ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে খেতের শসা চুরির ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ছয়টা থেকে টানা চার ঘণ্টা উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের সরকারবাড়ি ও বড়বাড়ির বংশের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

এ সময় একাধিক বসতবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত ৭ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই দিন আগে শ্রীঘর গ্রামের সরকারবাড়ির জুয়েল মিয়ার খেতের শসা চুরি করে করে বড়বাড়ির মীর হৃদয় মিয়া নামের এক যুবক। এ নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে গতকাল সোমবার রাতে গ্রামের বাজারে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। পরে উভয় পক্ষের লোকজন নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে আজ ভোরে পরস্পরের মুখোমুখি হওয়ার ঘোষণা দেন।

এর জের ধরে আজ ভোর সাড়ে ছয়টার দিকে উভয় পক্ষের লোকজন দা, বল্লম, লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেল নিয়ে গ্রামের জমিতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলে টানা চার ঘণ্টা। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নারী-পুরিুষ আহত হন। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করে।

আহতদের মধ্যে দুলাল মিয়া (৩০), জালাল উদ্দিন (৪৫), শাহ আলম (৪০), রাব্বি মিয়া (১২), আমির আলী (৪০), সাহার আলী (১৮) ও মাসুক মিয়াকে (৪৫) জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা হবিগঞ্জের মাধবপুর ও নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাইড়য়ার সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) তপন সরকার প্রথম আলোকে বলেন আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত কোনো অভিযোগ দেয়নি। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তারও করা হয়নি। বর্তমানে গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ল কজন স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই ‘জলদস্যু’ আটক

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ’জলদস্যুকে’ আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে ৯টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকুলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এসময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা।

এর আগে সোমবার রাত আটটার দিকে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগিসহ এসব জলদস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটকরা হলেন- শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে দিদারুল ইসলাম।

আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত পাঁচ/সাত জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে যায়। এসময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা মাইক্রো বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলের জন্য কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে নাম-পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে ধরে পুলিশকে খবর দেয়। পরবর্তীতে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।

এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশি তৎপর না। বরং নজীর, তার ভাই নবাব ও ছেলে আব্দুর রহিম এবং মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার আছাদুলসহ কয়েকজনকে নিয়ে জোনাবের নামে সুন্দরবনে দস্যুতায় লিপ্ত। সোমবার রাতে নজীর আলীকে আটকের পরপরই তার ছেলে আব্দুর রহিম ও ভাই নবাব ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের উপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। বনবিভাগের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে যেয়ে মাছ শিকারের পাশাপাশি তারা পরিচিত জলদস্যুদের উপরে নিচে উঠানামার কাজ করেন বলেও দাবি তার। উপরে উঠে যাওয়া দুই জলদস্যু উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি তার নৌকার মধ্যে রেখে যায় বলেও তিনি দাবি করেন।

দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। লোকারয়ে পৌঁছে দেওয়া দুই জলদস্যুকে সুন্দরবনের পুটেরদুনে এলাকা থেকে নিয়ে আসার কথাও নিশ্চিত করেন তিনি। তবে তার কাছে মোবাইলের পাওয়ার ব্যাঙ্কসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।

এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নতুন কমিটি ঘোষণা
  • জাবিতে বঙ্গবন্ধু হলের নাম পুনর্বহালের দাবি সাংস্কৃতিক জোটের
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি
  • ধাওয়া করে সুন্দরবনের ‘জলদস্যু’ ধরল জনতা, বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার
  • শ্যামনগরে ২ বনদস্যু আটক, বন্দুক জব্দ
  • অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই ‘জলদস্যু’ আটক
  • অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই জলদস্যু আটক