সাগরে মাছ আহরণের ওপর ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ বুধবার রাত ১২টায়। উপকূলীয় এলাকায় হাজারো জেলে এদিন যাত্রা করবেন মাছ ধরতে। যদিও নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই অসাধু জেলেরা সাগরে মাছ ধরেছেন। তারা মাছ ধরে ফেরায় বরগুনার পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বেশ কিছুদিন ধরেই জমজমাট।
জেলেসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সাল থেকে সাগরে মাছ আহরণের ওপর বছরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা পালন শুরু হয়। গত বছর পর্যন্ত এর সময়সীমা ছিল ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই। জেলেদের দাবির মুখে এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে ১৫ এপ্রিল শুরু হয়েছে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা, যা চলবে ১১ জুন রাত পর্যন্ত।
জেলেদের অভিযোগ, ঈদুল আজহায় টানা ১০ দিনের ছুটিতে প্রশাসনে শিথিলতা ছিল। এই সুযোগ নিয়েছেন অসাধু মাছ ব্যবসায়ীরা। ৩ জুন থেকে এসব ব্যবসায়ীর ট্রলার গভীর সাগরে যাওয়া শুরু করে। তারা মাছ নিয়ে ফিরছেন দু’দিন ধরে।
৩ জুন সাগরে গিয়ে সোমবার তীরে ফেরেন জেলে হাবিবুর রহমান। তাঁর ভাষ্য, ৬ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছেন। তবে এতে প্রায় দেড় লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। হাবিবুরের অভিযোগ, বরফকল মালিকরা সিন্ডিকেট করে প্রতিক্যান বরফের দাম ১৩০ টাকার জায়গায় ২০০ টাকা রেখেছে। প্রশাসন ‘ম্যানেজের’ নামে একটি চক্র ট্রলারপ্রতি চাঁদা নিয়েছে ১৫-২০ হাজার টাকা। তাই মাছ বিক্রি করে লাভ হয়নি।
পাথরঘাটা বরফকল মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মেহের কান্তি সিন্ডিকেটের বিষয় অস্বীকার করেন। লোডশেডিংসহ অন্যান্য কারণে বরফের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাই দাম বাড়িয়েছেন তারা।
জেলে ইউসুফ মাঝি মনে করেন, গত বছর পর্যন্ত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা পালনও নামমাত্র ছিল, এবারও একই ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন ‘ম্যানেজ’ করে বহু ট্রলার সাগরে গিয়ে মাছ শিকার করেছে।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, তাদের আন্দোলনের কারণেই সরকার ভারতের সঙ্গে মিলিয়ে নিষেধাজ্ঞার সময় দিয়েছে। এর পরও অনেকে এই নিষেধাজ্ঞা মানছেন না। বিষয়টি দুঃখজনক।
মৎস্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ২০২৫-২৬ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করেন।
এ সময় বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের ইক্ষু উন্নয়ন ও গবেষণা বিভাগের পরিচালক ড. আব্দুল আলীম খান, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চিফ অব পার্সোনেল শাহরীনা তানাজ, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজওয়ানা নাহিদ, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী আ ন ম জোবায়ের ও বিএনপি নেত্রী মুর্শিদা জামান উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘‘এ বছর বিভিন্ন মিল এলাকায় গিয়ে কৃষকদের মধ্যে খুশির আমেজ দেখেছি। দেশের ১৫ চিনিকলের মধ্যে ৯টি চালু আছে। বাকিগুলো আগামীতে চালু করা হবে। কাঁচামালের কোনো ঘাটতি হবে না। এর জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে।’’
মোবারকগঞ্জ চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) গৌতম কুমার মন্ডল বলেন, ‘‘এবারই প্রথম ডিজিটাল ওজন যন্ত্রে মাপা হবে কৃষকদের আখ। মাপার সঙ্গে সঙ্গে আখের পরিমাণ ও টাকা মোবাইলে ক্ষুদে বার্তায় কৃষককে জানিয়ে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে মিল এলাকায় ৪২টি ডিজিটাল ওজন যন্ত্র স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া, ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কৃষকের আখের টাকা পরিশোধ করা হবে। মিলের এসব কাজ সম্পন্ন করতে কর্পোরেশনের হেড অফিস থেকে আসা টেকনিশিয়ান টিম কাজ করছে।’’
চলতি মাড়াই মৌসুমে কৃষকদের আখের মূল্য ধরা হয়েছে মন ২৫০ টাকা। এটি সুগার মিলের ৫৯তম আখ মাড়াই মৌসুম। এ বছর ৫৬ দিনে ৮০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চিনি আহরণের আনুমানিক হার ধরা হয়েছে ৫.৫০ শতাংশ।
এর আগে, ২০২৪-২৫ মাড়াই মৌসুমে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৩ হাজার ৩৭৮ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও উৎপাদন উৎপাদন হয়েছিল ৩ হাজার ৮৬৮ মেট্রিক টন। যার মধ্যে ৯৭৪ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রীত রয়েছে। ওই বছর চিনি আহরণের গড় ধরা হয়েছিল ৫.৪০ শতাংশ। প্রতি মণ আখের দাম ধরা হয়েছিল ২৪০ টাকা।
ঢাকা/শাহরিয়ার/রাজীব