মৌসুমি ফল বিক্রিতে বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা লিটনের
Published: 11th, June 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভাদার্ত্তী দক্ষিণপাড়া (পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি অফিস) এলাকায় অবস্থিত লিটন মিয়া নিজের চা-পান দোকানের পাশেই বসিয়েছেন মৌসুমি ফলের রঙিন পসরা। এই মৌসুমি ফল বিক্রির মাধ্যমে তিনি জীবিকার পাশাপাশি অতিরিক্ত আয়েরও ব্যবস্থা করতে পেরেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেল, প্রতি পিস আনারস ৬০ টাকায়, জোড়া ১০০ ও হালি হিসেবে ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব রসালো আনারস। লিটন মিয়া শুধু একা নন, স্থানীয়দের অনেকেই মৌসুমী ফল বিক্রির মাধ্যমে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করছেন।
চল্লিশোর্ধ্ব লিটন মিয়া বলেন, “আমাদের দেশে এই সময় নানা রকম মৌসুমি ফল পাওয়া যায়। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, তাল, জামরুল প্রভৃতি ফল যখন পরিপক্ব হয়, তখন আমি সেগুলো বিক্রি করি। এটি আমার অতিরিক্ত আয়ের একটি অন্যতম উৎস।”
তিনি বলেন, “এভাবে মৌসুমি ফল বিক্রি করে আমার কিছুটা বাড়তি আয় হয়। কখনো কখনো ফলের ব্যবসা আমার চা-পান দোকানের থেকেও লাভজনক হয়ে যায়।”
কালীগঞ্জ উপজেলার গ্রামাঞ্চলে এই ধরনের মৌসুমি ফল বিক্রি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। লিটন মিয়া নিজের প্রচেষ্টায় এই ব্যবসা করছেন। তিনি আশা করেন তার এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে এখানকার কৃষকরা ফল চাষে উৎসাহী হবেন এবং বিক্রেতারাও তা বাজারে নিয়ে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ পাবেন।
লিটন মিয়া জানান, ফলগুলো তিনি কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করেন। এতে কৃষকদের সুবিধা হয়, কারণ তারা নিজেরা সরাসরি বাজারে পৌঁছানোর ঝামেলা এড়াতে পারেন এবং দামও ভালো পান।
লিটন মিয়ার সাথে কথা বলার সময় দেখা কয়েকজন ক্রেতাকে লিটন মিয়ার কাছ থেকে আনারস ও কাঁঠাল কিনে নিতে দেখা গেল। এদের মধ্যে কথায় হয় ক্রেতা ওছমান মিয়ার সাথে।
তিনি বলেন, “ভালো ফলের দাম ভালোই থাকে কিন্তু লিটন ভাইয়ের কাছ থেকে কম দামেই আমরা কিনতে পারি। ফলগুলোও একেবারে টাটকা ও মিষ্টি। সে কারণে আমি প্রায়ই এখান থেকে ফল কিনি।”
অপর ক্রেতা রমজান আলী বলেন, “এখানকার ফলগুলো অনেক ভালো। আর দামও সস্তা। আমি প্রতি সপ্তাহেই এখান থেকে ফল কিনি।”
স্থানীয়রা জানান, সচেতনভাবে অতিরিক্ত আয়ের পথ খুঁজে নিতে হলে উদ্ভাবনী মনোভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিটন দিয়া তার উদাহরণ। তিনি যে মৌসুমি ফল বিক্রি করেন, তা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যই দেয় না বরং গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতেও ভূমিকা রাখে। তার এই উদ্ভাবনী মনোভাব অন্যদের জন্যও একটি অনুপ্রেরণা।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফল ব ক র ল টন ম য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
সুবিচার মিলবে কত বছরে
হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী কল্পনা চাকমা অপহরণের মামলাটির সুবিচার কত বছরে মিলবে– এমন প্রশ্ন তুলেছেন রাঙামাটির রাজনীতিকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার আলোচিত এই ঘটনার ২৯ বছর উপলক্ষে আয়োজিত এক সভায় এমন প্রশ্ন করেন তারা।
এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার মামলাটির তদন্তের নামে ২৯ বছর ধরে তামাশা করে যাচ্ছে। এই বিচার না হওয়ার জন্য তারা দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকেও দায়ী করেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা শাখা যৌথভাবে আশিকা হল রুমে সভাটির আয়োজন করে। এতে কল্পনা চাকমা মামলার আইনজীবী জুয়েল দেওয়ান বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০২৪ সালে অপহরণ মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এ সময় আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে বাদী কল্পনা চাকমার বড় ভাই কালেন্দী কুমার চাকমা রাঙামাটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে তা গৃহীত হয়। আগামী ১৭ জুন মামলাটির শুনানি হবে।
তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা প্রতিবেদনে কল্পনা চাকমা অপহরণের শিকার হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন। তবু বিচার ও তদন্তের নামে তামাশা চলছে। তিনি প্রকৃত সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে মামলার সমাপ্তি টানার দাবি জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘কল্পনা চাকমার বড় ভাই কালিন্দী কুমার চাকমা স্পষ্ট করে দেখেছিলেন, কারা এই অপহরণ করেছিলেন। বিষয়টি শুধু আমাদের দেশে সীমাবদ্ধ নয়, সারাবিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। মানবধিকার সংস্থা থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ সবাই স্বীকার করেছে কল্পনা চাকমা অপহৃত হয়েছেন। কিন্তু বিচারের বাণী নিভৃতে কেঁদে কেঁদে মরছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় এক বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনও আলোর মুখ দেখেনি। এ স্বাধীন-সার্বোভৌম দেশে শুধু পাহাড়ের মানুষই নয়, দেশের সুবিধাবঞ্চিত সব মানুষ অধিকার থেকে বঞ্চিত।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির জেলা শাখার সভাপতি রিতা চাকমার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন আইনজীবী কক্সি তালুকদার, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কবিতা চাকমা।