মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে একাধিক নেতার সঙ্গে সৌদি যুবরাজের ফোনালাপ
Published: 23rd, June 2025 GMT
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র উত্তেজনা। ইরানে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর পরিস্থিতি কোনদিকে মোড় নেয় তা বোঝা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির বৈঠকের পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে।
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান রোববার একাধিক টেলিফোন আলাপ করেছেন উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সদস্য দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর এবং ইসরায়েলের চলমান হামলার প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা হয় বলে জানিয়েছে সৌদি প্রেস এজেন্সি।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারী জিসিসি নেতারা হলেন– বাহরাইনের বাদশা হামাদ বিন ঈসা আল-খলিফা, ওমানের সুলতান হাইথাম বিন তারিক, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি, কুয়েতের আমির শেখ মিশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান। আলোচনায় উঠে আসে ইরানে মার্কিন হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি, ইসরায়েলের ধারাবাহিক আক্রমণ এবং জবাবে ইরানের সম্ভাব্য কৌশল।
আলোচনায় নেতারা এই সংকটকালে উপসাগরীয় অঞ্চলের ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং জোর দিয়েছেন সংযম বজায় রাখা, আরও উত্তেজনা এড়িয়ে চলা, কূটনৈতিক সমাধানের পথ অনুসরণ করার ওপর। একই দিন সালমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। এই আলোচনাতেও মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতি, মার্কিন হামলার ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনার পর ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। রোববার সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ প্রকাশিত বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ইরানের ওপর মার্কিন হামলা, বিশেষ করে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার ঘটনাকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে সৌদি আরব।’
এর আগে ১৩ জুনের বিবৃতিতেও সৌদি আরব ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিল। খবর আলজাজিরার।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পেঁয়াজের কেজি ৮০–৮৫ টাকা, সবজিও চড়া
বাজারে পেঁয়াজ ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম হঠাৎ বেড়েছে। খুচরা পর্যায়ে ১৫–২০ টাকা বেড়ে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি পেঁয়াজ। প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ টাকা। এ ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দামও আগের তুলনায় চড়া।
খুচরা বিক্রেতারা জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কিছুটা কমেছে। আর ডিমের চাহিদা বেড়েছে, সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি। এ কারণে পণ্য দুটির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক হলে দাম কমে আসবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তাতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে চার–পাঁচ দিন আগেও মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যেত ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। তবে হঠাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা বেড়েছে। তাতে গতকাল বিভিন্ন বাজারে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর কৃষকের ঘরে মজুত থাকা অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এতে বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কমেছে। আবার বৃষ্টির কারণেও সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। মূলত এই দুই কারণে পেঁয়াজের দাম এখন বাড়তি।
করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০–৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।গত দুই–তিন সপ্তাহে মৌসুমি বৃষ্টির কারণে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। যেমন গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাসখানেক আগে মরিচের দাম ছিল ৮০ থেকে ১২০ টাকা। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটিসহ বেশির ভাগ সবজির কেজি এখন ৮০ টাকার আশপাশে। আমদানি করা টমেটোর কেজি ১৪০-১৫০ টাকা। অন্যদিকে বেগুনের দাম ২০–৩০ টাকা বেড়ে ১০০-১২০ টাকা হয়েছে।
সপ্তাহখানেকের মধ্যে দাম বেড়েছে মুরগির ডিমের। রাজধানীর খুচরা বাজারে গতকাল ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা। এদিকে তিন সপ্তাহ ধরেই বাজারে আগের চেয়ে বাড়তি দামে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আগে এ দাম কেজিতে ২০-৩০ টাকা কম ছিল।
ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। পাড়ামহল্লায় এ দাম আরও কিছুটা বেশি। গত সপ্তাহে ডিমের ডজন ছিল ১২০–১২৫ টাকা।চার মাস পর আবার মূল্যস্ফীতি বাড়লমূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কা কাটছে না। টানা চার মাস কমার পর মূল্যস্ফীতি আবার বেড়েছে। গত মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ হয়েছে। জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জুলাই মাসের মূল্যস্ফীতি চিত্র প্রকাশ করেছে। অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বর্ষা ও বন্যার মৌসুমের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে।
গত জুন মাসে দেশের যে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল, তা বিগত ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। বিবিএসের হিসাব অনুসারে, জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয় ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। দুই খাতেই আগের মাসের চেয়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
রাজধানীতে এক কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় ও সোনালি মুরগি ৩০০ থকে ৩৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধির কারণ হলো, জুলাইয়ে বাজারে সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৫-৬ টাকা বেড়েছে। শাকসবজির দামও ছিল চড়া।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বাজারের মৌলিক বিষয়গুলো কাজ করছে না। বিশেষ করে সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। গত মাসে চালের দাম বেড়েছে। এখন চলছে বর্ষা ও বন্যার মৌসুম। এই সময়ে নিত্যপণ্যের ঘাটতি থাকে, যা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে। তাই সরকারের উচিত, এখনই প্রস্তুতি নিয়ে পণ্যের চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্য আনা। তিনি মনে করেন, শুধু সুদের হার বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।