বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন জায়ান হাকিমের
Published: 20th, June 2025 GMT
উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। তাঁর খেলায় আছে স্কিল, গতি আর গোলের ক্ষুধা। ইংল্যান্ডের অষ্টম টায়ারের ক্লাব অ্যান্সটে নোম্যাডসের জার্সি গায়ে গত মৌসুমে ৫৫ ম্যাচে করেছেন ১৮ গোল। ইংলিশ ফুটবলের পেশাদার ঘরানায় বেড়ে ওঠা এ লেফট ফুটেড সেন্টার ফরোয়ার্ডকে নিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে।
বাংলাদেশ জাতীয় দলে নাম্বার নাইনের পজিশনে বহুদিনের আক্ষেপটা জায়ান মোহাম্মদ জুনায়েদ হাকিমের মাধ্যমে ঘুচবে বলে মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধারা। হামজা দেওয়ান চৌধুরী-শমিত সোমদের পাস থেকে ২৬ বছর বয়সী জায়ান প্রতিপক্ষের জাল কাঁপাবেন– এমন স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
তাদের সেই স্বপ্নপূরণে কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ইংলিশ প্রবাসী এ ফুটবলারকে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। হামজা চৌধুরীর বন্ধু জায়ান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে খেলার আগ্রহ দেখিয়ে পাসপোর্ট করার জন্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পাঠিয়েছেন বাফুফের কাছে।
লেস্টারে জন্ম নেওয়া জায়ানের ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল আরও উজ্জ্বল। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের তৃতীয় টায়ারের ক্লাব ম্যান্সফিল্ড টাউনের মধ্য দিয়ে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা তাঁর। উচ্চতা ও খেলায় আক্রমণাত্মক উপস্থিতির কারণে ডিফেন্ডারদের ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন জায়ান। আগামী ৯ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ সামনে রেখে আলোচনায় চলে আসা জায়ানই হতে পারেন বাংলাদেশের ফুটবলের পারফেক্ট নাম্বার নাইন।
জায়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তাঁর নানার হাত ধরে। তাঁর নানার বাড়ি নোয়াখালী, তিনি বিয়ে করেছেন স্প্যানিশ নারীকে। জায়ানের মা বিয়ে করেছেন অ্যান্টিগার এক নাগরিককে। বাবার সূত্র ধরে ২০২৩ সালে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারমুডার হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন। একই সঙ্গে বারমুডা অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে সাত ম্যাচ খেলে গোল করেছেন চারটি।
ফিফার নিয়মে থেকে নানার পরিচয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন জায়ান। এ জন্য তাঁকে পার হতে হবে বেশ কয়েকটি ধাপ। শুরুতে হবে জন্মনিবন্ধন। এরপর তাঁর ইংল্যান্ড ও বারমুডার ডুয়েল সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেটের পর বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হবে। পাসপোর্ট হলে ইংল্যান্ড এফএ, ক্লাব ও ফিফা থেকে ছাড়পত্র লাগবে।
প্রক্রিয়া যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বাংলাদেশি হয়ে যেতে পারেন জায়ান। হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচেই রয়েছে তাঁর অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা। সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ও জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান, ‘জায়ান হাকিমের পাসপোর্ট করার জন্য সব কাগজপত্র আমরা হাতে পেয়েছি। সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দেবেন কীভাবে
আজ থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে। দেশের প্রায় ১ কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। করযোগ্য আয় থাকলে টিআইএনধারীদের রিটার্ন দিতে হয়।
গত বছর থেকে নির্দিষ্ট এলাকার অধিক্ষেত্রের ব্যক্তি করদাতা, সারা দেশের ব্যাংকে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়। গতবার ১৭ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন।
এবার দেখা যাক কীভাবে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেবেন।
কোথায় দেবেন
সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন।
অনলাইনে রিটার্ন জমার আগে প্রথমে করদাতাকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন নিতে করদাতার নিজের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর লাগবে। এ দুটি দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে। অনলাইনে রিটার্ন জমা দিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তি রসিদ মিলবে।
কীভাবে দেবেন
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন তথা ই-রিটার্ন দিতে করদাতাকে কোনো কাগজপত্র আপলোড করতে বা জমা দিতে হবে না। শুধু ওই সব দলিলাদির তথ্য দিলেই হবে। যেমন সনাতনি পদ্ধতিতে চাকরিজীবীদের আয়ের বা বেতন-ভাতার প্রমাণপত্র হিসেবে ব্যাংক হিসাবের এক বছরের লেনদেন বিবরণী (স্টেটমেন্ট) জমা দিলেই চলবে। আগের বছরের ১ জুলাই থেকে পরের বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত (অর্থবছর) সময়ের ব্যাংক হিসাবের স্থিতি, সুদের তথ্য ও ব্যাংক হিসাবের নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য দিতে হবে।
কীভাবে কর দেবেন
করদাতারা ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদ অথবা অন্য কোনো মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অ্যাপ ব্যবহার করে ঘরে বসেই কর পরিশোধ করে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন।
অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে সমাধানের জন্য রাজস্ব বোর্ডের কর্মীরা কল সেন্টার এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সেবা প্রদান করবেন।
যেসব দলিলের তথ্য প্রয়োজন
রিটার্ন জমার সময় নিজের প্রয়োজন অনুসারে কিছু কাগজপত্রের তথ্য লাগবে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিস থেকে এসব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে হবে। যেসব কাগজপত্রের লাগবে, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বেতন খাতের আয়ের দলিল, সিকিউরিটিজের ওপর সুদ আয়ের সনদ, ভাড়ার চুক্তিপত্র, পৌরকরের রসিদ, বন্ধকি ঋণের সুদের সনদ, মূলধনি সম্পদের বিক্রয় কিংবা ক্রয়মূল্যের চুক্তিপত্র ও রসিদ, মূলধনি ব্যয়ের আনুষঙ্গিক প্রমাণপত্র, শেয়ারের লভ্যাংশ পাওয়ার ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট, সুদের ওপর উৎসে কর কাটার সার্টিফিকেট।
বিনিয়োগ করে কর রেয়াত পেতে চাইলেও কিছু কাগজপত্র লাগবে। যেমন জীবনবিমার কিস্তির প্রিমিয়াম রসিদ, ভবিষ্য তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ, ঋণ বা ডিবেঞ্চার, সঞ্চয়পত্র, শেয়ারে বিনিয়োগের প্রমাণপত্র, ডিপোজিট পেনশন স্কিমে (ডিপিএস) চাঁদার সনদ, কল্যাণ তহবিলের চাঁদা ও গোষ্ঠী বিমার কিস্তির সনদ, জাকাত তহবিলে দেওয়া চাঁদার সনদ।