শিক্ষার্থী সাদ হত্যা মামলার আসামি বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার
Published: 22nd, June 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কলেজছাত্র আফিকুল ইসলাম সাদ হত্যা মামলার আসামি আকাশ সিকদারকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে ধামরাই থানা পুলিশ।
রবিবার (২২ জুন) এক হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম। এর আগে, শনিবার তাকে ঢাকার বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আকাশ সিকদার ধামরাইয়ের রোয়াইল ইউনিয়নের চরসুঙ্গর এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি স্কুল ও কলেজ গেটের সামনে নির্বিচারে গুলি করা হয়। এসময় কলেজছাত্র আফিকুল ইসলাম সাদ (১৮) মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। পরে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন দিন পর ৮ আগস্ট সকালে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত সাদের নানা আজিম উদ্দিন বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট স্থানীয় সাবেক এমপি বেনজীর আহমদসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৮২ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে ধামরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরও ৮০-৯০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
ওই মামলার ৫২ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি আকাশ সিকদার। মামলার পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।
ওসি মো.
ঢাকা/সাব্বির/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গায়েবি মামলার সংস্কৃতি ব্যবসায় পরিবেশকে গভীর অনিশ্চয়তায় ফেলেছে: হোসেন জিল্লুর রহমান
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, গায়েবি মামলার সংস্কৃতি দেশের পুরো ব্যবসায় পরিমণ্ডলকে একধরনের গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলেছে। এতে একধরনের স্থবিরতা তৈরি হয়েছে। এটার পরিবর্তন আনার জন্য অর্থ উপদেষ্টা বাজেটে কিছুই রাখেননি।
আজ রোববার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বাজেট নিয়ে সংলাপে এ কথা বলেন হোসেন জিল্লুর রহমান। বাজেট নিয়ে এ সংলাপের আয়োজন করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পরশু চট্টগ্রাম থেকে একজন জানালেন, তাঁর নামে আরেকটা মামলা হয়েছে…হত্যা মামলা। ১১০ জন আসামি, উনি ৯৫ নম্বর। এভাবে গায়েবি মামলা হওয়ায় কে শাস্তি পাওয়ার যোগ্য, সেটি আলাদা করতে পারছি না। আমরা একটা ‘ব্ল্যাঙ্কেট সাসপিশন’র (সামগ্রিক সন্দেহ/একজনের অপরাধে সবাইকে সন্দেহ) পর্দা পুরো সমাজের ওপর ঢেলে রেখেছি। এ অবস্থায় সবাই হাত গুটিয়ে বসে থাকা ও ভুক্তভোগী হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।’
বিনিয়োগের স্থবিরতা কাটাতে শুধু অর্থ মন্ত্রণালয় নয়, পুরো সরকারব্যবস্থাকেই কাজ করতে হবে বলে জানান হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র থেকে শুরু করে বিচার বিভাগসহ প্রতিটি মন্ত্রণালয় যদি সঠিকভাবে কাজ না করে, তাহলে হবে না।
হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমাদের রেগে যাওয়ার সময় হয়েছে। এটি অযৌক্তিক রাগ নয়। আমি এটাকে বলব পবিত্র রাগ। যে রাগের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তন করতে হয়। এখন ওই রেগে যাওয়ার মুহূর্ত হয়েছে। কারণ এই সরকারের মধ্যে একটা “পিকুলিয়ার সিনড্রোম” (উদ্ভট লক্ষণ) দেখতে পাচ্ছি। আমি বলব, একটি নতুন ধরনের কুম্ভকর্ণ “সিনড্রোম”, শোনে কিন্তু সাড়া দেয় না।’
বাজেটে বড় কোনো সিদ্ধান্তের জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ জরুরি বলে মনে করেন হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, অনেকে বলছেন বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদে চারজন অর্থনীতিবিদ রয়েছেন। তারপরও কেন গতানুগতিক বাজেট হলো। আমি মনে করি উপদেষ্টা পরিষদের সবাই অর্থনীতিবিদ হলেও ব্যতিক্রম কিছু হতো না। কারণ বড় কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে যে সাহস দেখাতে হয়, সেটির জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ প্রয়োজন।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা, তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি এনামুল হক খান, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ ও বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সোশ্যালিস্ট লেবার ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন ও ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আক্তার।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, শুধু আকারে ছোট হয়েছে, এদিক থেকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটটি ব্যতিক্রম। বাজেটে মানুষের জন্য যেসব উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে, সে অনুযায়ী পদক্ষেপের আলোচনা নেই। সার্বিকভাবে বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দিকনির্দেশনা দিতেও বাজেট ব্যর্থ হয়েছে। এসব বিবেচনায় প্রস্তাবিত বাজেটটি আগামী ছয় মাস পরে মধ্যবর্তী পর্যালোচনা করার প্রস্তাব দেন তিনি।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ বলেন, ‘আমরা অনেক অস্বস্তিকর সময় পার করছি। বর্তমানে আমরা দেখছি খুব সুন্দর সুন্দর মডেল তৈরি হচ্ছে। এর মধ্যে একটা মডেল হচ্ছে, কেউ লুট করলে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই লুটের টাকা আবার ব্যাংকে পৌঁছে দিয়ে আসে। ব্যাংকগুলো লুট করেছে, আর আমরা তার ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি চড়া সুদহার দিয়ে। আমার থেকে আপনি (সরকার) বাড়তি টাকা নিয়ে এই চুরির টাকার ভর্তুকি দেবেন, এটা হয় না।’ তিনি বেলন, ‘এখন পর্যন্ত একটা ব্যাংকের কর্মকর্তার জেল হয়নি, একজন গ্রাহকেরও (দোষী) জেল হয়নি। কারণ, যার কাছে টাকা, যে যত বড় চোর, সে তত বড় স্বচ্ছ—এটাই আমরা প্রতিফলন দেখছি।’