ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে শতাধিক লোকজন আহত হয়েছেন। এ সময় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে মেহারী ইউনিয়নের শিমরাইল সাতপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. আবদুল আওয়াল এবং একই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফা কামালের সমর্থিত লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। মোস্তফা কামাল বর্তমানে হজ পালনে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

কসবা থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের শিমরাইল সাতপাড়া এলাকায় বিএনপির দুই নেতা মো.

আবদুল আওয়াল ও মোস্তফা কামালের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। আজ দুপুরে একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মোস্তফা কামালের সমর্থিত লোকজন এলাকায় ককটেল ও লোহার রড নিয়ে আবদুল আওয়ালের সমর্থিত ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুল হান্নানের বাড়িঘর ও দোকানপাটে ভাঙচুর চালান। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষ চলাকালীন দুই পক্ষের লোকজনই দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লাটিসোঁটা, দা, ছুরি ও টেঁটা নিয়ে হামলাসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শতাধিক লোকজন আহত হন।

খবর পেয়ে কসবা থানার পুলিশ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাঁটজনকে আটক করেছে।

সংঘর্ষে কামাল মিয়া (২৪), জসিম উদ্দিন (৪০), কিবরিয়া (৫০) ও টেঁটাবিদ্ধ সুমন মিয়াকে (৪৫) উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। অন্য আহত ব্যক্তিরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল কাদের প্রথম আলোকে জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আবদুল আওয়াল ও সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই মামলা দেয়নি। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।

নাসিরনগরে সংঘর্ষে আহত ২০

এদিকে আজ সকালে নাসিরনগর উপজেলার কুলিকুন্ডা গ্রামে জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুলিকুন্ডা গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কাউসার মিয়া প্রতিবেশী বিএনপি সমর্থক মোহাম্মদ এরশাদ মিয়ার বাড়ির দুই শতক জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণের কাজ চালিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় এরশাদ মিয়া আদালতে মামলা করেন। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় একাধিক সালিসি সভা হয়। সম্প্রতি উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে ঘটনা মীমাংসায় একটি সালিসি সভা হয়। সেই সভার সিদ্ধান্তকে অমান্য করে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাউসার মিয়া শতাধিক লোকজন নিয়ে প্রতিপক্ষ বিএনপি সমর্থক এরশাদের বাড়িঘরে হামলা চালান বলে অভিযোগ। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষ হয়।

খবর পেয়ে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলমের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় ওসিসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন।

নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল আওয় ল ক ন দ র কর ন স রনগর পর স থ ত ব এনপ র শত ধ ক এল ক য় সমর থ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘দেশটা তোমার বাপের নাকি’ গাওয়ার পর পালিয়ে থাকতে হয়েছিল

শিল্পীর সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ