পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি: ফখরুল
Published: 27th, July 2025 GMT
পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “জনগণের মধ্য থেকে এই দাবি উঠে এলেই তা সম্ভব হবে।”
রবিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর মহাখালী ব্র্যাক সেন্টারে ‘পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের আয়োজন করে ‘পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটি’।
মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রায় আট কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা পদ্মা ব্যারেজ ও পদ্মা সেতুর সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘ সাতবার সম্ভাব্যতা যাচাই হলেও এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
আরো পড়ুন:
দেশে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন নিয়ে জগাখিচুড়ি চলছে: মির্জা ফখরুল
নিহত পাইলটের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ফারাক্কা ব্যারাজ শুধু ফরিদপুর বা নির্দিষ্ট কোনো এলাকার সমস্যা নয়, এটি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সমস্যা। এ অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তা এবং জীবন-জীবিকা রক্ষায় পদ্মা ব্যারাজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।”
উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “দক্ষিণাঞ্চলের অনেক এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ায় মানুষ সেখান থেকে চলে যাচ্ছে, যা একটি গুরুতর সমস্যা। এ অঞ্চলের বহু মানুষ তাদের ভিটেমাটি ছেড়ে চলে যাচ্ছে কারণ তা আর বসবাসের উপযোগী থাকছে না। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।”
তিনি আরো বলেন, “নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের দাবি নিয়ে সামনে দাঁড়াতে হবে, যে সরকারই আসুক না কেন, তাদের এই বিষয়ে কাজ করতে হবে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বিএনপি দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং জনগণের জীবন-জীবিকার প্রশ্ন জড়িত থাকায় বিএনপি এই অঞ্চলগুলোর উন্নয়নে অত্যন্ত সচেতন। জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো কঠিন কাজই সম্ভব।”
জনগণের ঐক্যবদ্ধ দাবিই পরবর্তী সরকারগুলোকে এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে বাধ্য করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি দেশের মানুষের পালস বুঝি। দেশের মানুষ উন্নতি চায়, একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায়। আর এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই সমস্ত সমস্যার সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে।”
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, “সামনে নির্বাচন, নির্বাচননী প্রচারণা হবে। আমি প্রত্যাশা করব এই বিষয়টি (পদ্মা ব্যারেজ ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু) প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে যেনো স্থান পায়।”
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা এটিকে নির্বাচনী ইশতেহারে দিবেন। যেনো এই দাবি জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়।”
তিনি বলেন, “আগামী সরকারে যারা আসবে তাদের প্রথম কাজ হবে বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ বহুবিধি কাজে মধ্যম মেয়াদি পরিকল্পনা করা। আমি প্রত্যাশা করব, মধ্যম মেয়াদি বাজেটে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরের বাজেটে এই প্রকল্পটি যেনো অর্থায়নের জন্য সংযুক্ত হয়।”
সেমিনারের সভাপতিত্বে করেন আয়োজক কমিটির সভাপতি ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। সেমিনারে বক্তব্য রাখেস বিপ্লবী ওয়াকার্য পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস।
ঢাকা/রায়হান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব য র জ ও দ ব ত য় পদ ম র জন ত ক ব এনপ সরক র সমস য ফখর ল
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব