খেতের শসা চুরি নিয়ে হাতাহাতি, পরদিন ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ
Published: 10th, June 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে খেতের শসা চুরির ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে টানা চার ঘণ্টা উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের সরকারবাড়ি ও বড়বাড়ির বংশের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
এ সময় একাধিক বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত ৭ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দিন আগে শ্রীঘর গ্রামের সরকারবাড়ির জুয়েল মিয়ার খেতের শসা চুরি করে করে বড়বাড়ির মীর হৃদয় মিয়া নামের এক যুবক। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে গতকাল সোমবার রাতে গ্রামের বাজারে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে আজ ভোরে পরস্পরের মুখোমুখি হওয়ার ঘোষণা দেন।
এর জের ধরে আজ ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে গ্রামের জমিতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলে টানা চার ঘণ্টা। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নারী-পুরিুষ আহত হন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করে।
আহতদের মধ্যে দুলাল মিয়া (৩০), জালাল উদ্দিন (৪৫), শাহ আলম (৪০), রাব্বি মিয়া (১২), আমির আলী (৪০), সাহার আলী (১৮) ও মাসুক মিয়াকে (৪৫) জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা হবিগঞ্জের মাধবপুর ও নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাইড়য়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) তপন সরকার প্রথম আলোকে বলেন আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। বর্তমানে গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচারিত ডকুমেন্টরিতে ফুটেজ না থাকায় এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হট্টগোল করা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে এ হট্টগোল করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দিল জাবি
জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে ওই ছাত্রদল নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, “এই ডকুমেন্টরিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলন মাঠে ছিলাম, জেল-জুলুম, মামলা আমরাও খেয়েছি।”
এ সময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিমকেও হট্টগোল করতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের জন্য তাদের দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট ও সময় না পাওয়ায় তাদের পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টরি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তবে এ ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।
তারা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের পূর্বে তারা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পাঠানো ও সাংবাদিকদের থেকে সংগৃহীত ছবি ও ফুটেজ দিয়ে ডকুমেন্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি দাবি করেছেন তার ছবি বা ফুটেজ দেয়া হয়নি, তার ছবি বা ফুটেজ তাদের কাছে কেউ দেয়নি। এজন্য তারা ডকুমেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি?
এ নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজ যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪ এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে। ঠিক একইসঙ্গে প্রতিবাদের যে ভাষা, সেখানেও শিক্ষিত হবার প্রয়োজন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসা ও পূজার পার্থক্য শিখবে ও বুঝবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী