নগর পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের সম্পৃক্ত করতে হবে এবং নগর উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) বেইজিংয়ে চায়না ওয়ার্ল্ড হোটেলে অনুষ্ঠিত এশিয়ান মেয়রস ফোরামের এক আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রশাসক বলেন, “নাগরিকদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক আদর্শ নগরী গড়ে তুলতে নগর পরিকল্পনায় সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক। নাগরিক অংশগ্রহণের মাধ্যমে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠাই হওয়া উচিত নগর পরিকল্পনার মূলভিত্তি।

আরো পড়ুন:

ঢাকা দক্ষিণে বর্জ্য সরানোর কাজ শেষ, ৩১ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ

ডিএনসিসির প্রশাসক
ঈদের ৩ দিনে ডিএনসিসির ২০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ

এই আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় ডিএনসিসি প্রশাসক ফোরামে টেকসই নগর উন্নয়ন, জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো এবং নগর শাসনে উদ্ভাবনের ভূমিকা বিষয়ে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও অগ্রগতি তুলে ধরেন।

ফোরামে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ন্যায্য অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নেতৃত্বের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে বেইজিংয়ের চায়না ওয়ার্ল্ড হোটেলে ফোরামের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। ইউএনডিপির চীনে নিযুক্ত প্রতিনিধি বেয়াতে ট্রাংকমান উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “শহরগুলোকে নেতৃত্ব, সহযোগিতা এবং অর্থায়নের কাঠামোতে নতুন চিন্তা নিয়ে এগোতে হবে, যাতে তারা টেকসই উন্নয়নের পথ তৈরি করতে পারে। শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উদ্ভাবনী শাসন ব্যবস্থাই শহরকে গতি ও স্থিতিশীলতা দিতে পারে।”

এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘সহযোগিতামূলক উদ্ভাবন: একটি নিম্ন-কার্বন ও টেকসই ভবিষ্যতের শহর নির্মাণ’।

এশিয়া ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত ১৬টিরও বেশি শহরের মেয়র, শহর প্রশাসক, আন্তর্জাতিক সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিরা এই ফোরামে অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়া অংশগ্রহণ করেন জাতিসংঘ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন (ইউএন-এসকাপ), এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), সিটি নেট, চিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়, আরআইসিএস এবং আরুপ-এর প্রতিনিধিরা। ফোরামে উপস্থিত ছিলেন ৫০০-এরও বেশি আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারী।

বাংলাদেশের পক্ষে প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের এই অংশগ্রহণ দেশের নগর উন্নয়ন প্রচেষ্টার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যা আগামী দিনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তার নতুন দ্বার উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা/এএএম/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এসস স গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা ইরানের

ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার জবাব শেষ হয়নি বরং ইসরায়েলের বিরুদ্ধেও ইরানের হামলা ‌‘চলবে’।

নাম প্রকাশ করেননি এমন একজন কর্মকর্তার বরাতে ফার্স এ তথ্য দিয়েছে। ইরানের জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের বরাতে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে ইরান ওই অঞ্চলে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।

তেহরানে শুক্রবার পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েলি হামলার জবাবে রাতে ব্যালিস্টিক মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ ৩’ নামের এ অভিযানে ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা করা হয়। এতে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। 

অন্যদিকে ইসরায়েলের ইংরেজি পত্রিকা দ্য জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের হামলায় ইসরায়েলে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৩ জন আহত হয়েছেন। তেল আবিব ও জেরুসালেমে সতর্কতামূলক সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এছাড়া ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছে। ইসরায়েলের সমুদ্র উপকূলবর্তী সমতল এলাকায় অন্তত ২১ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মাঝে একজন ছিলেন ৬০ বছর বয়সী একজন নারী, যাকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে, তখন তার শরীরে কোনও প্রাণচিহ্ন পাওয়া যায়নি। এছাড়া ৪৫ বছর বয়সী এক পুরুষকেও উদ্ধার করা হয়, পরে যাকে মৃত ঘোষণা করা হয়, জানিয়েছে এমডিএ।

ইরান ইসরায়েলে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর ইসরায়েলের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। দেশটির সেনাবাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এ কথা জানিয়েছে।

এক্সে দেওয়া পোস্টে তারা লিখেছে, ‌‘ইরানের ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টি শনাক্ত হওয়ার পর-ই বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ার্নিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে।’ সেখানে আরও বলা হয়, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী হামলার উৎস শনাক্ত করছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী উৎসকে লক্ষ্য করে প্রতিরোধমূলক অভিযানে নামছে। তবে, ইসরায়েলের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তথা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘শতভাগ দুর্ভেদ্য না’ উল্লেখ করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, তারা যেন সমস্ত নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলে।

এর আগে ইরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় নজিরবিহীন বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে বিভিন্ন অঞ্চলে একাধারে চালানো হামলায় দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনীর অন্তত পাঁচ শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি ও রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি।

জবাবে অন্তত ১০০ ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে পাল্টা হামলা চালায় ইরান। শুক্রবার রাতে চালানো ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ-৩’ নামের ওই অভিযানে ইসরায়েলের তেল আবিবে বিস্ফোরণের শব্দ ও ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। পরপর দুই দফায় ইসরায়েলে এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এ সময় সাইরেন বেজে ওঠে এবং বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। 

এর আগে ইসরায়েলে দফায় দফায় হামলায় নিহত হয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত রাজনীতিক আলি শামখানি। অন্তত ২০০ ‍যুদ্ধবিমান দিয়ে চালানো ইরানের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ হামলায় প্রাণ গেছে ছয় পরমাণু বিজ্ঞানীরও। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনা। ভোর থেকে দিনভর দফায় দফায় এ হামলা হয়। 

বেসরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হন ৩২০ জন। এটাকে ‘ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ বলে বর্ণনা করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। জাতিসংঘকে লেখা চিঠিতে তিনি বলেন, নিরাপত্তা কাউন্সিলের উচিত বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসা।

ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির প্রেক্ষাপটে গতকাল শুক্রবার রাতেও ইরানে হামলা অব্যাহত রাখে ইসরায়েল। সামরিক স্থাপনা ও ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণের স্থানকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ