দশ লাখ টাকা ঘুষ দাবি: ফেনীতে সমন্বয়ক ও চাকরি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 21st, June 2025 GMT
ফেনী সিভিল সার্জন অফিসে চাকরি জন্য ১০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার একটি অডিও ফাঁসের পর সমন্বয়ক রাব্বি ও চাকরি প্রার্থী আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। শুক্রবার রাতে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ইফতেখার হাসান ভূঁইয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় প্রধান সাক্ষী করা হয়েছে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
মামলার আসামিরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ রাব্বি (২৮)। তিনি পরশুরাম পৌর এলাকার কোলাপাড়া গ্রামের নুরুন্নবীর ছেলে। মামলার অপর আসামি আব্দুল কাদের (৩০) অনন্তপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে।
ফেনীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবদুল কাদের হৃদয় নামের এক বেকার যুবকের কাছে ১০ লাখ টাকা ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরশুরাম উপজেলা সমন্বয়ক নাহিদ রাব্বিকে প্রধান আসামি করে দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ডা. ইফতেখার হাসান ভূঁঞা হাসপাতালে অবস্থানকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি অডিও শোনেন। সেখানে শোনা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ রাব্বি ফেনীর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে অর্থের বিনিময়ে এক চাকরি প্রার্থীকে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দশ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। দুই মিনিট ২১ সেকেন্ডের কথোপকথনে নাহিদ রাব্বি ফেনী সিভিল সার্জন কার্যালয়ে নিয়োগ পাইয়ে দেবেন বলে দশ লাখ টাকা দাবি করার ঘটনায় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এজন্য নাহিদ রাব্বিকে প্রধান আসামি করে দুজনের বিরুদ্ধে তারা এ মামলাটি দায়ের করেছেন।
ফেনী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ফেনী জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে বিভিন্ন পদের নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১১৫টি পদের জন্য ১২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। শুক্রবার অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় প্রতিটি পদের জন্য গড়ে ১০৮ জন লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন।
পরশুরাম মডেল থানার ওসি মো. নুরুল হাকিম মামলা রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমন বয়ক স ভ ল স র জন ক র য পরশ র ম
এছাড়াও পড়ুন:
অভ্যুত্থানের বছরে জামায়াতের আয়-ব্যয় বিএনপির চেয়ে অনেক বেশি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২০২৪ সালে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা। আর দলটি এ বছর ব্যয় দেখিয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।
নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে ২০১৩ সালে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। এরপর চলতি বছর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় এক যুগ পর আবার হিসাব দিল দলটি। গত ২৯ জুলাই জামায়াত এ হিসাব দেয়।
এর আগে ২৭ জুলাই আয়ে–ব্যয়ের হিসাব দেয় বিএনপি। সেই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপির মোট আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। একই সময়ে দলটির ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা। এই অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা আছে।
ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা জানান, ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৮টি দল আয়–ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতের আয় ও ব্যয় অন্য সব দলের চেয়ে বেশি।
২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।
এ বছর আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয় করেছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। গণ অধিকার পরিষদের আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা।
ইসি সূত্র জানায়, বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় জামায়াতের চেয়ে অনেক কম।
দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ভোটে না থাকলেও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীও ঘোষণা করে দিয়েছে দলটি। গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ের নির্বাচনী তৎপরতায় ব্যয়ের প্রতিফলনও রয়েছে অডিট রিপোর্টে।
কোন খাতে কত আয় জামায়াতেরজামায়াতের জমা দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, দলের কর্মী ও সদস্যদের দেওয়া চাঁদা থেকে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা থেকে এসেছে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।
কোন খাতে কত ব্যয়জামায়াতে ইসলামী বলেছে, বিগত বছরে তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে কর্মীদের বেতন–ভাতা ও বোনাসে, ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা।
বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।
প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা।
ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।