দেড় বছরের মেয়েকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগে মা আটক
Published: 8th, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক মায়ের বিরুদ্ধে দেড় বছরের মেয়েকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে ভৈরব পৌর শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুর নাম নুসরাত। অভিযুক্ত আয়েশা আক্তার শিশুটির মা। গতকাল রাতেই তাঁকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার বাসিন্দা আয়েশা প্রেম করে ২০১৯ সালে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার উমর ফারুককে বিয়ে করেন। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও মেয়ে (নুসরাত) আছে। ২ বছর আগে এই দম্পতি ঢাকা ছেড়ে ভৈরবে যান। সেখানে একটি জুতার কারখানায় কাজ নেন ফারুক। ওই কারখানায় কাজ করতেন আলমগীর নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি। একই কারখানায় কাজের সুবাদে আলমগীরের সঙ্গে ফারুকের বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সূত্র ধরে আয়েশার সঙ্গেও আলমগীরের পরিচয় হয়। একপর্যায়ে বিবাহ–বহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান আয়েশা ও আলমগীর। আলমগীরেরও স্ত্রী-সন্তান আছে। বিষয়টি জানার পর স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি বেলাবতে ফিরে যান ফারুক। তবে আয়েশা দেড় মাস আগে মেয়ে নুসরাতকে নিয়ে আলমগীরের কাছে যান। সেখানে তাঁরা স্বামী-স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ভৈরব পৌর শহরের লক্ষ্মীপুরে এক কক্ষের বাসায় বসবাস শুরু করেন। ঈদের আগের দিন আয়েশাকে সেখানে রেখে আলমগীর নিজের এলাকা কালিকাপ্রসাদ গ্রামে স্ত্রী-সন্তানের কাছে ফিরে যান।
ঈদের দিন গতকাল রাত ৯টার দিকে এক প্রতিবেশী আয়েশার ঘরে গিয়ে দেখতে পান, শিশু নুসরাতের মরদেহ পড়ে আছে। পাশে বসে আছেন আয়েশা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আয়েশাকে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আয়েশা শিশুসন্তানকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী। তিনি বলেন, ‘আমরা আয়েশার সঙ্গে কথা বলেছি। সন্তান হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। টাকা না থাকায় সন্তানের ঠিকমতো লালন-পালন করতে পারছিলেন না। ছেলেসন্তানটি নিজের কাছে নেই। আবার স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে থাকলেও আলমগীর তখনো আয়েশাকে বিয়ে করেননি। সব মিলিয়ে আয়েশা চাপে ছিলেন।’
খন্দকার ফুয়াদ রুহানী আরও বলেন, মরদেহে গলায় আঁচড় আছে। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় উমর ফারুকের বাবা ও আয়েশার শ্বশুর আবুল কালাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ময়নাতদন্তের জন্য নুসরাতের মরদেহটি কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আলমগ র র হত য র আয় শ র
এছাড়াও পড়ুন:
হাতিয়ায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার তমরদ্দি ইউনিয়নের বেঁকের বাজার রাস্তায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন মোহাম্মদ এরশাদ, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ ইউসুফ, মো.জুয়েল, মোহাম্মদ রুবেল, মোহাম্মদ ছালেহ উদ্দিন, মোহাম্মদ রিটন, মোহাম্মদ রাফুৃল, মো. রাসেল, মো. মেহরাজ উদ্দিন ও আলাউদ্দিন জাহের।
আহতদের হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত আলাউদ্দিন জাহেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, তমরদ্দি লঞ্চঘাট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে ওয়ার্ড থেকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার জন্য বলীর পুলের রাস্তার মাথায় ভিড় করছিলেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর গ্রুপের কর্মীরা। সেখানে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর গ্রুপের সমর্থকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে উভয়পক্ষের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
এতে তানভীর গ্রুপের ৪ জন আহত হলে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও সংঘর্ষে আলমগীর গ্রুপের ৬ জন আহত হন। তাদেরও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতা আলমগীর।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন, অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রাস্তার মাথায় সবাই জড়ো হলে সেখানে ফকিরা চোরা, সাজ্জাদ, বাবুল, তারেক, জাহেদ, খালেক, রিপন, মজনু, খোকন ও সুমনের নেতৃত্বে আমার কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়।
তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দার বলেন, তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কর্মী সমর্থকদের আসার পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে কর্মীরা প্রতিবাদ করলে তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়। এতে আমার ৪ কর্মী আহত হন।
এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, আমি অনুষ্ঠানস্থলে এবং পুলিশ টহলে আছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।