ইরান ও গাজায় হামলার ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরব না হওয়ায় মোদির কড়া সমালোচনা সোনিয়ার
Published: 21st, June 2025 GMT
গাজা ও ইরানে ইসরায়েলের আগ্রাসী ভূমিকা ও তা নিয়ে ভারতের নীরবতার তীব্র সমালোচনায় কলম ধরলেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সর্বভারতীয় এক ইংরেজি দৈনিকে আজ শনিবার প্রকাশিত এক নিবন্ধে ভারত সরকারের নীরবতার সমালোচনা করে তিনি লিখেছেন, ‘শুধু কণ্ঠরোধই নয়, দীর্ঘকাল যাবৎ লালিত যাবতীয় মূল্যবোধও ভারত বিসর্জন দিয়েছে।’
‘দ্য হিন্দু’ পত্রিকায় প্রকাশিত সোনিয়ার ওই নিবন্ধের শিরোনাম, ‘দেরিতে হলেও ভারত এখনো সরব হতে পারে’। স্বলিখিত ওই নিবন্ধে নরেন্দ্র মোদি সরকারের সমালোচনা করে সোনিয়া লিখেছেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে দুই জাতি সমাধান সূত্রে উপনীত হতে ভারতের দীর্ঘদিনের অঙ্গীকারের নীতি থেকে সরকার পিছিয়ে এসেছে। মোদি সরকার সেই নীতি পরিত্যাগ করেছে, যা ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন গঠনের দাবি এতকাল ধরে জানিয়ে এসেছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা থেকেও সোনিয়া পিছিয়ে আসেননি। পশ্চিম এশিয়ায় ট্রাম্পের ‘ধ্বংসাত্মক ভূমিকার’ কড়া নিন্দা করে তিনি লিখেছেন, ‘সবচেয়ে দুঃখের বিষয়, একসময় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তহীন যুদ্ধংদেহী মনোভাবের সমালোচনা করেছেন যিনি সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, তিনিও পূর্বসূরিদের মতো ধ্বংসাত্মক পথ অনুসরণ করছেন।’
গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার প্রতিবাদ কংগ্রেস শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে। সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী, কেরালার ওয়েনাডের সংসদ সদস্য প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রসহ দলের শীর্ষ নেতাদের সবাই ইসরায়েলের আগ্রাসী মনোভাব ও ভারতের নীরবতার সমালোচনা করেছেন। অসুস্থতা কাটিয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে সোনিয়াও নিবন্ধ লিখে সেই সমালোচনা করলেন।
প্রথমে গাজা এবং পরে ইরানে বিনা প্ররোচনায় ইসরায়েলি আক্রমণ দেখেও ভারতের চুপ করে থাকাকে সোনিয়া ‘নৈতিক ও কূটনৈতিক ঐতিহ্য থেকে বিরক্তিকর বিচ্যুতি’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভারত শুধু নিজের কণ্ঠরোধ করেনি, প্রতিবাদী চরিত্র বিসর্জন দেয়নি, মূল্যবোধও বিসর্জন দিয়েছে।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সোনিয়া ছাড়েননি। তিনি লেখেন, তাঁর নেতৃত্বে ইসরায়েল উগ্রপন্থী আচরণে উসকানি দিয়েছে। তাঁর অতীত এটাই বোঝায়, সংলাপের রাস্তায় না হেঁটে তিনি সংঘাতকেই আঁকড়ে ধরবেন।
একইভাবে ট্রাম্পের সমালোচনা করে সোনিয়া লিখেছেন, আগ্রাসী হওয়ার জন্য তিনি নিজের গোয়েন্দাপ্রধানের মূল্যায়নও অস্বীকার করেছেন, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। সোনিয়া লেখেন, আজকের পৃথিবী এমন নেতৃত্ব দাবি করে, যা বাস্তববাদী এবং কূটনৈতিক আচরণে বিশ্বাসী, যা শক্তির উপাসক ও মিথ্যাচারী নয়।
ভারত–ইরান সম্পর্কের ইতিহাস তুলে ধরে সোনিয়া বলেছেন, ‘ইরান আমাদের বহুকালের বন্ধু। দুই দেশের মধ্যে গভীর সভ্যতাগত সম্পর্ক রয়েছে।’
১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে কাশ্মীর নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে আনা নিন্দাসূচক প্রস্তাব উত্থাপনে ইরান বাধা দিয়েছিল। ইসলামি প্রজাতন্ত্র কায়েমের পর ইরান–ভারত সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। সহযোগিতা আরও বেড়েছে, আগের আমলে যা ছিল পাকিস্তানঘেঁষা। কী রকম, সেই প্রমাণ ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধের সময় পাওয়া গিয়েছিল।
ইসরায়েলের আগ্রসী ভূমিকা ও গাজার মানবিক বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে সোনিয়া লিখেছেন, ৫৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কোথাও পুরো পরিবার, গোটা এলাকা নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। হাসপাতালগুলো ধুলায় মিশেছে। পুরো গাজা দাঁড়িয়ে আছে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
নির্বাক মোদি সরকারের নীতি বিসর্জনের সমালোচনার পর সোনিয়া নিবন্ধ শেষ করেছেন এই বলে, ‘ভারতকে স্বচ্ছভাবে স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে ও সংলাপের পরিবেশ তৈরি করতে সব রকমের কূটনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এখনো খুব বেশি দেরি হয়নি। এখনো সময় আছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র কর ছ ন ন বন ধ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আরপিও সংশোধন নিয়ে ইসির নবম কমিশন সভা বৃহস্পতিবার
রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নবম কমিশন সভা আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে।
আজ বুধবার ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) শরিফুল আলম এ তথ্য জানান।
শরিফুল আলম বলেন, ইসির নবম কমিশন সভা বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বেলা ১১টায় ইসির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সভাপতিত্ব করবেন।
সভার আলোচ্যসূচিতে রয়েছে—রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০২৫, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং বিবিধ বিষয়।