উইকেট বুঝতে না পারায় ইনিংস ছাড়েননি, জানালেন শান্ত
Published: 21st, June 2025 GMT
গল টেস্টে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে ড্র করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া ২৯৬ রানের লক্ষ্যে নেমে শেষ বেলায় লঙ্কানরা ৩২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৭২ রান তোলে। বাংলাদেশ কিছু কম রানের লিড নিয়ে লঙ্কানদের ৫০-৬০ ওভার ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিলে টেস্টের ফল ভিন্ন হতে পারত বলে মনে করা হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে ম্যাচ শেষে টেস্ট অধিনায়ক শান্তকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, পঞ্চম দিন সকালেও তারা বুঝতে পারেননি উইকেট কেমন আচরণ করবে। এছাড়া বৃষ্টি তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে বলে দাবি করেছেন। শান্তর মতে, বৃষ্টি না হলে প্রথম সেশনে ব্যাটিং করে লঙ্কানদের ৬০-৬৫ ওভারের জন্য ব্যাটিংয়ে পাঠাতে পারতেন।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চম দিন যেমন উইকেট প্রত্যাশা করেছিলাম, ওমন হয়নি। চতুর্থ দিনও আরামে ব্যাটিং করা যাচ্ছিল। আমরা এমন একটা জায়গায় যেতে চাচ্ছিলাম যেখান থেকে হারার সম্ভাবনা কম। বৃষ্টি প্লান পরিবর্তন করে দিয়েছি। আমরা সকালেও জানতাম না, উইকেট কেমন আচরণ করবে। সেজন্য এক ঘণ্টা বেশি সময় নিয়েছি (ব্যাটিংয়ে)। লাঞ্চ পর্যন্ত (বৃষ্টি না হলে) ব্যাটিং করতে পারলে, (শ্রীলঙ্কাকে) ৬০-৭০ ওভার ব্যাটিং করানো গেলে একটা সুযোগ তৈরি হতো।’
প্রথম ইনিংসে নাজমুল শান্ত ও মুশফিকের সেঞ্চুরি এবং লিটন দাসের সেঞ্চুরি ছোঁয়া ইনিংসে ৪৯৫ রান তোলে বাংলাদেশ। পাল্টা জবাব দিয়ে শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ৪৮৫ রান তোলে। স্পিনার নাঈম হাসান পাঁচ উইকেট নেন। দুই পেসার নেন ৩ উইকেট। শান্তর মতে, পেসাররা প্রথম ইনিংসে আরেকটু ভালো বোলিং করলে এবং লিডটা বেশি হলেও একটা সুযোগ থাকত।
তিনি বলেন, ‘পেস বোলিংয়ে যদি প্রথম ইনিংসে আরেকটু ভালো বোলিং করতে পারতাম.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গল ট স ট প রথম ইন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডনে চ্যাটজিপিটি থেকে নেওয়া ভুয়া মামলা উদ্ধৃত করায় তদন্তের মুখে বাংলাদেশি আইনজীবী
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একজন আইনজীবী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টুল চ্যাটজিপিটি থেকে নেওয়া ভুয়া মামলা উদ্ধৃত করে অপেশাদার আচরণ করেছেন বলে রায় দিয়েছেন লন্ডনের আপার ট্রাইব্যুনাল (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড অ্যাসাইলাম চেম্বার)। ব্যারিস্টার মুহাম্মদ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আদালত থেকে বার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
মামলাটি যুক্তরাজ্যে প্রথম বড় কোনো উদাহরণ, যেখানে একজন আইনজীবী চ্যাটজিপিটি দ্বারা তৈরি ভুয়া রায় আদালতে ব্যবহার করেছেন। ফলে এটি পুরো আইন পেশায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের ঝুঁকি ও নৈতিকতা নিয়ে বড় আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মামলার শুনানি হয় চলতি বছরের ২৩ জুলাই এবং রায় প্রকাশিত হয় ১২ আগস্ট। রায়ে বলা হয়, ব্যারিস্টার মুজিবুর রহমান তাঁর আপিলের খসড়ায় ‘Y (China) [2010] EWCA Civ 116’ নামে একটি মামলা উদ্ধৃত করেন। কিন্তু বাস্তবে এই মামলার কোনো অস্তিত্ব নেই। প্রথমে তিনি অস্বীকার করলেও আদালতে জেরার মুখে এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হন যে এই মামলার উদ্ধৃতি এসেছে চ্যাটজিপিটি নামক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল থেকে। তবে আদালতে জমা দেওয়ার আগে তিনি এর সত্যতা যাচাই করেননি।
আদালতের বিচারপতি জাস্টিস ডভ ও জজ লিন্ডসলি বলেন, যেকোনো আইনজীবীর প্রথম দায়িত্ব হলো আদালতকে সত্য ও সঠিক তথ্য প্রদান করা। যাচাই ছাড়া এআই-সৃষ্ট কনটেন্ট ব্যবহার করা বিপজ্জনক ও অপেশাদার আচরণ। এ ঘটনায় একাধিকবার মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা দিয়ে ব্যারিস্টার মুজিবুর রহমান সততা ও পেশাদারত্বের মানদণ্ড ভঙ্গ করেছেন।
ট্রাইব্যুনাল মনে করেন, এটি ইচ্ছাকৃত ভুয়া মামলা তৈরি করার ঘটনা নয়। তাই পুলিশি তদন্ত বা আদালত অবমাননা প্রক্রিয়ার প্রয়োজন নেই। তবে এ ধরনের আচরণ আদালত ও পেশার প্রতি আস্থাকে ক্ষুণ্ন করে। এ জন্য বিষয়টি বার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ডের কাছে পাঠানো হলো, যাতে তারা তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে। বিচারপতিরা আরও উল্লেখ করেন, আদালতকে বিভ্রান্ত করার মতো শর্টকাট কোনো পথ বেছে নেওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
বার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড হলো যুক্তরাজ্যের আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এটি আইনজীবীদের পেশাগত নীতি, আচরণবিধি ও মানদণ্ড নির্ধারণ করে এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মান তদারক করে। কোনো আইনজীবী যদি আদালতে ভুয়া তথ্য দেন, অনৈতিক আচরণ করেন অথবা তাঁদের পেশাগত দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন না করেন, তাহলে বার স্ট্যান্ডার্ড বোর্ড শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে, যেমন সতর্কীকরণ, জরিমানা, সাসপেনশন বা চূড়ান্তভাবে ব্যারিস্টারি লাইসেন্স বাতিল করা।
প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার মুজিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ মামলায় তিনি আদালতে যথেষ্ট পরিমাণ নথিপত্র (সাবমিশন) জমা দিয়েছেন। কিন্তু আদালত সেগুলোকে বিবেচনায় না নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন। তিনি এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। তাঁর আইনজীবী আপিলের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।