উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। তাঁর খেলায় আছে স্কিল, গতি আর গোলের ক্ষুধা। ইংল্যান্ডের অষ্টম টায়ারের ক্লাব অ্যান্সটে নোম্যাডসের জার্সি গায়ে গত মৌসুমে ৫৫ ম্যাচে করেছেন ১৮ গোল। ইংলিশ ফুটবলের পেশাদার ঘরানায় বেড়ে ওঠা এ লেফট ফুটেড সেন্টার ফরোয়ার্ডকে নিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে।

বাংলাদেশ জাতীয় দলে নাম্বার নাইনের পজিশনে বহুদিনের আক্ষেপটা জায়ান মোহাম্মদ জুনায়েদ হাকিমের মাধ্যমে ঘুচবে বলে মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধারা। হামজা দেওয়ান চৌধুরী-শমিত সোমদের পাস থেকে ২৬ বছর বয়সী জায়ান প্রতিপক্ষের জাল কাঁপাবেন– এমন স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা।

তাদের সেই স্বপ্নপূরণে কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ইংলিশ প্রবাসী এ ফুটবলারকে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। হামজা চৌধুরীর বন্ধু জায়ান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে খেলার আগ্রহ দেখিয়ে পাসপোর্ট করার জন্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পাঠিয়েছেন বাফুফের কাছে।

লেস্টারে জন্ম নেওয়া জায়ানের ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল আরও উজ্জ্বল। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের তৃতীয় টায়ারের ক্লাব ম্যান্সফিল্ড টাউনের মধ্য দিয়ে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা তাঁর। উচ্চতা ও খেলায় আক্রমণাত্মক উপস্থিতির কারণে ডিফেন্ডারদের ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন জায়ান। আগামী ৯ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ সামনে রেখে আলোচনায় চলে আসা জায়ানই হতে পারেন বাংলাদেশের ফুটবলের পারফেক্ট নাম্বার নাইন।

জায়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তাঁর নানার হাত ধরে। তাঁর নানার বাড়ি নোয়াখালী, তিনি বিয়ে করেছেন স্প্যানিশ নারীকে। জায়ানের মা বিয়ে করেছেন অ্যান্টিগার এক নাগরিককে। বাবার সূত্র ধরে ২০২৩ সালে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারমুডার হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন। একই সঙ্গে বারমুডা অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে সাত ম্যাচ খেলে গোল করেছেন চারটি।

ফিফার নিয়মে থেকে নানার পরিচয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন জায়ান। এ জন্য তাঁকে পার হতে হবে বেশ কয়েকটি ধাপ। শুরুতে হবে জন্মনিবন্ধন। এরপর তাঁর ইংল্যান্ড ও বারমুডার ডুয়েল সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেটের পর বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হবে। পাসপোর্ট হলে ইংল্যান্ড এফএ, ক্লাব ও ফিফা থেকে ছাড়পত্র লাগবে।

প্রক্রিয়া যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বাংলাদেশি হয়ে যেতে পারেন জায়ান।  হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচেই রয়েছে তাঁর অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা। সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ও জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান, ‘জায়ান হাকিমের পাসপোর্ট করার জন্য সব কাগজপত্র আমরা হাতে পেয়েছি। সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ টবল র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশি পাসপোর্ট-এনআইডি থাকার বিষয়ে কী বলছেন টিউলিপ, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া কী

যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) টিউলিপ সিদ্দিক অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে ‘ভুয়া’ পরিচয়পত্র ব্যবহার করছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে টিউলিপের এই অভিযোগের কথা তুলে ধরা হয়। টিউলিপের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব থাকার বিষয়ে প্রথম আলো ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমস যৌথ অনুসন্ধান করে। এই যৌথ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন গতকাল প্রকাশিত হয়।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টিউলিপের নামে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) রয়েছে। তিনি এখানকার ভোটার। বাংলাদেশি পাসপোর্টও করেছিলেন তিনি।

বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমের যৌথ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে টিউলিপ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন।

দ্য টেলিগ্রাফ যেসব নথিপত্র দেখেছে, তাতে দেখা যায়, সাবেক লেবার মন্ত্রী টিউলিপের বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে, যা তাঁর আগের দাবির সঙ্গে মেলে না।

তবে গতকাল টিউলিপ জোর দিয়ে বলেন, তাঁকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে এসব কাগজপত্র জাল করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের এই এমপির একজন মুখপাত্র দ্য টেলিগ্রাফকে বলেন, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ প্রায় এক বছর ধরে টিউলিপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালাচ্ছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ) টিউলিপের আইনজীবী দলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তারা তাদের ভিত্তিহীন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি। এবার তারা এমন কাগজপত্র জাল করেছে, যা পুরোপুরি ভুয়া এবং জাল করার সব লক্ষণ স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে।

টিউলিপের মুখপাত্র বলেন, এসব কাগজপত্রের সত্যতা নিয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গুরুতর অনেক প্রশ্ন উঠেছে।

নথিপত্রে দেখা যাচ্ছে, ২০০১ সালে ১৯ বছর বয়সে টিউলিপ বাংলাদেশের পাসপোর্ট পেয়েছিলেন। আর ২০১১ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) পেয়েছিলেন।

নথিপত্র আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে, ২০১১ সালে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট কার্যালয়ে টিউলিপ পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদন করেছিলেন।

তবে টিউলিপের সহযোগীরা নথিপত্রে নানা ‘অসংগতি ও অনিয়ম’ তুলে ধরেছেন, যা এর সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

যেমন নথিপত্রে টিউলিপের ঠিকানা হিসেবে ঢাকার একটি বাড়ির কথা উল্লেখ আছে, যা তাঁর খালা ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মালিকানাধীন।

টিউলিপের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জোর দিয়ে বলেছে, তিনি কোনো দিন ঢাকায় থাকেননি। টিউলিপ কখনো বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছিলেন—এটাও তাঁরা স্পষ্টভাবে নাকচ করে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, তিনি শুধু ছোটবেলায় একটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনশেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনের ‘উপহার’, লন্ডনে মিলল টিউলিপের আরও একটি ফ্ল্যাট০৫ জানুয়ারি ২০২৫যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ
  • বাংলাদেশি পাসপোর্ট-এনআইডি থাকার বিষয়ে কী বলছেন টিউলিপ, যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া কী