‘মা’ বলে ডাকলে রশনি বলে উঠত, ‘মা, আমি তো এখানেই’
Published: 9th, June 2025 GMT
আর দশটা দিনের মতোই স্কুলের ব্যাগ কাঁধে দিদার হাত ধরে বেরিয়েছিল রোশনি পাল। ছোট্ট মনে হয়তো তখন নতুন কিছু শেখার আগ্রহ ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে খেলার আনন্দ জেগেছিল। কে জানত, যে রাজপথ দিয়ে রোশনি প্রতিদিন স্কুলে যেত, সেই পথই তার শেষ ঠিকানা হয়ে উঠবে!
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী মা চৈতি রানী পাল বলেন, ২৫ মে ছিল শনিবার। সেদিন তাঁর সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। মেয়েকে নিয়ে সারা দিন বাসায় ছিলেন। সেদিন রাতে মেয়েকে তিনি গল্প শুনিয়েছিলেন। মেয়ে গল্প শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়েছিল।
পরদিন (২৬ মে) মেয়ের স্কুল ছিল। মা সেদিন ঘুম থেকে মেয়েকে উঠিয়ে দেন। খাওয়াদাওয়ার পর দিদা (নানি) রেখা বিশ্বাস সকাল সাতটার দিকে রোশনিকে নিয়ে মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উদ্দেশে বের হন। এই স্কুলে রোশনি পড়ত প্রথম শ্রেণিতে।
মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু সালেহ শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন স্কুল থেকে বেরিয়ে রশনি তার দিদার হাত ধরে কমলাপুরের দিকে হেঁটে হেঁটে যাচ্ছিল। হঠাৎ বিআরটিসির দ্বিতল একটি বাস রশনিকে ধাক্কা দেয়। তখন রশনি রাস্তায় ছিটকে পড়ে। পরে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। চালক শাজাহানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন কারাগারে।
ময়নাতদন্ত শেষে রশনিকে নিয়ে যাওয়া হয় নরসিংদীতে। পারিবারিক শ্মশানে তার সৎকার হয়।
মা চৈতি রানী পাল বললেন, ‘যখন আমি ঢাকা মেডিকেলে আমার মেয়ের মৃত মুখ দেখতে পাই, তখন আমার মনে হচ্ছিল, আমার মা রশনি ঘুমিয়ে আছে। অনেকবার আমি রশনি মা, রশনি মা বলে চিৎকার করি।.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাইভেটকারে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে আরোহীর মৃত্যু
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় দাঁড়িয়ে থাকা প্রাইভেটকারে ধাক্কা দেয় মোটরসাইকেল। এসময় মোটরসাইকেল আরোহী গাড়ির ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে মারা যান। সোমবার বেলা ১২টার দিকে পাবনা-কুষ্টিয়া হাইরোডের বারোমাইল এলাকার মিজান ফিলিং স্টেশনের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হাইওয়ে পুলিশের এসআই জয়দেব বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম আসগর মালিথা (৬৫)। তিনি উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীরা জানায়, আসগর মালিথা তার নাতজামাই সোহাগের সঙ্গে মোটরসাইকেল যোগে নয়মাইল থেকে বারমাইলের দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে পাবনা থেকে কুষ্টিয়া গামী একটি প্রাইভেটকার বারমাইলের মিজান ফিলিং স্টেশনে তেল নিতে দাঁড়িয়ে থাকা। এসময় মোটরসাইকেলটি সজোরে প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দেয়। এতে পেছনে থাকা আরোহী প্রাইভেটকারের ওপর দিয়ে উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। আর মোটরসাইকেল চালক সোহাগ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের চন্ডিপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আজমল হোসেন জানান, দুর্ঘটনায় নিহত আসগর আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা। দিনমজুর আসগরের পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার জন্য অনুরোধ করেছি।
হাইওয়ে পুলিশের এসআই জয়দেব বিশ্বাস বলেন, পাবনা-কুষ্টিয়া হাইওয়ের মিজান ফিলিং স্টেশনের সামনে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে আসগর নামে একজন মারা গেছেন। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশের সুরতহাল করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (চলতি দায়িত্ব) রাকিবুল ইসলাম বলেন, ভেড়ামারার বারোমাইলে মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের সংঘর্ষে আসগর মালিথা মারা গেছেন। বিষয়টি হাইওয়ে পুলিশ দেখছে।