Samakal:
2025-06-13@02:58:38 GMT

রাজউকের ভূতের আছর ড্যাপে

Published: 12th, June 2025 GMT

রাজউকের ভূতের আছর ড্যাপে

এই ঢাকা শহরে একসময়ে গুলশান, ধানমন্ডি, বনানীসহ অনেক আবাসিক এলাকার জন্য মাস্টারপ্ল্যান ও লেআউট ছিল। পরবর্তী সময়ে নকশা পাস করার দায়িত্বে নিয়োজিতদের সঙ্গে অর্থকড়ি লেনদেন করে পরিকল্পিত আবাসিক এলাকাগুলোকে অপরিকল্পিত করে ফেলা হয়েছে।

২০২২ সালে ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিট সিস্টেম (ইসিপিএস) চালু করা হয়েছিল ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে। ইসিপিএস চালুর আগে আবাসন খাত-সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও বিশেষজ্ঞ এবং একাডেমিশিয়ানরা এ পদ্ধতির দুর্বলতাগুলো তুলে ধরেছিলেন। বিশেষ করে তারা দুটি জায়গাতে আপত্তি তুলেছিলেন– ১.

ইসিপিএসের মধ্যে পিপি বা প্রজেক্ট পারমিট এবং ২. ইসিপিএসের মতো একটি ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্তরে স্তরে ব্যক্তিদের সশরীর উপস্থিতি ও তাদের মাধ্যমে অনুমোদন। কিন্তু নীতিনির্ধারক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং নকশা অনুমোদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা সেই সুপারিশগুলো শোনেননি। ফলে পিপি-কে কেন্দ্র করে দুর্নীতির যে সূত্রপাত ঘটে, সেটিই পরে আরও বড় আর্থিক দুর্নীতির ভিত্তি রচনা করে। সেই সুবাদে ড্যাপের মতো একটি ভালো উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে চক্রটি।

ঢাকা মহানগরীর জন্য ১৯৯৫-১৫ মেয়াদের মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নেতৃত্বে মহানগরীর ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে অন্তর্ভুক্ত করে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ২০১৬-৩৫ প্রণয়ন করা হয়। ২০২৫ সালে এসেও সেই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। সব পক্ষই চায় ড্যাপ বাস্তবায়ন হোক। প্রস্তাবিত ড্যাপ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান সমস্যা হলো, বিষয়টি বোঝার ক্ষেত্রে পক্ষগুলোর মতের ও ব্যাখ্যার ভিন্নতা। এ সমস্যার সহজ সমাধান হলো, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ অনুমোদন প্রক্রিয়াসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিকে ইসিপিএসের মাধ্যমে ডিজিটাল করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে স্বচ্ছতা বাড়ানো ও মানুষের সম্পৃক্ততা কমানো। 

ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী বাণিজ্যিক, আবাসিক ও সংবেদনশীল এলাকার ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) কী হবে, তা নির্ধারিত রয়েছে। যেহেতু বিষয়টি ফিজিক্যাল বা দৃশ্যমান এবং এখানে বিধিমালা আছে তাই ফার হিসাব করার দায়িত্ব ব্যক্তির ওপর ছেড়ে না দিয়ে প্রতিটি প্লটের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট করে দিলেই হয়। সেটি করা হচ্ছে না। 

এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে জমির মালিকের লোভ সবচেয়ে বেশি! সেটিই লোভী করে তুলেছে রাজউকসহ সরকারি দপ্তরগুলোতে নকশা অনুমোদনে নিয়োজিত মানুষগুলোকে। সেখানে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী দালাল চক্র; যা থেকে বের হওয়ার সহজ উপায় হলো বিষয়টি ডিজিটাল ও অনলাইন করে দেওয়া। যা এখনই করা সম্ভব। দরকার শুধু নির্বাহী আদেশ। শুরুটা পুরোনো আবাসিক এলাকাগুলো দিয়ে হতে পারে। যেমন– বনানী, গুলশান, ধানমন্ডি, রূপনগরের মতো সরকারি আবাসন এবং প্রাইভেট আবাসন বসুন্ধরা, ইস্টার্নের পল্লবী, মিরপুরের আরামবাগ ইত্যাদি। এ রকম পরিকল্পিত আবাসিক এলাকায় পুরোনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হলে এর পারমিশন দিতে তো অসুবিধা থাকার কথা নয়। 

বাস্তবে এই সহজ কাজটি ইচ্ছাকৃতভাবে জটিল করে রেখেছে রাজউকের শর্ষের ভেতরে থাকা ভূতেরা। একই প্রস্থের রাস্তায় পাশাপাশি সমান আকারের দুটি প্লটের প্ল্যান পাস করাতে গেলে আইনের মধ্যে থাকা ফাঁকফোকর ‘বিশেষ করে ব্যক্তির বিবেচনায় রাখা সিদ্ধান্তের ফাঁক’ কাজে লাগিয়ে টুপাইস কামানোর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হয়তো একটি প্লটের মালিক অর্থ দেননি বলে তাকে ছয়তলার অনুমতি দেওয়া হলো। পাশের প্লটের মালিক অর্থ দেওয়াতে তাকে বাসা থেকে বাসস্ট্যান্ডের দূরত্ব, বাজার ইত্যাদি শর্তের বেড়াজালে থাকা ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়ে তাকে ৯ তলা করার অনুমতি দেওয়া হলো।

এর সমাধান সহজ। যেহেতু প্রতিটি প্লটের ডেটাবেজ ও প্রজেক্টের মাস্টার লেআউট রাজউকের কাছে আছে। তারা প্রতিটি প্লটের জন্য ফার হিসাব করে পিডিএফ করে ওয়েবসাইটে দিয়ে দিতে পারে। সেটি ক্লায়েন্টের কাছে উন্মুক্ত করে দিতে পারে। এ কথাই কিন্তু ২০০৭-০৮ সালে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) থেকে বলা হয়েছিল। তারা ঢাকার সিটি জরিপে পর্চার সঙ্গে খতিয়ান মিলিয়ে প্লট ডিজিটাল করে দিয়েছিল। রাজউকের ১৫২৮ বর্গকিলোমিটারে থাকা প্রতিটি মৌজার প্লট ম্যাপ ও সেন্ট্রাল ইমেজ তখন তৈরি করা হয়েছিল, যাতে প্রতিটি প্লটের মালিক অনলাইনে সার্চ করে তার নিজের ও আশপাশের প্লটগুলো রাস্তাসহ দেখতে পারে। সেই অনুযায়ী প্ল্যান তৈরি করে যতবার খুশি বাড়ি ভাঙতে ও গড়তে পারে। এটি যদি তখন থেকে চালু করা হতো তাহলে নতুন ব্যাখ্যা দরকার না হওয়ায় কিছু অসাধু মানুষের আয় কমে যেত। তখন কিছু কর্মকর্তা অসাধু লোকদের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকারকে ভয় দেখাল যে এটি করা হলে জনগণের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হবে। সরকার আর এগোলো না। এভাবে আবাসন খাতকে কিছু ব্যক্তির স্বার্থে জিম্মি করায় আজকে অর্থনীতিতে বড় ধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এর দুর্ভোগ সমাজের উঁচুতলার মানুষ টের না পেলেও শ্রমিক, মজুরসহ ক্ষুদ্র চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।

আবাসন খাতকে সচল করার আরেকটি উপায় হলো পূর্বাচলকে চালু করা। পূর্বাচল তৈরি করার দুটো কারণ ছিল– ১. এখানে একটি পূর্ণ আকারের আবাসন শহর গড়ে উঠবে। সেখানে ২৬ হাজার প্লট আছে। ২. সেন্ট্রাল বিজনেস ডিস্ট্রিক্ট (সিবিডি) আছে। ১০ একরের মতো। যেখানে ১০ তলা করে প্রায় ৪৫টি ভবন হবে। তিনটি টাওয়ার ভবন হবে। যেগুলো ৫২ থেকে ১১০ তলা পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদির জন্য আলাদা আলাদা স্থান রাখা হয়েছে। রাজউকের অর্থের অভাব নেই। বিপুল ক্ষমতাও আছে। এর পরও ২৮ বছরে পূর্বাচল পুরোপুরি চালু হলো না কেন? বলা হয়, সিবিডির জমি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে সমাজে প্রিভিলেজড বা সুবিধাপ্রাপ্ত হিসেবে পরিচিতদের ‘ভাগাভাগিতে না মেলায়’ সব উদ্যোগ থমকে আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের তো ভাগাভাগির সমস্যা থাকার কথা নয়। তারা পূর্বাচলের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হচ্ছে না কেন?

আরেকটি কথা হলো, ঢাকার জন্য ড্যাপ করা হয়েছে। এটি পুরো বাংলাদেশের জন্য করা দরকার। ১০-২০ বছর ধরে ঢাকার বাইরে দেশের সব শহরে ঢাকার মতোই অপরিকল্পিতভাবে আবাসন গড়ে উঠছে। কারণ, আমাদের মনস্তত্ত্ব তো একই! আজ থেকে ২০-৩০ বছর পর ওই শহরগুলো নিয়ে ঢাকার মতোই সমস্যায় পড়তে হবে।
এখন সরকারের উচিত দ্রুততার সঙ্গে পুরো দেশের আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ শুরু করার পাশাপাশি ঢাকা শহরের পুরোনো ও পরিকল্পিত আবাসিক এলাকাগুলোতে নির্মাণ কার্যক্রমের বাধা অপসারণ করা। এ খাতের সঙ্গে যুক্ত ১০ লাখের বেশি পরিবারকে খেয়েপরে বাঁচার সুযোগ করে দেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকার হওয়া দরকার। নতুবা কর্মহীন মানুষ নীরব দুর্ভিক্ষের শিকার হতে পারে। সেটি কি অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তির জন্য ভালো হবে?

মোহাম্মদ গোলাম নবী: কলাম লেখক; প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক, রাইট টার্ন

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র র র জউক র র জন য দরক র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ

পাঁচ বছরে দেশের ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়াবে ৫৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের স্থিতি বেড়ে হবে ৫৬ দশমিক ৬ ০ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের স্থিতি বৃদ্ধি পাবে ৫০ শতাংশ। অর্থ বিভাগের করা সাম্প্রতিক এক প্রক্ষেপণে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। 

প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট ঋণের স্থিতি ছিল আঠারো লাখ ৮১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সেখানে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ঋণের এই স্থিতি বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এই হিসেবে পাঁচ বছরের ব্যবধানে ঋণের স্থিতি টাকার অঙ্কে বৃদ্ধি পাবে ১০ লাখ ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

গত ২ জুন অর্থ বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি ২০২৫-২০২৬ হতে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ২০১৪-২০১৫ হতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণ জিডিপি’র অনুপাত ধারবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় ঋণ জিডিপি’র অনুপাত ১৫.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২১.৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণ জিডিপি’র অনুপাত ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ১১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছেছে। 

পূর্বাভাষ অনুযায়ী, ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এটি জিডিপি’র ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ হবে। যদিও বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপি’র অনুপাত বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত নিরাপদ সীমার মধ্যে রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক শৃঙ্খলা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এক্ষেত্রে নিবিড় মনিটরিং ও সময়োপযোগী সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। 

একটি স্থিতিশীল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি নিশ্চিত করার পথে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম রাজস্ব সংগ্রহ এবং ক্রমবর্ধমান ঋণ পরিশোধ ব্যয়-বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।

অর্থ বিভাগ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি সহায়ক খাতে ঋণ গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিলেও এটি মুদ্রার বিনিময় হার ঝুঁকি, ব্যয়বহুল অভ্যন্তরীণ ঋণ এবং অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার চাপের মুখোমুখি হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট রাজস্ব আহরণ আশানুরূপ না হওয়ায় সরকারের ওপর অর্থায়নের চাপ থাকছে। অন্যদিকে, উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য দেশজুড়ে ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো তৈরির প্রয়োজন। 

এ প্রেক্ষাপটে, সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে একটি মধ্যমেয়াদি ঘাটতি অর্থায়ন কৌশল অনুসরণ করছে। ঘাটতি অর্থায়নের অভ্যন্তরীণ উৎস হিসেবে ট্রেজারি বন্ড ও বিল এবং জাতীয় সঞ্চয় স্কিম প্রধান ভূমিকা পালন করছে। বৈদেশিক উৎসসমূহের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উৎস থেকে নমনীয় ও অ-নমনীয় ঋণ উল্লেখযোগ্য।

ঋণ প্রোফাইলের এক চিত্র উপস্থাপন করে নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের শেষে মোট সরকারি ঋণের পরিমাণ ছিল জিডিপি’র ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, যার মধ্যে ২১.৫২ শতাংশ এসেছে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং ১৬ .১০ শতাংশ বৈদেশিক উৎস থেকে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ঋণের সিংহভাগ (৫৮%) এসেছে ব্যাংকিং খাত থেকে, এরপর রয়েছে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম যার অবদান ৩৪ শতাংশ। 

অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ পাওয়া গেছে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাজেন্সি (আইডিএ) থেকে, এরপর আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান।

ঋণ স্থিতির মধ্যমেয়াদি প্রক্ষেপণ বিষয়ে বলা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ জিডিপি’র অনুপাতে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরের শেষে মোট ঋণ জিডিপি’র ৩৭ দশমিক ৭২ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ হতে পারে জিডিপি’র ২১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণ হতে পারে ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। 

বিগত বছরগুলোর অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের বন্টন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ফলে বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে অনুদান এবং নমনীয় ঋণ (কম সুদের হার, দীর্ঘ পরিশোধকাল) পাওয়ার সুবিধাদি ক্রমান্নয়ে হ্রাস পাচ্ছে। 

সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে তুলনামূলক উচ্চ সুদের হার ও স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক ঋণের ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে হতে পারে। যার ফলে ঋণ পরিশোধ ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এসময় বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির মধ্যমেয়াদী চিত্র অনেকটাই নির্ভর করবে সরকারের গৃহীত কার্যকর কৌশলগুলোর বাস্তবায়নের ওপর। 

যদি রাজস্ব আহরণ, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ এবং ঋণ ব্যবস্থপনায় কার্যকর সংস্কার না আনা যায়, তাহলে ঋণের স্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। তবে, মধ্যমেয়াদি ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ এই উত্তরণের পথ দক্ষতার সাথে অতিক্রম করতে পারবে এবং উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থানের সুফল গ্রহণের পাশাপাশি একটি টেকসই ঋণ পরিস্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম হবে।

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ