বেহালাটি আপনি হাতে তুলবেন কীভাবে, সেটাই প্রশ্ন। কারণ, সেটি দেখতে গেলে আগে চাই মাইক্রোস্কোপ। এতটাই সরু একটি বেহালা তৈরির দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাজ্যের লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পদার্থবিজ্ঞানী দাবি করেছেন যে তাঁরা ‘বিশ্বের সবচেয়ে ছোট বেহালা’ বানিয়েছেন। এর দৈর্ঘ্য মাত্র ৩৫ মাইক্রন, মানে ১ মিটারের ১০ লাখ ভাগের ১ ভাগ। প্রস্থ ১৩ মাইক্রন। প্লাটিনাম দিয়ে তৈরি বেহালাটি এতই ছোট যে তা মানুষের একটি চুলেও অনায়াস রাখা যাবে।

মনে রাখতে হবে, আশ্চর্যজনক এই অতি ক্ষুদ্র বাদ্যযন্ত্রকে ‘রূপক অর্থে’ বেহালা বলা হচ্ছে। এটিকে সাধারণ বেহালার মতো বাজানো যায় না। বেহালাটি মূলত একধরনের ন্যানো–ছাপচিত্র, অর্থাৎ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আকৃতিতে তৈরি একটি প্রোটোটাইপ। এর মধ্য দিয়ে লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ন্যানোপ্রযুক্তি গবেষণার সক্ষমতা তুলে ধরা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ক্ষুদ্র শিল্প তৈরি সহজ কাজ নয়। গবেষকেরা প্রথমে একটি চিপে জেলিজাতীয় পদার্থ ছড়িয়ে দিয়ে তাতে উত্তপ্ত সুচের মতো একটি যন্ত্র দিয়ে নকশা আঁকেন। এরপর সেই জেলি ধুয়ে ফেলে প্লাটিনামের পাতলা স্তর বসানো হয়। প্রোটোটাইপ বা পরীক্ষামূলক সংস্করণ তৈরি করতে সময় লাগে তিন ঘণ্টা। কিন্তু চূড়ান্ত সংস্করণ পেতে কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটিই ব্যাপক নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষাগারে পরিচালিত হয়।

লাফবরো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায়োগিক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক কেলি মরিসন বলেন, ‘এটা নিছক খেলা নয়। এর মধ্য দিয়ে আমরা নানা বস্তু আলো, চৌম্বক বা বিদ্যুতের সঙ্গে কীভাবে প্রতিক্রিয়া করে, তা শিখেছি। এখান থেকে ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির ভিত্তি তৈরি হচ্ছে।’

মরিসন বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার যাঁরা একটু গভীরভাবে করেন, তাঁরা সব সময় দ্রুততর, উন্নততর ও অধিক দক্ষ কিছুর সন্ধানে থাকেন। তার মানে দাঁড়ায়, সবকিছু আরও ছোট হয়ে আসছে। এই ক্ষুদ্র বেহালা তাই শুধু রসিকতা নয়, বরং এক নতুন বিজ্ঞানযাত্রার চিহ্নও।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র‍্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।

পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।

কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।

আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগে

পরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।

বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগে

বিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’

গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ