নেতৃত্ব ছাড়ার প্রশ্নে মুখে কুলুপ শান্তর
Published: 24th, June 2025 GMT
গল টেস্ট শেষ করে কলেম্বো পৌঁছেই নেতৃত্ব ছাড়ার গুঞ্জন নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো নাজমুল হোসেন শান্তকে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সিরিজ শেষ করে অধিনায়কের পদ ছেড়ে দেবেন বলে গুঞ্জন। মূলত ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব কেড়ে নেওয়ায় অভিমান থেকে নিজের অভিপ্রায় ব্যক্ত করে থাকতে পারেন তিনি। তাই বলে নেতৃত্ব ছেড়েই দেবেন, তেমনটা নাও হতে পারে।
সোমবার কলম্বোর সংবাদ সম্মেলনে শান্তর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল অধিনায়কত্ব ছাড়ার ব্যাপারে। সিরিজ চলাকালে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি তিনি। বিসিবি কর্মকতারাও জানেন না শান্তর সিদ্ধান্তের কথা। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে পদত্যাগপত্র দেননি তিনি।
২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এক বছরের জন্য তিন সংস্করণে অধিনায়ক করা হয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্তকে। ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হলেও তাঁকেই নেতৃত্বে রেখে দেন বিসিবির সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ। স্বেচ্ছায় টি২০ দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ায় বাকি দুই সংস্করণে শান্তকে দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের।
প্রধান কোচ ফিল সিমন্সেরও পছন্দ ছিলেন শান্ত। কিন্তু বিসিবি সভাপতির পদে পরিবর্তন হওয়ায় ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। শ্রীলঙ্কা সফরের বিমান ধরার আগের দিন শান্তকে জানিয়ে দেওয়া হয় ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। মেহেদী হাসান মিরাজকে ঠিক করা হয় নতুন অধিনায়ক।
জানা গেছে, বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল জুম মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেন। বোর্ডের এ সিদ্ধান্তে কষ্ট পান শান্ত। সেই থেকে গুঞ্জন টেস্টের নেতৃত্ব ছেড়ে দেবেন তিনি।
এ ব্যাপারে গতকাল জানতে চাওয়া হলে শান্ত বলেন, ‘আলোচনা তো এ টেস্টের আগে থেকেই হচ্ছে। আলোচনা হচ্ছে, হতে থাক। আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ দুদিন পরেই টেস্ট ম্যাচ। টেস্ট ম্যাচটা ভালোভাবে খেলতে চাই। টেস্ট ম্যাচটাতে ভালোভাবে কন্ট্রিবিউট করতে চাই অধিনায়ক হিসেবে, ব্যাটার হিসেবে। কিন্তু এ মুহূর্তে আলোচনাটা আলোচনার জায়গায় থাক।’
অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিক ছিলেন না শান্ত। উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে যাওয়ায় সমালোচিত হচ্ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কায় ভালো খেলার পরও সমালোচনা পিছু ছাড়ছে না তাঁর। গল টেস্টের জোড়া সেঞ্চুরিয়ান বাঁহাতি এ ব্যাটারের ব্যাটিং নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। টেস্ট ড্র করার লক্ষ্যে খেলায় সমালোচনার তীরে বিদ্ধ তিনি।
পঞ্চম ও শেষ দিন মুশফিকুর রহিমের জুটিতে স্লো ব্যাটিং করার কারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যেটা বলতে চাই, আমি নিশ্চয়তা দিতে পারি ড্রেসিংরুমে কেউ ব্যক্তিগত অর্জনের জন্য খেলে না। মুশফিক ভাই এত বছর ধরে ক্রিকেট খেলছেন, ওই এক রান নিয়ে আমার মনে হয় না তিনি অনেক বড় কিছু অর্জন করে ফেলতেন। তিনি আমাদের দলের জন্য কত কিছু করেছেন, এটা আমরা সবাই জানি। সুতরাং আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, তা বৃষ্টির কারণে বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর-সংলগ্ন মিরপুর সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ সোমবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে এই চিত্র দেখা যায়। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
দুপুরের দিকে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। পরে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এরপর বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করে আসছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আছেন র্যাব ও বিজিবির সদস্যরা। তাঁরা শক্ত অবস্থানে আছেন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ দুপুরের দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনের মিরপুর সড়কে দুটি এক্সকাভেটর দেখা যায়।
পরে বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বাধা দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লাঠিপেটা করে।
কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের অন্তত এক সদস্য আহত হন।
আরও পড়ুনএক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ৪ ঘণ্টা আগেপরে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে। এ সময় দফায় দফায় সাউন্ড গ্রেনেডের বিকট শব্দ শোনা যায়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
বেলা পৌনে ২টার দিকে দুই ভাগে ভাগ হয়ে বিক্ষোভকারীরা আবার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তাঁদের আবার ছত্রভঙ্গ করে দেয় সেনাবাহিনী ও পুলিশ।
বিক্ষোভকারীদের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে যাওয়ার জন্য দফায় দফায় চেষ্টা এবং তাঁদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। নিউমার্কেট থেকে মিরপুরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনরায়কে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, ১৫ হাজার পুলিশ মোতায়েন৫ ঘণ্টা আগেবিক্ষোভকারীরা পুরোপুরি সরে না যাওয়ায়, বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে দফায় দফায় ৩২ নম্বর সড়কে আসার চেষ্টা করায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানো হয়। এখন এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক দুপুরে প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘আমরা কোনোমতে কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেব না।’
গত ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির অর্ধেকের বেশি অংশ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৩২ নম্বরের বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ২ ঘণ্টা আগে