ঈদুল আজহায় এ বছর দেশে ৯১ লাখের বেশি পশু কোরবানি করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৯ লাখ কম। গত বছর ঈদুল আজহায় সারা দেশে মোট ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি গবাদি পশু কোরবানি হয়েছিল। এবার ৩৩ লাখ ১০ হাজারের বেশি কোরবানির পশু অবিক্রীত ছিল। তবে কোরবানির মধ্যে গরু ও ছাগলের সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি। সরকারি সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, এবার দেশে মোট ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু কোরবানি হয়েছে, যার মধ্যে গরু ও মহিষ ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি, ছাগল বা ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি এবং অন্যান্য প্রাণি ৯৬০টি।

দেশে পশু কোরবানির হিসাব মূলত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর করে থাকে। অধিদপ্তর দৈবচয়নের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে এবারের হিসাব করেছে। প্রতিটি উপজেলার তিনটি গ্রাম (ছোট, মাঝারি ও বড়) থেকে অন্তত ১ শতাংশ নমুনা সংগ্রহ করে হিসাবটি করা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার কোরবানির পশু অবিক্রীত ছিল ৩৩ লাখ ১০ হাজার ৬০৩টি। কারণ হিসেবে অধিদপ্তর বলছে, এবার কোরবানির পশুর উৎপাদন বেশি ছিল, তাই পশু অবিক্রীত থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া অবিক্রীত এই পশু সামনে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে দরকার পড়বে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবার সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে সিলেট বিভাগে, ৩ লাখ ১৯ হাজার ৮২৩টি। এরপর কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে, ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৬২টি। আর সর্বোচ্চ ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৯৭১টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে রাজশাহী বিভাগে। ঢাকা বিভাগে কোরবানি হয়েছে ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৪০টি। অন্য বিভাগগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামে ১৭ লাখ ৫৩ হাজার ৭৩২টি, খুলনায় ৮ লাখ ৪ হাজার ২২৪টি, বরিশালে ৪ লাখ ৭৮৩টি এবং রংপুর বিভাগে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯টি গবাদিপশু কোরবানি করা হয়েছে।

গত বছর সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছিল ঢাকা বিভাগে। আর সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে ময়মনসিংহ বিভাগে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক রব ন র অব ক র ত

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ