পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্বাচলে বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের সীমানা চিহ্নিত করা হবে।  তিনি বলেন, ‘‘পূর্বাচলে এখানে মোটামুটি একটা সতেজ বনই আছে। এখন এ বনের সীমানা চিহ্নিতকরণ জরুরী এবং দ্রুতই এটা করা হবে।’’ 

মঙ্গলবার (১০ জুন) ঢাকায় পূর্বাচলে বন বিভাগের সংরক্ষিত বনাঞ্চল পরিদর্শনকালে তিনি  এ কথা বলেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘‘এটা এমন একটা ফরেস্ট হতে পারে যেটা ঢাকাবাসীরা মনে করবে যে এটা তাদের কাছাকাছি আছে, তারা এসে এটা দেখবে।’’   

পরিবেশ উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘‘ভুল বনায়ন নীতি, আমাদের নগরায়ন, আমাদের শিল্পায়ন এসব কিছুর কারণে আসলে এখানে শালবনটা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিল। রাজউকের পূর্বাচল দ্বিতীয় পেজের ভিতরে রাজউক এ বনটিকে ঢুকিয়ে ফেলেছিল কিন্তু আমরা বহু কষ্ট করে, আইনি লড়াই করে এই বনটুকুকে বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছি, যা কিনা ১৪৪ একরের মতো হবে।’’  

তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করব,  প্রধানত শাল গাছের চারা দিয়ে বনটাকে ফিরিয়ে আনা। এই এলাকার যে ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, এটা একটা গড় এলাকা।’’  

রিজওয়ানা হাসান আরো বলেন, ‘‘এখানে যেটুকু ফাঁকা জায়গা আছে সেখানে আমরা চেষ্টা করব যাতে প্রাকৃতিক উপায়ে যেন শালবনটা ফেরত আসে। এছাড়া এখানে ফাঁকা জায়গাটা যেন বেদখল হতে না পারে, সেজন্য প্রাকৃতিক আবহে কিছু শাল গাছের চারা ফাঁকা জায়গাগুলোতে রোপন করা হবে।  আর শালের যে কূল আছে সেখান থেকে যেন আপনিআপনিই  বনটা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।’’  

উপদেষ্টা  জানান, এই এলাকাটা আগে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বন হিসেবে চিহ্নিত করা ছিল। নতুন করে এখন এটাকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘‘বনে জায়গার ভিতরে প্রথাগত বনবাসী না হলে অন্য কারো থাকার কোন সুযোগ নেই, ফলে এ বনের জায়গার মধ্যে যারা অবৈধ দখলদার আছে, তাদের দ্রুতই বনের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।’’ 

এ সময় বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক ছানাউল্ল্যা পাটওয়ারী, বিশিষ্ট বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ আলী রেজা খান, সামাজিক বন বিভাগ ঢাকা অঞ্চলের বন সংরক্ষক হোসাইন মুহম্মদ নিশাদ, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা শারমিন আক্তার-সহ বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।   

ঢাকা/এএএম/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বন ব ভ গ উপদ ষ ট স রক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ