শরীয়তপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘নারী কেলেঙ্কারির’ অভিযোগ ওঠার পর এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। রবিবার (২২ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, সদস্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (শৃঙ্খলা-২ অধিশাখা) ডা.

মো. নূরুল হক এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রতিনিধিকে (যুগ্মসচিব পদমার্যদার নিচে নয়) সদস্য সচিব করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শরীয়তপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন শৃঙ্খলা পরিপন্থী আচরণের সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি বর্ণিত বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক সুস্পষ্ট মতামতসহ প্রতিবেদন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করবেন।

২০২৪ সালের নভেম্বরে জেলা প্রশাসক হিসেবে শরীয়তপুরে যোগদান করেন মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন। গত ১৯ জুন রাতে তার সঙ্গে এক নারীর একটি আপত্তিকর ভিডিও ক্লিপ ও চারটি আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরের দিন আশরাফ উদ্দিন ওই নারীর উদ্দেশে আবেগঘন কিছু কথা বলছেন, এমন একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। শনিবার তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করেছে সরকার।

ঢাকা/আকাশ/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন ত র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর

বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!

কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!

চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।

এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)

সম্পর্কিত নিবন্ধ