বরগুনায় ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
Published: 10th, June 2025 GMT
দেশের চার ভাগের এক ভাগ ডেঙ্গু রোগী বরগুনায়। ইতোমধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মারা গেছেন ৭ জন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫শ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে জেলায়। ১৫৮ জন ভর্তি রয়েছেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে।
এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় বরগুনা জেলা এখন ডেঙ্গু হটস্পট। তারপরও জেলাটিকে ‘ডেঙ্গু হটস্পট’ ঘোষণা না করা এবং জরুরি ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাস্তায় নেমেছে বরগুনার সাধারণ মানুষ।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ৯টায় প্রেসক্লাব চত্বরে সর্বস্তরের সাধারণ জনগণের ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নারী কর্মীরা। পরে সকাল ১১টায় একই স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপি।
বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি তালিমুল ইসলাম পলাশের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা এবং সাবেক সহ-সভাপতি এ জেড এম সালেহ ফারুক।
বরগুনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী নাসরিন আক্তার শিমু বলেন, ‘‘বরগুনার জেনারেল হাসপাতালের অব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে বরগুনায় তাদের সহকর্মী স্থানীয় উদ্যোক্তা মোনালিসা জেরিন এবং কিশোরী উপমাসহ ১০ জনেরও বেশি মানুষের অকাল মৃত্যু হয়েছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করেছে ডেঙ্গু। যে কোনো সময় এ পরিস্থিতি আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেতে পারে। যা সামাল দেওয়া রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব হবে না।’’
বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লার কন্যা উপমা এবং সাবেক সংসদ সদস্য জাফরুল হাসান ফরহাদের কন্যা মোনালিসা জেরিনসহ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকজনের অকালমৃত্যুর পরে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ।
বরগুনা প্রেসক্লাবের মধ্যস্থতায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে জরুরি ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে বরগুনার জেনারেল হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার এবং নার্স নিয়োগের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরাম নামে এসব সভা সমাবেশের আয়োজন করে বরগুনা প্রেসক্লাব ও স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এসব কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিনে জেলা প্রশাসন, পৌর পরিষদ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করে বরগুনার স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফোরামের নেতৃবৃন্দ।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাড.
বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘‘ডেঙ্গু মশার ভয়াবহ উপদ্রব এবং বরগুনার চিকিৎসা সেবার অচল অবস্থার কারণে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বরগুনায়। এভাবে একটি জেলার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চলতে পারে না।’’
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ উজ জামান মামুন বলেন, ‘‘বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বরগুনা পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সকলেরই দায়িত্বহীনতা রয়েছে। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সচিব কেন বরগুনায় আসলেন না? স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কেন আসলেন না তার জবাব দিতে হবে জনগণের কাছে।’’
ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাদের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।
ইমরান//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স পর স থ ত বরগ ন য ল ইসল ম বরগ ন র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রয়োজন অনুসারে রাষ্ট্রকাঠামোর পরিবর্তনে সচেতনভাবে এগোচ্ছে বিএনপি: মির্জা ফখরুল
প্রয়োজন অনুসারে রাষ্ট্রকাঠামোর পরিবর্তনে বিএনপি সচেতনভাবে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘জনগণের যেটা প্রয়োজন, যুগের সঙ্গে সঙ্গে যে পরিবর্তনগুলো আনা দরকার, রাষ্ট্রকাঠামোর যে পরিবর্তন আনা দরকার, সে বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সচেতন। সচেতনভাবেই সামনের দিকে এগোচ্ছি।’
আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। ‘পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’ এ সেমিনারের আয়োজন করে।
দ্বিতীয় পদ্মা সেতু এবং পদ্মা ব্যারাজ এখন সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। একই সঙ্গে তিনি সাতবার ফিজিবিলিটি স্টাডি (প্রস্তাবিত প্রকল্পের কার্যকারিতা এবং বাস্তবতার মূল্যায়ন) হলেও এই বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তের জায়গায় আসতে না পারাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এ জন্য রাজনৈতিক কমিটমেন্ট প্রয়োজন। এটি তখনই তৈরি হবে, যখন জনগণের মধ্য থেকে এ দাবি উঠে আসবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অনেক আগেই দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর অঙ্গীকার করেছিলেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের বহু অংশ ছেড়ে মানুষ চলে যাচ্ছে। বাসের উপযোগী আর থাকছে না। পরবর্তী সরকারগুলো শুধু নয়, জনগণেরও এ বিষয়ে অত্যন্ত সজাগ থাকা উচিত।
পরবর্তী সরকারগুলোকে এ বিষয়ে কাজ করতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা একটা ট্রানজিশন পিরিয়ডে আছি। আজ একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। অভূতপূর্ব ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল। সেই ঐক্যকে সামনে নিয়ে আমরা সবাই যদি মূল বিষয়গুলোকে সামনে আনতে পারি, চিন্তার ঐক্য যদি থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা সফল হব।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, সবকিছুই নির্ভর করবে মানুষের ওপর। ঐক্যবদ্ধ থাকলে বাংলাদেশের মানুষ পারে। সেটি একাত্তর সালে প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি চব্বিশেও তা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষের পালস আমি বুঝি। দেশের মানুষ উন্নতি চায়, ওপরে উঠতে চায়, সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ চায়। সেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সব বিষয়ের সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যাবে।’
আয়োজক কমিটির সভাপতি বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ামের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক আইনুন নিশাত, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।