স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি বা এসএমএ একটি বিরল রোগ। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এর চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনো সীমিত। দেশে প্রথমবারের মতো বিরল এই রোগটির পরামর্শ ও করণীয় নিয়ে নন নন-ফিজিশিয়ান নির্দেশিকা গ্রন্থ আকারে প্রকাশ হয়েছে। গ্রন্থটি লিখেছেন সাংবাদিক ও সমাজকর্মী হাসান মাহামুদ।

রবিবার (২২ জুন) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অ্যাকাউন্টিং বিভাগে এই গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ঢাবির অ্যাকাউন্টিং বিভাগের বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান, অধ্যাপক ড.

দেওয়ান মাহবুব হোসেন, অধ্যাপক আমিরুস সালাত, অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আলম, সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন, ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ' এর সভাপতি হাসান মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দেশে এসএমএ আক্রান্ত রোগীদের কল্যাণে কাজ করা একমাত্র সংগঠন ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ’। গ্রন্থটির লেখক সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

গ্রন্থটি সম্পর্কে লেখক হাসান মাহামুদ বলেন, “রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে এবং রোগীদের সুবিধার্থে গ্রন্থটি রচিত হয়েছে। রোগীদের পরামর্শমূলক গ্রন্থ আকারেই এটি রচিত। গ্রন্থটি পেসেন্ট অ্যাডভোকেসির অংশ হিসেবে লেখা। যেহেতু আমি (গ্রন্থের লেখক) চিকিৎসক নই, তাই গ্রন্থটি রচনায় তথ্যগত সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশের জার্নাল, গবেষণাপত্র, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে উপস্থাপিত তথ্যের ওপর নির্ভর করা হয়েছে। এতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মেডিকেল টার্ম কোনো না কোনো গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত বা কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ বা কলাম থেকে নেওয়া। সবচেয়ে অবদান রয়েছে কিউর এসএমএ বাংলাদেশ সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের।”

তিনি আরো বলেন, “গ্রন্থটি রচনার পর তথ্যগত যাচাই এবং নির্ভুলতার জন্য ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে যাচাই করে নেওয়া হয়েছে। এই তিন প্রতিথযশা চিকিৎসক হলেন, “দেশের প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ ও পালমোনলজিস্ট প্রফেসর ডা. এ আর এম লুৎফুল কবীর, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আবদুন নূর তুষার এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জোবায়দা পারভীন। আশা করছি এসএমএ আক্রান্তরা একটি গাইডলাইন পাবেন এই বইতে, পাশাপাশি অন্যান্যরা বিরল রোগ সম্পর্কে ধারণা পাবেন।”

গ্রন্থটির লেখক হাসান মাহামুদ পেশায় একজন সাংবাদিক। রাইজিংবিডি ডকটমের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। এর বাইরে তিনি কিউর এসএমএ বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরাম’ (আইআরএফ) এর সভাপতি। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘শেরেবাংলা স্বর্ণপদক’ অর্জন করেছেন। এছাড়া ‘জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিনকেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি)-এর মিডিয়া ফেলোশিপ ২০২৪’ এবং ২০২১ সালে উপন্যাসে মৌলিক অবদানের জন্য বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ডের বিশেষ সম্মাননা এবং ২০১৮ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি লেখক সম্মাননা অর্জন করেন। সমাজসেবায় অবদানের জন্য পেয়েছেন ‘গিভিংনাও অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’। ‘বিরল রোগ এসএমএ, পরামর্শ ও করণীয়’সহ প্রকাশিত মৌলিক গ্রন্থ ৬টি।

এসএমএ একটি জেনেটিক রোগ, যা এসএমএন১ জিনের ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে। এই জিনের অভাবে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি হয় না, যা স্নায়ু কোষকে (নিউরন) ক্ষতিগ্রস্ত করে। এসএমএ জীবনঘাতি একটি রোগ। ক্রমবর্ধমান রোগটি প্রতিনিয়ত পেশীর শক্তিকে কমাতে থাকে। ফলে রোগী হাটার বা দাঁড়াতে পারলেও একটা সময় সেই শক্তি হারিয়ে ফেলে। আবার, পেশী দুর্বলতার কারনে হাত-পায়ের নড়াচড়া কম হয়। ফলে পেশিগুলোতে পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল হয় না বিধায় হাত-পা শুকিয়ে যেতে পারে। তবে ওষুধ ও থেরাপির মাধ্যমে পেশীশক্তিকে অনেকটা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। তাই নিয়মিত ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পেশীকে সক্রিয় রাখা প্রয়োজন হয়। তবে এসব চিকিৎসা কার্যক্রম অনেক ব্যয়বহুল। যদি কোনো শিশু এ রোগের টাইপ ১-এ আক্রান্ত হয়, সে মাত্র ২০ মাসের মধ্যে মারা যেতে পারে। বাংলাদেশে এসএমএর চিকিৎসা এবং গবেষণা এখনো সীমিত।

ঢাবি/সৌরভ/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবদ ন র চ ক ৎসক গ রন থ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

‘বিরল রোগ এসএমএ: পরামর্শ ও করণীয়’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন

স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি বা এসএমএ একটি বিরল রোগ। বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এর চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনো সীমিত। দেশে প্রথমবারের মতো বিরল এই রোগটির পরামর্শ ও করণীয় নিয়ে নন নন-ফিজিশিয়ান নির্দেশিকা গ্রন্থ আকারে প্রকাশ হয়েছে। গ্রন্থটি লিখেছেন সাংবাদিক ও সমাজকর্মী হাসান মাহামুদ।

রবিবার (২২ জুন) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অ্যাকাউন্টিং বিভাগে এই গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ঢাবির অ্যাকাউন্টিং বিভাগের বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান, অধ্যাপক ড. দেওয়ান মাহবুব হোসেন, অধ্যাপক আমিরুস সালাত, অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আলম, সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন, ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ' এর সভাপতি হাসান মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দেশে এসএমএ আক্রান্ত রোগীদের কল্যাণে কাজ করা একমাত্র সংগঠন ‘কিউর এসএমএ বাংলাদেশ’। গ্রন্থটির লেখক সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

গ্রন্থটি সম্পর্কে লেখক হাসান মাহামুদ বলেন, “রোগটি সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিকে গুরুত্ব দিয়ে এবং রোগীদের সুবিধার্থে গ্রন্থটি রচিত হয়েছে। রোগীদের পরামর্শমূলক গ্রন্থ আকারেই এটি রচিত। গ্রন্থটি পেসেন্ট অ্যাডভোকেসির অংশ হিসেবে লেখা। যেহেতু আমি (গ্রন্থের লেখক) চিকিৎসক নই, তাই গ্রন্থটি রচনায় তথ্যগত সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশের জার্নাল, গবেষণাপত্র, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে উপস্থাপিত তথ্যের ওপর নির্ভর করা হয়েছে। এতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মেডিকেল টার্ম কোনো না কোনো গ্রন্থ থেকে সংগৃহীত বা কোনো চিকিৎসকের পরামর্শ বা কলাম থেকে নেওয়া। সবচেয়ে অবদান রয়েছে কিউর এসএমএ বাংলাদেশ সংগঠনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের।”

তিনি আরো বলেন, “গ্রন্থটি রচনার পর তথ্যগত যাচাই এবং নির্ভুলতার জন্য ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দিয়ে যাচাই করে নেওয়া হয়েছে। এই তিন প্রতিথযশা চিকিৎসক হলেন, “দেশের প্রখ্যাত শিশু বিশেষজ্ঞ ও পালমোনলজিস্ট প্রফেসর ডা. এ আর এম লুৎফুল কবীর, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক আবদুন নূর তুষার এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স ও হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জোবায়দা পারভীন। আশা করছি এসএমএ আক্রান্তরা একটি গাইডলাইন পাবেন এই বইতে, পাশাপাশি অন্যান্যরা বিরল রোগ সম্পর্কে ধারণা পাবেন।”

গ্রন্থটির লেখক হাসান মাহামুদ পেশায় একজন সাংবাদিক। রাইজিংবিডি ডকটমের প্রধান প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত। এর বাইরে তিনি কিউর এসএমএ বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস রিপোর্টার্স ফোরাম’ (আইআরএফ) এর সভাপতি। সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ‘শেরেবাংলা স্বর্ণপদক’ অর্জন করেছেন। এছাড়া ‘জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিনকেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি)-এর মিডিয়া ফেলোশিপ ২০২৪’ এবং ২০২১ সালে উপন্যাসে মৌলিক অবদানের জন্য বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ডের বিশেষ সম্মাননা এবং ২০১৮ সালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি লেখক সম্মাননা অর্জন করেন। সমাজসেবায় অবদানের জন্য পেয়েছেন ‘গিভিংনাও অ্যাওয়ার্ড ২০২৪’। ‘বিরল রোগ এসএমএ, পরামর্শ ও করণীয়’সহ প্রকাশিত মৌলিক গ্রন্থ ৬টি।

এসএমএ একটি জেনেটিক রোগ, যা এসএমএন১ জিনের ত্রুটির কারণে হয়ে থাকে। এই জিনের অভাবে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি হয় না, যা স্নায়ু কোষকে (নিউরন) ক্ষতিগ্রস্ত করে। এসএমএ জীবনঘাতি একটি রোগ। ক্রমবর্ধমান রোগটি প্রতিনিয়ত পেশীর শক্তিকে কমাতে থাকে। ফলে রোগী হাটার বা দাঁড়াতে পারলেও একটা সময় সেই শক্তি হারিয়ে ফেলে। আবার, পেশী দুর্বলতার কারনে হাত-পায়ের নড়াচড়া কম হয়। ফলে পেশিগুলোতে পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল হয় না বিধায় হাত-পা শুকিয়ে যেতে পারে। তবে ওষুধ ও থেরাপির মাধ্যমে পেশীশক্তিকে অনেকটা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। তাই নিয়মিত ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পেশীকে সক্রিয় রাখা প্রয়োজন হয়। তবে এসব চিকিৎসা কার্যক্রম অনেক ব্যয়বহুল। যদি কোনো শিশু এ রোগের টাইপ ১-এ আক্রান্ত হয়, সে মাত্র ২০ মাসের মধ্যে মারা যেতে পারে। বাংলাদেশে এসএমএর চিকিৎসা এবং গবেষণা এখনো সীমিত।

ঢাবি/সৌরভ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ