মাথার ওপর দুপুর ১২টার খাড়া সূর্য নিয়ে খেলতে হচ্ছে। তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রির কাছাকাছি, আর্দ্রতাও বিশ্রি রকমের; ৬০ শতাংশ। এমন আবহাওয়ার মধ্যে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে হচ্ছে, যা নিয়ে ভীষণ বিরক্ত ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলো।
টেলিভিশনে ইউরোপের দর্শকদের ধরে রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের এই গরমে মাঠে নামতে হচ্ছে দলগুলোকে। সময়ের পার্থক্যের কারণে এ ম্যাচগুলো সন্ধ্যায় বাড়িফেরা ইউরোপিয়ান দর্শকদের কতটুকু আকর্ষণ করছে জানা যায়নি। তবে মাঠে গ্যালারির দর্শক একেবারেই টানতে পারছে না।
ফিফার নিয়মে রয়েছে ৩২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা থাকলে ম্যাচে ‘কুলিং ব্রেক’ দিতে হবে। গতবার কোপা আমেরিকা আসরে এমনটা দেওয়া হয়েছিল। ক্লাব বিশ্বকাপেও মানা হচ্ছে সেই নিয়ম। এমন অবস্থায় পিএসজির কাছে ৪-০ গোলে হারার পর এই গরমকে দায়ী করছেন অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মিডফিল্ডার মার্কোস লরেন্তি।
‘ভয়ংকর গরম। আমার পায়ের আঙুল ও নখ ব্যথা করছিল। স্বাভাবিকভাবে দৌড়াতে পারছিলাম না। যদিও এটি সবার জন্য একই রকম, তাই কোনো অভিযোগ করছি না। তবে এটি ফুটবল ম্যাচ খেলার জন্য আদর্শ পরিবেশ নয়।’
পিএসজির কোচ লুইস এনিরকেও স্বীকার করেছেন ব্যাপারটি। ‘ম্যাচটিতে গরমের প্রভাব ছিল। ইউরোপিয়ান টেলিভিশন দর্শকদের জন্য সময়টা দুর্দান্ত, তবে এতে করে দলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
কোপা আমেরিকার আগের আসরটি যুক্তরাষ্ট্রে এই সময়েই হয়েছিল। সেবারও অভিযোগ উঠেছিল। দুই ফুটবলারকে পানিশূন্যতায় কাবু হয়ে হাসপাতালে যেতে হয়। জুনের এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু জায়গায় তীব্র গরম থাকে। ফ্লোরিডা, লস অ্যাঞ্জেলেস, ওয়াশিংটন ও ফিলাডেলফিয়ায় দিনের তাপমাত্র ৩২ ডিগ্রি ছাপিয়ে যায়।
সন্ধ্যার পরও তাপমাত্রা ত্রিশের কাছাকাছি থাকে, যা নিয়ে ফুটবলারদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিশ্বসংস্থা ‘ফিপ্রো’ ফিফাকে সূচি পরিবর্তনের অনুরোধ জানিয়েছে। কেননা আগামী বছর ঠিক এই সময়েই যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও যদি দিনের বেলায় ম্যাচ রাখা হয়, তাহলে তা ফুটবলাদের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠবে। গতকাল রিয়াল মাদ্রিদ আর আল হিলালের যে ম্যাচটি মায়ামিতে হয়েছে, সেটি স্থানীয় সময় বেলা ৩টায় মাঠে গড়িয়েছিল। তখনও পারদ ৩২ ডিগ্রিতেই স্থির ছিল। সঙ্গে আর্দ্রতার কারণে অতিরিক্ত ঘাম। কোনোভাবেই নিজেদের খেলাটা খেলতে পারছেন না তারকা ফুটবলাররা।
আসরের ফেভারিট দলগুলোর মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদ, বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড, বোকা জুনিয়র্স, ম্যানচেস্টার সিটি আর ইন্টার মায়ামি এই মুহূর্তে ফ্লোরিডায় ক্যাম্প করছে। যেখানে অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে তারা বিকেলের অনুশীলন সন্ধ্যার পর নিয়ে যাওয়ার জন্য আয়োজকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে।
এমনকি স্বাগতিক দল মেসিদের ইন্টার মায়ামিও প্রথম ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল স্থানীয় সময় রাত ৮টায়। তখনও মাঠে তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি। তাপে পোড়া এই ক্লাব বিশ্বকাপে তাই এখন পর্যন্ত সেরা ছন্দ দেখাতে পারেনি বড় দলগুলো।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ল ব ব শ বক প ক ল ব ব শ বক প য ক তর ষ ট র ৩২ ড গ র র জন য দলগ ল ইউর প ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
আল্লাহর ৯৯ নাম ও তার ফজিলত
মানুষ তার রবকে যত বেশি চেনে, তার ইমান তত দৃঢ় হয়, ভালোবাসা তত গভীর হয়, আমল তত নিখুঁত হয়। আল্লাহর পরিচয় জানার সর্বোত্তম উপায় হলো তাঁর সুন্দর নাম ও গুণাবলি জানা। কোরআনে আল্লাহ নিজেই ঘোষণা করেছেন, “আল্লাহরই সবচেয়ে সুন্দর নামসমূহ রয়েছে। সুতরাং তোমরা তাঁকে সে নামগুলোর মাধ্যমে ডাকো।” (সুরা আ’আরাফ, আয়াত: ১৮০)
হাদিসে এসেছে, “আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে। যে এগুলো মুখস্থ করে, বুঝে ও আমল করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৭৩৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৭৭)
এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহর নামগুলো জানা, সেগুলো দিয়ে দোয়া করা ও জীবনে প্রয়োগ করা হলো ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
আরও পড়ুনইসমে আজমের শক্তি ও রহস্য৩০ জুন ২০২৫আল্লাহর ৯৯ নামের তালিকা১. আল্লাহ – উপাসনার একমাত্র যোগ্য
২. আর-রহমান – অসীম দয়ালু
৩. আর-রহিম – পরম করুণাময়
৪. আল-মালিক – জগতের একচ্ছত্র মালিক
৫. আল-কুদ্দুস – পরম পবিত্র
৬. আস-সালাম – শান্তি ও নিরাপত্তার উৎস
৭. আল-মুমিন – নিরাপত্তা দানকারী
৮. আল-মুহাইমিন – অভিভাবক ও রক্ষক
৯. আল-আজিজ – পরাক্রমশালী
১০. আল-জাব্বার – ইচ্ছামতো সবকিছু নিয়ন্ত্রণকারী
১১. আল-মুতাকাব্বির – মহিমাময়
১২. আল-খালিক – স্রষ্টা
১৩. আল-বারি – নিখুঁতভাবে সৃষ্টিকারী
১৪. আল-মুসাওয়ির – আকৃতি দানকারী
১৫. আল-গফ্ফার – অপরাধ ক্ষমাকারী
১৬. আল-কাহহার – প্রভাবশালী
১৭. আল-ওয়াহ্হাব – সীমাহীন দানশীল
১৮. আর-রাযযাক – রিজিকদাতা
১৯. আল-ফাত্তাহ – উন্মোচনকারী
২০. আল-আলিম – সর্বজ্ঞ
২১. আল-ক্বাবিদ – সংযমকারী
২২. আল-বাসিত – প্রাচুর্যদানকারী
২৩. আল-খাফিদ – মর্যাদা হ্রাসকারী
২৪. আর-রাফি – মর্যাদা উন্নীতকারী
২৫. আল-মুই’জ্জ – সম্মান দানকারী
২৬. আল-মুযিল্ল – অপমান দানকারী
২৭. আস-সামি – সর্বশ্রোতা
২৮. আল-বাসীর – সর্বদ্রষ্টা
২৯. আল-হাকাম – বিচারক
৩০. আল-আদল – ন্যায়পরায়ণ
৩১. আল-লতিফ – সূক্ষ্মদর্শী ও সদয়
৩২. আল-খবির – সব বিষয়ে অবহিত
৩৩. আল-হালিম – সহনশীল
৩৪. আল-আজিম – মহান
৩৫. আল-গফুর – ক্ষমাশীল
৩৬. আশ-শাকুর – কৃতজ্ঞতা গ্রহণকারী
৩৭. আল-আলী – সর্বোচ্চ
৩৮. আল-কবির – মহত্তম
৩৯. আল-হাফিজ – সংরক্ষণকারী
৪০. আল-মুকিত – জীবিকার যোগানদাতা
৪১. আল-হাসিব – হিসাব গ্রহণকারী
৪২. আল-জলিল – গৌরবময়
৪৩. আল-করিম – উদার দাতা
৪৪. আর-রকিব – তত্ত্বাবধায়ক
৪৫. আল-মুজিব – সাড়া দানকারী
৪৬. আল-ওয়াসি – সীমাহীন
৪৭. আল-হাকিম – প্রজ্ঞাময়
৪৮. আল-ওয়াদুদ – প্রেমময়
৪৯. আল-মাজিদ – মহিমান্বিত
৫০. আল-বা’স – পুনরুত্থানকারী
৫১. আশ-শাহিদ – সাক্ষী
৫২. আল-হাক্ক – পরম সত্য
৫৩. আল-ওকিল – ভরসাযোগ্য
৫৪. আল-ক্বাওই – শক্তিশালী
৫৫. আল-মাতিন – দৃঢ়শক্তিধর
৫৬. আল-ওয়ালি – সাহায্যকারী অভিভাবক
৫৭. আল-হামিদ – প্রশংসার অধিকারী
৫৮. আল-মুহসি – গণনাকারী
৫৯. আল-মুবদি – সৃষ্টির সূচনা দানকারী
৬০. আল-মুই’দ – পুনরায় সৃষ্টি দানকারী
৬১. আল-মুহই – জীবনদাতা
৬২. আল-মুমিত – মৃত্যুদাতা
৬৩. আল-হাইয়্যু – চিরঞ্জীব
৬৪. আল-কাইয়ুম – ধারক ও পালনকর্তা
৬৫. আল-ওয়াজিদ – সন্ধানকারী
৬৬. আল-মাজিদ – মহিমান্বিত
৬৭. আল-ওয়াহিদ – একক
৬৮. আস-সামাদ – অমুখাপেক্ষী
৬৯. আল-কাদির – সর্বশক্তিমান
৭০. আল-মুকতাদির – নিয়ন্ত্রণকারী
৭১. আল-মুকাদ্দিম – অগ্রগামীকারী
৭২. আল-মুআখখির – পশ্চাদপসারক
৭৩. আল-আউয়াল – সবার আগে
৭৪. আল-আখির – সবার পরে
৭৫. আয-যাহির – প্রকাশ্য
৭৬. আল-বাতিন – অদৃশ্য
৭৭. আল-ওয়ালি – অভিভাবক
৭৮. আল-মুতাআলি – মর্যাদাবান
৭৯. আল-বার্র – কল্যাণকারী
৮০. আত-তাওয়াব – তওবা গ্রহণকারী
৮১. আল-মুনতাকিম – প্রতিশোধ গ্রহণকারী
৮২. আল-আফু – ক্ষমাশীল
৮৩. আর-রউফ – দয়ালু
৮৪. মালিকুল মুলক – সবকিছুর মালিক
৮৫. যুল জালালি ওয়াল ইকরাম – মহিমা ও সম্মানের অধিকারী
৮৬. আল-মুকসিত – ন্যায়বিচারকারী
৮৭. আল-জামি – একত্রকারী
৮৮. আল-গানি – অমুখাপেক্ষী
৮৯. আল-মুগনি – সম্পদদাতা
৯০. আল-মানি – বাধাদানকারী
৯১. আদ-দার – ক্ষতিসাধনকারী
৯২. আন-নাফি – উপকার দানকারী
৯৩. আন-নূর – আলো
৯৪. আল-হাদি – পথপ্রদর্শক
৯৫. আল-বাদি – অভিনব স্রষ্টা
৯৬. আল-বাকি – চিরস্থায়ী
৯৭. আল-ওয়ারিস – উত্তরাধিকারী
৯৮. আর-রশিদ – দিশাদাতা
৯৯. আস-সবুর – ধৈর্যশীল
আরও পড়ুনআল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নাম ‘আল্লাহ’০২ জুন ২০২৫আল্লাহর নামের ফজিলত১. আল্লাহর নাম দ্বারা দোয়া কবুল হয়: “সবচেয়ে সুন্দর নাম আল্লাহরই। তাই সে নামগুলো দিয়ে তাঁকে ডাকো।” (সুরা আ’আরাফ, আয়াত: ১৮০)
২. আল্লাহর নাম মুখস্থ ও বোঝা জান্নাতের পথ: “যে ব্যক্তি আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম মুখস্থ রাখবে ও বুঝবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৭৭)
৩. আল্লাহর নাম জীবনে প্রভাব ফেলে: ইমাম ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেছেন: “আল্লাহর নামগুলো কেবল মুখস্থ রাখার জন্য নয়, বরং সেগুলো মানুষকে আল্লাহর মহিমা ও গুণাবলির প্রতি জাগ্রত করে।” (ইবনুল কাইয়িম, আল-নুনিয়্যা, ২/৯১, দারুস সালাম, রিয়াদ, ২০০৫)
আল্লাহর সুন্দর নামগুলো হলো ইমানের রশ্মি, হৃদয়ের প্রশান্তি এবং দোয়ার চাবিকাঠি। মুসলমানের উচিত এই নামগুলো মুখস্থ করা, দোয়া-ইবাদতে ব্যবহার করা এবং জীবনে প্রতিফলিত করা। যে ব্যক্তি সত্যিকার অর্থে আল্লাহর নামগুলো জানবে ও মানবে, তার ইমান হবে দৃঢ়, আমল হবে খাঁটি, আর জীবন হবে প্রশান্তির।
আরও পড়ুনমহান আল্লাহর হাসি১১ জুলাই ২০২৫