পিত্তথলিতে পাথর হলে বেশির ভাগ, অর্থাৎ প্রায় ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ধরা পড়ে রুটিন কোনো চেকআপের সময়। সাধারণত ২০ শতাংশ পেটের এক্স-রে এবং প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় পিত্তথলির পাথর ধরা পড়ে। পিত্তথলিতে পাথর হলে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে যান– অস্ত্রোপচার করাবেন, নাকি করাবেন না। আবার অস্ত্রোপচার করালে কীভাবে করাবেন– ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে, নাকি পেট কেটে। অন্যদিকে ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা চালাবেন কিনা, তা নিয়েও অনেকের দ্বিধা থাকে। 
পিত্তথলির পাথর চিকিৎসার প্রধান উপায় হলো অস্ত্রোপচার। তা পেট কেটে হোক আর ল্যাপারোস্কপিক হোক না কেন। এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে পিত্তথলি থেকে পাথর বের করে আনা হয়। এতে পেট কাটতে হয় না। পেটে চারটি ছোট ছিদ্র করে ল্যাপারোস্কপি যন্ত্রের মাধ্যমে পাথর বের করে আনা হয়। আবার কারও জটিলতা থাকলে পেট কেটে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
দীর্ঘদিন পিত্তথলিতে পাথর থাকলে কারও কারও তেমন কোনো সমস্যা হয় না। তবে অনেকের ক্ষেত্রে তা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এ অবস্থায় অস্ত্রোপচার না করালে কী হতে পারে জেনে নিন–
পিত্তথলির প্রদাহ: এর জন্য যে কোনো সময় রোগীর পেটের ডান দিকে প্রচণ্ড ব্যথাসহ জ্বর আসতে পারে এবং বমিও হতে পারে। এ ব্যথা কাঁধ পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
অবস্ট্রাক্টিভ জন্ডিস: অবস্ট্রাক্টিভ জন্ডিসের ক্ষেত্রে এই মূল পিত্তনালিতে পাথর এসে জমা হয়, তখন শরীর থেকে বের না হতে পেরে তা শরীরে বেড়ে যাওয়ার মাধ্যমে জন্ডিস সৃষ্টি করে। এ জন্ডিসে সাধারণত বিলিরুবিনের পরিমাণ অন্যান্য জন্ডিসের থেকে বেশি হয় এবং হেপাটোরেনাল সিনড্রোম (যেখানে লিভার ফেইলিউরের পর কিডনি ফেইলিউর হয়) বা হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি (বিলিরুবিন বেড়ে গিয়ে ব্রেইনে এনসেফালোপ্যাথি) হওয়ার মাধ্যমে মানুষ মারাও যেতে পারে।
অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ: পিত্তথলির পাথর মূল পিত্তনালি থেকে নেমে অগ্ন্যাশয়ের নালিতে আটকে গিয়ে একিউট প্যানক্রিয়েটাইটিস তথা অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে হঠাৎ পেটের মাঝখানে তীব্র ব্যথাসহ প্রচুর বমি হতে পারে। ব্যথা পিঠেও ছড়িয়ে যেতে পারে। ব্যথা এতই তীব্র হয়, রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর না করলে শকেও চলে যেতে পারে।
পিত্তথলিতে ক্যান্সার: যদিও পিত্তথলিতে ক্যান্সার অন্যান্য ক্যান্সারের তুলনায় কম হয়। অনেক দিন পাথর থাকার জন্য পিত্তথলির লাইনিং পরবর্তিত হয়ে সেখানে ম্যালিগন্যান্সি তথা ক্যান্সারও দেখা দিতে পারে। v
[অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা] 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জন ড স

এছাড়াও পড়ুন:

বিটিভিতে আবার শোনা যাবে, ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি...’

প্রায় দুই দশকের দীর্ঘ বিরতির পর আবারও ফিরছে নতুন কুঁড়ি। গত মঙ্গলবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজস্ব পেজে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি)। এই খবর শুনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই স্মৃতিকাতর হয়েছেন—কারও মনে পড়েছে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার স্মৃতি, কারও মনে ভেসে উঠেছে শৈশবের প্রিয় অনুষ্ঠানটির দৃশ্য। ফেসবুকে অনেকে ছবিও শেয়ার করেছেন।
১৯৬৬ সালে পাকিস্তান টেলিভিশনে প্রথম প্রচারিত হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। অনুষ্ঠানের নাম রাখা হয়েছিল কবি গোলাম মোস্তফার ‘কিশোর’ কবিতা থেকে। যার প্রথম ১৫ লাইন অনুষ্ঠানের সূচনাসংগীত হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

স্বাধীনতার পর ১৯৭৬ সালে মোস্তফা মনোয়ারের প্রযোজনায় আবার শুরু হয় ‘নতুন কুঁড়ি’। সে সময় বিটিভির অন্যতম আলোচিত এই অনুষ্ঠান হয়ে ওঠে শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চ। নানা প্রান্ত থেকে উঠে আসা তরুণেরা গান, নাচ, অভিনয়, আবৃত্তি, গল্পবলা, কৌতুকসহ বিভিন্ন শাখায় নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পান। ২০০৫ সাল পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। পরে নানা কারণে অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয় বিটিভি। ২০২০ সালে অনুষ্ঠানটি আবার শুরু করার খবর শোনা গিয়েছিল। কিন্তু পরে বলা হয়, কোভিড মহামারির কারণে সেটা আর সম্ভব হয়নি।
তিন দশকে নতুন অনেক তারকার জন্ম দিয়েছে নতুন কুঁড়ি। অনেকে চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, নাট্যাঙ্গন ও সংগীতজগতে নিজস্ব অবস্থান গড়ে তুলেছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তারানা হালিম, রুমানা রশিদ ঈশিতা, তারিন জাহান, মেহের আফরোজ শাওন, নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ আরও অনেকে। এ তালিকায় আছেন সামিনা চৌধুরীসহ অনেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীও।

নতুন কুঁড়ির এ ছবিটি অভিনেত্রী শাওন ফেসবুকে শেয়ার করেছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ