কাতারে ইরানের হামলার সময় মাঝআকাশে আটকা পড়েন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী
Published: 24th, June 2025 GMT
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম কাতার সফরে যাচ্ছিলেন। তাঁকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ছিল মাঝআকাশে। হঠাৎ কাতারে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে নিজেদের আকাশসীমা সাময়িক বন্ধ করে দেয় কাতার। এ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় পড়েন লেবাননের প্রধানমন্ত্রীও।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল সোমবার। কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল–উদেইদ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। শুধু কাতার নয়, আশপাশের কুয়েত ও বাহরাইন নিজেদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়।
এ সময় লেবাননের প্রধানমন্ত্রীর অনিশ্চয়তায় পড়ার বিষয়টি বিবিসিকে জানান দেশটির সরকারের একজন উপদেষ্টা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এখন বাহরাইনে আছেন।
যদিও পরবর্তী সময় কাতারের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, আকাশপথে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। কুয়েত ও বাহরাইন আকাশসীমা খুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের বিমানবন্দরগুলোর কার্যক্রমও এখন পুরোপুরি চালু রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এন্নিও মোররিকোনে, শোনাতেন ছুটন্ত ঘোড়ার খুরের সুর
বাংলা সিনেমার এক টিপিক্যাল দৃশ্য দিয়ে শুরু করা যাক। ধরলাম, সিনেমার নায়ক জসিম। পাহাড়ের পাদতলে ঘোড়া ছুটিয়ে তিনি ছুটে যাচ্ছেন ভিলেন জাম্বুকে পাকড়াও করতে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক বাজছে। এক ভুতুড়ে-রহস্যময় সুর। ড্রামের মৃদু তালে তালে ঠোঁটের শিস। ট্রাম্পেটের ঢেউ। কখনো সেই সুর মিলিয়ে যাচ্ছে হ্রেষায়, কখনো খুরের টগবগে (সুরকে যদি ভাষায় প্রকাশ করা যেত!)। ক্ষণে ক্ষণে গা শিউরে উঠছে দৃশ্য ও সুরের পরম্পরায়, ঘটনার উত্তেজনায়। কিন্তু তখন কি জানতাম, বাংলা সিনেমায় এমন জাদুকরি সুর নেওয়া হয়েছে ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ থেকে!
কিংবদন্তি ইতালিয়ান কম্পোজার প্রয়াত এন্নিও মোররিকোনের এই ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর বিশ্ব সিনেমার জগতে অনন্য হয়ে থাকবে সব সময়। তেমনি ‘স্পেগেত্তি ওয়েস্টার্নের’ স্রষ্টা সার্জিও লিওনের ‘ডলার্স ট্রিলজি’। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’র শেষ দৃশ্যে কবরস্থানে যখন ত্রিমুখী হয়ে বন্দুক হাতে ‘ম্যান উইথ নো নেম’ (ক্লিন্ট ইস্টউড), ‘টুকো’ (এলি ওয়ালাচ) ও ‘অ্যাঞ্জেল আইস’ (লি ফন ক্লিফ) দাঁড়ায়, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকে সেই বিখ্যাত সাসপেন্স-থ্রিলারমাখা সুর। সেই সুরের কথাই বলেছি মূলত শুরুতে। মোররিকোনের মিউজিক কেবল ঢালিউডে নয়; বলিউডের বহু চলচ্চিত্রেও হুবহু ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডলার্স’ সিরিজসহ লিওনের আরও দুই মাস্টারপিস ছবি ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন ওয়েস্ট’ ও ‘ওয়ানস আপন আ টাইম ইন আমেরিকা’র মিউজিকও কম্পোজ করেন মোররিকোনে।
চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না!চলচ্চিত্রের শুরুর দিককার সময় কোনো সুর ছিল না। নির্বাক যুগ পেরিয়ে সিনেমা এখন এত দূর বিস্তৃত, যা এক শতকের মধ্যেই শিল্পের সবচেয়ে প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছাড়া তো এখন সিনেমার কথা চিন্তাই করা যায় না! এখন দর্শক কেবল পর্দার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বসে থাকেন না; কানকেও কাজে লাগান সিনেমাবোধের জন্য। কাহিনিকে যদি আমার শরীর ধরি, তবে অভিনয় হচ্ছে সিনেমার প্রাণ। আর সংগীত যেন এই দুইয়ের সংযোগস্থল। কাহিনি ও অভিনয়কে আরও বেগবান করে তোলে সংগীত।
এন্নিও মোররিকোনে (১০ নভেম্বর ১৯২৮—৬ জুলাই ২০২০)