থানা ঘেরাও, ইসলামী আন্দোলনের নেতাকে ছাড়িয়ে নিলেন কর্মীরা
Published: 20th, June 2025 GMT
থানা ঘেরাওয়ের পর চাঁদাবাজির মামলায় আটক ইসলামী আন্দোলনের এক নেতাকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নগরীর চান্দগাঁও থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় দলটির এই থানা শাখার সেক্রেটারি হাবিবুর রহমানকে। এর পর থানা থেকে সরে যান বিক্ষোভকারী নেতাকর্মীরা। নগরীর কাপ্তাই রাস্তা এলাকায় চাঁদাবাজির অভিযোগে এক মামলায় গতকাল সকালে তাঁকে আটক করে পুলিশ। বিষয়টি জানার পরই থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন নেতাকর্মীরা।
কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন মো.
থানায় গিয়ে জানান, হাবিবুরকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। তারা তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে |পুলিশ মামলার সাক্ষীদের থানায় ডেকে নেন এবং হাবিবুরকে চেনেন কিনা জানতে চান। তারা
চেনেন না বলে জানালে পুলিশ ইসলামী আন্দোলনের নেতা নুরুল আলমের জিম্মায় ছেড়ে দেন হাবিবুরকে।
ইসলামী যুব আন্দোলনের চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান সমকালকে বলেন, হাবিবুর রহমান চাঁদাবাজি বন্ধ করতে চাইলে চাঁদাবাজ চক্র তাঁকে ফাঁসিয়ে দিতে মিথ্যা মামলা করেছে। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া কয়েকজনের বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে থানায় গেলে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছিল।
ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, মামলার বাদী ও সাক্ষীদের থানায় ডাকা হয়েছিল। সাক্ষীরা বলেছেন, হাবিবুরকে তারা চেনেন না। তখন সবকিছু বিবেচনা করে তাঁকে এক নেতার জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবীর চৌধুরী সমকালকে বলেন, কারও বিরুদ্ধে মামলা হলে সেই ব্যক্তি অপরাধী নাকি নির্দোষ, সেটি আদালতেই প্রমাণ হবে। থানা ঘেরাও করে হাবিবুরকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। পুলিশের ছেড়ে দেওয়া আইনসংগত হয়নি। এখন অন্য আসামিরা এর সুযোগ নেবেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন এমন ব্যক্তিকে আসামি করা হয়ে থাকলে সেই বাদীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হ ব ব রক ন ত কর ম কর ম র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)