চক্ষু হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫২ জুলাই যোদ্ধা
Published: 10th, June 2025 GMT
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫২ জন জুলাই যোদ্ধা। বর্তমানে তাদের আরও তিনজন প্রতিনিধি হাসপাতালটিতে আছেন। চার তলায় ভেতর থেকে তালা দিয়ে তারা অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবারও হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য সব বিভাগ বন্ধ ছিল। ফলে রোগী ভর্তি কিংবা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অস্ত্রোপচার হয়নি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য এলেও জরুরি বিভাগে সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় গত দুই সপ্তাহেও কাটেনি অচলাবস্থা।
জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ২৮ মে থেকে হাসপাতালটির পুরো চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এক সপ্তাহ পর স্বল্প পরিসরে জরুরি বিভাগ চালু হলেও এখন পর্যন্ত বাকি বিভাগগুলো চালু হয়নি।
কুমিল্লার দেবীদ্বারের বাসিন্দা আবদুল মান্নান চোখের চিকিৎসা করাতে এসেছেন। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন থেকে তাঁর ডান চোখ একদিকে টান লাগে। তীব্র ব্যথায় তাঁর মুখ ডান দিকে বাঁকা হয়ে আসে। কিন্তু জরুরি বিভাগ থেকে তিনি কোনো চিকিৎসা পাননি।
জরুরি বিভাগের নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একান্ত জরুরি ছাড়া অন্য রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য অনেক রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই ফিরে যেতে হচ্ছে। সেবা পুরোপুরি চালু হলে সব রোগী আবারও চিকিৎসা পাবেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা প্রয়োজন, এমন অধিকাংশ রোগীই ফেরত যাচ্ছেন।
জুলাই যোদ্ধা রোহান মাহমুদ বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছি। দু-একদিনের মধ্যে আবার হাসপাতালে ফিরব। আমার মতো অধিকাংশ আহতই দু-একদিনের মধ্যে হাসপাতালে ফিরবেন। আমাদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সাতজনের তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। বাকিদেরও বিদেশ পাঠাতে হবে।’
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
যে ৫ কারণে বিটিএস নিয়ে সংশয়ে ভক্তরা
বিশ্বজুড়ে কে-পপ জগতে একসময় বিটিএসের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। বিশেষ করে কোভিড মহামারির সময় ‘পারমিশন টু ড্যান্স’ গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে কোটি মানুষের আশার আলো হয়ে উঠেছিল। এখনো তাদের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি; ৮ জুন প্রকাশিত হিসাবে, স্পটিফাইয়ে বিটিএসের মাসিক নতুন শ্রোতার সংখ্যা বেড়েছে ৫১ হাজার ১৭৬। তবে এ অর্জনে কিছুটা ধূসর রেখা টেনে দিয়েছে নতুন প্রজন্মের গ্রুপগুলোর উত্থান। বিশ্বমঞ্চে ঝড় তুলছে সেভেনটিন, স্ট্রে কিডস, নিউজিনস, লে সেরাফিম, আইভ, জিরোবেজওয়ান, বয়নেক্সটডোর, বেবিমন্সটার, আইলিট, রাইজ। একই সঙ্গে বিটিএস–ভক্তদের মধ্যেও এখন বিভাজন তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুনএক দশকে ১৩ শিল্পী যেভাবে বদলে দিয়েছেন কে-পপের সংজ্ঞা১২ জুন ২০২৫রাজনৈতিক মতাদর্শ, সদস্যদের নিয়ে আলাদা মাতামাতি ও এজেন্সি নিয়ে অসন্তোষ—এসব নিয়ে ‘আর্মি’-দের মধ্যেই একধরনের দ্বন্দ্ব চলছে। গত সপ্তাহেই সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে এক দিনের ব্যবধানে বাড়ি ফিরেছেন চার বিটিএস তারকা আরএম, ভি, জিমিন ও জাংকুক। সুগা বাদে বাকিরাও ফিরছেন। তবে বিটিএস ফিরলেও নতুন বাস্তাবতায় ভক্তদের মধ্যে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা আগের মতো থাকবে কি?
দীর্ঘ বিরতি
দীর্ঘ সাময়িক বিরতি অনেক সময় পুরোনো ভক্তদের আগ্রহ কমিয়ে দেয়। বিটিএসের ক্ষেত্রে অনেক পুরোনো ভক্ত অপেক্ষায় ছিলেন ঠিকই, তবে অনেকেই এই ফাঁকে নতুন কে-পপ গ্রুপের ভক্ত বনে গেছেন। ২০২৪ সালজুড়েই নতুন প্রজন্মের হাতে ছিল কে-পপ জগতের আধিপত্য। তারা কেবল নিজস্ব ধারা তৈরি করেনি, কে-পপের পরিধিও বাড়িয়ে দিয়েছে।
বিভক্ত ভক্তকুল
বিটিএসের মূল প্রতিষ্ঠান হাইব করপোরেশনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ এখন নিয়মিত ঘটনা। বিশেষ করে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে শিল্পী ও এজেন্সির অবস্থান নিয়ে ভক্তদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করেছে। হাইব যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী স্কুটার ব্রাউনের কারণে অনেক ভক্ত হাইব ও এর শিল্পীদের বর্জনের আহ্বান জানান। কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছেন, বিটিএস যদি হাইব থেকে আলাদা না হয়, তবে তাঁরা আর সমর্থন করবেন না।
দল বনাম ব্যক্তি
বিটিএস–ভক্তদের মধ্যে বরাবরই ‘ওটি৭’, অর্থাৎ সাত সদস্যকে একসঙ্গে ভালোবাসার চর্চা ছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একে একে একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন জংকুক, আরএম, জিমিন, জে-হোপ, সুগা, জিনরা। একদিকে এগুলো গ্রুপের সামগ্রিক শক্তিকে প্রমাণ করেছে, অন্যদিকে কিছু ভক্ত এখন নির্দিষ্ট সদস্যের প্রতিই বেশি আগ্রহী, যা ব্যান্ডের ইমেজে প্রভাব ফেলেছে।
অ্যালবাম বিক্রি ও সেভেনটিনের উত্থান
২০২৪ সালে মার্কিন অনলাইন গণমাধ্যম দ্য হলিউড রিপোর্টার ঘোষণা করে, সেভেনটিনই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কে-পপ গ্রুপ। এশিয়া সফরের ২৪ শো থেকে তারা আয় করেছে ৯৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার। চলতি বছর বাজারে আসা তাদের ‘হ্যাপি বার্থডে’ অ্যালবামটি প্রথম দিনেই বিক্রি হয় ২২ লাখ কপির বেশি! যদিও এই সময়টায় বিটিএস ছিল না, তবে সেভেনটিনের এই সাফল্য তাদের সঙ্গে সরাসরি তুলনায় এসেছে বারবার। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তারা টেলর সুইফট, ড্রেক, দ্য উইকেন্ডের মতো তারকাদেরও পেছনে ফেলেছে।
নিউজিনস সংকট ও হাইব–বিতর্ক
হাইবের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এডোর ও তাদের সাবেক প্রধান নির্বাহী মিন হি জিনের দ্বন্দ্ব কে-পপ দুনিয়ায় বড় ধরনের ধাক্কা দেয়। এই দ্বন্দ্বে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিউজিনস, অনেকেই যাদের ‘নারী বিটিএস’ ভাবতেন। ২০২২ সালে অভিষেকের পর ব্র্যান্ডটির যেভাবে দ্রুত উত্থান হয়, তেমনি দ্রুত সংকটে পড়ে এখন কার্যত বিরতিতে চলে গেছে। ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। বিটিএস–ভক্তদের একাংশ নিউজিনসের পাশে দাঁড়ালেও অন্যরা হাইবের প্রতি অনুগত থেকে গেছেন।
বিটিএস এখনো বিশ্বসংগীতে প্রভাবশালী নাম। তবে সময়ের পরিবর্তনে ভক্তদের মধ্যে টানাপোড়েন বেড়েছে। নতুন শিল্পীর আগমন, রাজনৈতিক মতাদর্শ, একক ক্যারিয়ারে মনোযোগ—সব মিলিয়ে ‘আর্মি’রা এখন আর আগের মতো নেই। এত কিছুর পরও বিটিএসের গল্প যে এখনো শেষ হয়ে যায়নি, তাদেরই সেটা আবার প্রমাণ করতে হবে।
তথ্যসূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস