রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ছেড়েছেন ৫২ জন জুলাই যোদ্ধা। বর্তমানে তাদের আরও তিনজন প্রতিনিধি হাসপাতালটিতে আছেন। চার তলায় ভেতর থেকে তালা দিয়ে তারা অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। মঙ্গলবারও হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্য সব বিভাগ বন্ধ ছিল। ফলে রোগী ভর্তি কিংবা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও অস্ত্রোপচার হয়নি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রোগীরা চিকিৎসার জন্য এলেও জরুরি বিভাগে সবাইকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থায় গত দুই সপ্তাহেও কাটেনি অচলাবস্থা। 

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ২৮ মে থেকে হাসপাতালটির পুরো চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এক সপ্তাহ পর স্বল্প পরিসরে জরুরি বিভাগ চালু হলেও এখন পর্যন্ত বাকি বিভাগগুলো চালু হয়নি। 

কুমিল্লার দেবীদ্বারের বাসিন্দা আবদুল মান্নান চোখের চিকিৎসা করাতে এসেছেন। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন থেকে তাঁর ডান চোখ একদিকে টান লাগে। তীব্র ব্যথায় তাঁর মুখ ডান দিকে বাঁকা হয়ে আসে। কিন্তু জরুরি বিভাগ থেকে তিনি কোনো চিকিৎসা পাননি।

জরুরি বিভাগের নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একান্ত জরুরি ছাড়া অন্য রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য অনেক রোগীকে চিকিৎসা ছাড়াই ফিরে যেতে হচ্ছে। সেবা পুরোপুরি চালু হলে সব রোগী আবারও চিকিৎসা পাবেন। বহির্বিভাগে চিকিৎসা প্রয়োজন, এমন অধিকাংশ রোগীই ফেরত যাচ্ছেন।

জুলাই যোদ্ধা রোহান মাহমুদ বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এসেছি। দু-একদিনের মধ্যে আবার হাসপাতালে ফিরব। আমার মতো অধিকাংশ আহতই দু-একদিনের মধ্যে হাসপাতালে ফিরবেন। আমাদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য সাতজনের তালিকা প্রস্তুত হয়েছে। বাকিদেরও বিদেশ পাঠাতে হবে।’

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা.

জানে আলমের দাবি, জরুরি বিভাগ চালু আছে। আজ (মঙ্গলবার) ৬৬ জনকে সেবা দিয়েছি। এর মধ্যে আটটি জরুরি অস্ত্রোপচার করেছি। সংকট নিরসন করে আগামী শনিবার থেকে সব সেবা চালুর চেষ্টা চলছে। আহত রোগীরা বিশেষায়িত ওয়ার্ডের ফটকে তালা দিয়ে ভেতরে অবস্থান করছেন। তারা পাঁচজনের খাবার নিয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলি অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন দিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ