেরি হয়ে, না হয় নাটোরের বনপাড়া ঘুরে ঢাকা যাচ্ছে।’

শাহজাদপুর মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পাবনা ও নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতি আমাদের বাস চলাচলে বাধা দেওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রীদের যেমন দুর্ভোগ হচ্ছে, তেমনি উভয় মালিক সমিতিরই ক্ষতি হচ্ছে। দুই পক্ষ আলোচনায় বসলে আশা করি সমাধানের পথ পাওয়া যাবে।’

পাবনা বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোমিন মোল্লা বলেন, ‘শাহজাদপুর বাসমালিক সমিতির লোকজন প্রায় এক মাস ধরে নগরবাড়ী বাসমালিক সমিতির বাসগুলো শাহজাদপুরের ওপর দিয়ে যেতে দিচ্ছিল না। আজ থেকে তারা পাবনার সব বাসের চলাচল বন্ধ করে দিল। শাহজাদপুর মালিক সমিতি ছোটখাট যেকোনো ব্যাপার হলেই তাদের এলাকার ওপর দিয়ে পাবনার বাস চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছে। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পাবনা-ঢাকা রুটে আবারও বাস চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা